বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শক্তিমত্তায় চট্টগ্রাম অভিজ্ঞতায় খুলনা

ফাইনালে কে ফেবারিট

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শক্তিমত্তায় চট্টগ্রাম অভিজ্ঞতায় খুলনা

সাকিব আল হাসান না থাকলেও খুলনার অধিনায়ক আত্মবিশ্বাসী হওয়ার মতো একটি অস্ত্রও পেয়েছেন হাতে। মাশরাফি বিন মর্তুজা; বয়স ৩৭ পেরুলেও দারুণ ছন্দে রয়েছেন। কোয়ালিফাইয়ারে মাশরাফি একাই ধসিয়ে দিয়েছেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিথুন, মুস্তাফিজুর রহমানদের চট্টগ্রামকে। আগামীকাল বিকালে পাঁচ দলের বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপের শিরোপা জিততে মুখোমুখি হবে মাহমুদুল্লাহর খুলনা ও মিথুনের চট্টগ্রাম। কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচ ছাড়া গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত ক্রিকেট খেলেছে মিথুন বাহিনী। ব্যাটিং ছন্দে রয়েছেন লিটন, সৌম্য, মিথুনরা। বল হাতে বিধ্বংসী মেজাজে রয়েছেন মুস্তাফিজ। ফাইনালে পারফরম্যান্স, শক্তি ও সামর্থ্যরে বিচারে এগিয়ে চট্টগ্রাম। অভিজ্ঞতায় এগিয়ে খুলনা।

লিগ পর্বে বিধ্বংসী মেজাজে ক্রিকেটে খেলেছে চট্টগ্রাম। লিটন, সৌম্য, মিথুনদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবং মুস্তাফিজ, শরীফুল, মোসাদ্দেকদের আগ্রাসী বোলিংয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলো লড়াই করতে পারেনি। লিগে ৮ ম্যাচে মাত্র একটিতে হেরেছে চট্টগ্রাম। কোয়ালিফাইয়ারে মিথুন, লিটনরা হেরে যান জহুরুল অমির ব্যাটিং ও মাশরাফির বোলিংয়ের বিপক্ষে। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে ঢাকাকে দাঁড়াতেই দেয়নি চট্টগ্রাম। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামের উপরের সারির ব্যাটসম্যানরা ধুন্ধুমার ব্যাটিং করছেন। ৯ ম্যাচে ১২০.৯১ স্ট্রাইক রেটে লিটন রান করেছেন ৩৭০। হাফসেঞ্চুরি ৩টি। পিছিয়ে নেই সৌম্যও। ১০ ম্যাচে তার রান ২৮০। মিথুনের রান ১০ ম্যাচে ২০৪। লেট অর্ডারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করেন। ১০ ম্যাচে ১২১ রান করলেও সবগুলো ছিল কার্যকরী। বোলিংয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে মুস্তাফিজ। ১০ ম্যাচে ওভার প্রতি ৬.২৮ স্ট্রাইক রেটে উইকেট নিয়েছেন ২১টি। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে ব্যাটসম্যানদের। যুব বিশ্বকাপজয়ী শরীফুল ইসলামও দারুণ বোলিং করছেন। ৯ ম্যাচে তার উইকেট ১৪টি। দুই বাঁ হাতিকে সামলাতে ফাইনালে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে খুলনার ব্যাটসম্যানদের। দুই স্পিনার রাকিবুল হাসান ও মোসাদ্দেক সৈকত দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছেন। যুব বিশ্বকাপজয়ী রাকিবুল তো দারুণ মিতব্যয়ী। ৪ ম্যাচে ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ৬.৫০।

পারফরম্যান্সে এগিয়ে চট্টগ্রাম। কিন্তু একেবারে পিছিয়ে থাকবে না খুলনাও। দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিবকে পাবে না ফাইনালে। কিন্তু জহুরুল অমি, ইমরুল কায়েশ, অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর অভিজ্ঞতাই মূল সম্বল খুলনার। মাহমুদুল্লাহ ‘বিগ ম্যাচ ম্যান’। চাপের মুখে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেন টাইগার টি-২০ অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী চ্যাম্পিয়ন হযেছিল তিন দলের বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপে। বঙ্গবন্ধু কাপে ফর্মে রয়েছেন তিনি। ৯ ম্যাচে রান করেছেন ২০৪। কোয়ালিফাইয়ারে ৯ ম্যাচে ৩০ রান করে ভড়কে দিয়েছেন চট্টগ্রামের বোলারদের। কোয়ালিফাইয়ারে সময়োপযোগী ব্যাটিং করেছেন জহুরুল অমি। খেলেন ৮০ রানের ছন্দোময়ী ইনিংস। টুর্নামেন্টে দুটি হাফসেঞ্চুরিসহ তার রান ২৫৪। ইমরুলও ভালো ব্যাটিং করছেন। ৮ ম্যাচে রান করেছেন ১৬৩। দারুণ ছন্দে রয়েছেন সিমিং অলরাউন্ডার আরিফুল হক। ৯ ম্যাচে রান করেছেন ১৬৭। লেট অর্ডারে চার ছক্কা মারতে ওস্তাদ আরিফুল নিয়ন্ত্রিত বোলিংও করেন। বোলিং তুলনায় চট্টগ্রামের চেয়ে পিছিয়ে খুলনা। ভরসা দলের দুই তরুণ পেসার শহীদুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। শহীদুল নিয়েছেন ১৩ উইকেট এবং হাসান নিয়েছেন ১০ উইকেট। মাশরাফি ৩ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৭টি। আল-আমিন উইকেট না পেলেও মিতব্যয়ী ছিলেন প্রতিটি ম্যাচে। অফ স্পিনার শুভাগত ওভার প্রতি ৭.০৪ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৯টি।

শক্তি ও সামর্থ্যে এগিয়ে তারুণ্যনির্ভর চট্টগ্রাম। অভিজ্ঞতায় এগিয়ে খুলনা। এমন সমীকরণে ফাইনাল হবে ফাইনালের মতোই।

সর্বশেষ খবর