বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে জয় হয়েছে অভিজ্ঞতার। ফাইনালে অভিজ্ঞতার কাছে হেরেছে তারুণ্য। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, ইমরুল কায়েশ, শহীদুল ইসলামের খুলনা। হেরেছে মোহাম্মদ মিথুন, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমানের চট্টগ্রাম। অভিজ্ঞতার জয় হলেও গোটা টুর্নামেন্টে ছিল তরুণদের জয় জয়কার। ব্যাট ও বল হাতে তরুণ ক্রিকেটাররাই বাজিমাত করেছেন। টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন দেশসেরা পেসার মুস্তাফিজ। ২২ উইকেট নিয়েও তিনি সেরা বোলার। ৩৯৩ রান করে সেরা ব্যাটসম্যান লিটন। স্পেশাল অ্যাওয়ার্ড জেতা চার ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন শান্ত, পারভেজ হোসেন ইমন, শরীফুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম রবি। এরা সবাই তরুণ ও উদীয়মান ক্রিকেটার। তারুণ্যের জয় জয়কারের টুর্নামেন্টে নিজেকে আলাদা উচ্চতায় ঠাঁই দিয়েছেন পঞ্চ পা-বের দুই স্তম্ভ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা। পিছিয়ে ছিলেন না দেশসেরা আরও দুই ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম।
করোনাভাইরাসের জন্য মার্চ মাসের পর সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধ ছিল সাত মাস। অক্টোবরে তিন দলের ৫০ ওভারের টুর্নামেন্ট দিয়ে মাঠে ফিরে ক্রিকেট। প্রতিযোগীমূলক ক্রিকেটে ফিরেন ক্রিকেটাররা। স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজকে টার্গেট করে ২৪ নভেম্বর শুরু হয় পাঁচ দলের টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন তরুণ ক্রিকেটাররা। তিনটি সেঞ্চুরি হয়েছে। তিনটাই করেছেন তিন তরুণ ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন শান্ত (১০৯*), মোহাম্মদ নাঈম (১০৫) ও পারভেজ হোসেন ইমন (১০০*)। ফাইনাল না খেলতে পারলেও শান্ত ছিল আক্রমণাত্মক। ১৫৬.৭৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ৩০১। ধারাবাহিক ব্যাটিং করেন চট্টগ্রামের ওপেনার লিটন। ৯ ম্যাচে রান করেছেন তিন হাফসেঞ্চুরিতে ৩৯৩। নতুন বলে তার সতীর্থ সৌম্য সরকারও ভালো ব্যাটিং করেছেন। ১১ ম্যাচে রান করেন ১২৫.৮৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ২৯২। টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম বরিশালের হয়ে ১১৫.৩০ স্ট্রাইক রেটে ৩২৪ রান করেন। খুলনাকে টি-২০ কাপের শিরোপা উপহার দিতে ফাইনালে মাহমুদুল্লাহ খেলেন ৭০ রানের হার না মানা ইনিংস।
করোনার পর প্রথম টুর্নামেন্ট তিন দলের ট্রফিটিও জিতেছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রান করেছেন ২৭৪। চ্যাম্পিয়ন হয়ে উচ্ছ্বসিত মাহমুদুল্লাহ, ‘এরচেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারি না। বোলার, ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডাররা যেভাবে নিজেদের উজার করে ঢেলে দিয়েছে, সেজন্যই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি।’ শেষ সময়ে খুলনার হয়ে খেলতে নামা মাশরাফি অধিনায়ক হয়ে টি-২০ ক্রিকেটে চারটি ট্রফি জিতেছেন। এবার তার সঙ্গে আরও একটি ট্রফি যোগ হয় একজন খেলোয়াড় হিসেবে। মাশরাফি তার টি-২০ ক্যারিয়ারে ট্রফি জিতেছেন পাঁচটি।শীর্ষ ৫ ব্যাটসম্যান
ক্রিকেটার ম্যাচ রান সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট ১০০/৫০ ৪/৬
লিটন দাস ১০ ৩৯৩ ৭৮* ১১৯.৪৫ ০/৩ ৪১/৬
তামিম ইকবাল ৯ ৩২৪ ৭৭* ১১৫.৩০ ০/২ ৩৫/৭
নাজমুল শান্ত ৮ ৩০১ ১০৯ ১৫৬.৭৭ ১/২ ২২/২৩
ইয়াসির আলি ৯ ২৯৪ ৬৭ ১২৪.৫৭ ০/২ ২৪/৮
সৌম্য সরকার ১১ ২৯২ ৬৩ ১২৫.৮৬ ০/২ ২৯/১২
শীর্ষ ৫ বোলার
ক্রিকেটার ম্যাচ ওভার রান উইকেট সেরা ইকোনোমি
মুস্তাফিজুর রহমান ১০ ৩৮.৫ ২৪৩ ২২ ৪/৫ ৬.২৫
মুক্তার আলি ১০ ৩১ ২৮৫ ১৭ ৪/৩৭ ৯.১৯
কামরুল রাব্বি ৯ ৩৩ ২৮৬ ১৬ ৪/২১ ৮.৬৬
শরীফুল ইসলাম ১০ ৩৮ ৩০৪ ১৬ ৩/২৭ ৮.০০
শহীদুল ইসলাম ৮ ২৫.৩ ২০৫ ১৫ ৪/১৭ ৭.৬৩