শনিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
ফেডারেশন কাপ

শেষ চারে চট্টগ্রাম আবাহনী

নকআউট পর্বের ম্যাচ বলেই হয়তো ছিল দারুণ উত্তেজনা। দুই দলের ফুটবলাররাই নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলছিলেন

রাশেদুর রহমান

শেষ চারে চট্টগ্রাম আবাহনী

ছবি : রোহেত রাজীব

ফেডারেশন কাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র এবং চট্টগ্রাম আবাহনী। ম্যাচের তখন ৬৭তম মিনিট। শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান ফুটবলার উগুচুকুকে ডি বক্সে ফাউল করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর উজবেক ডিফেন্ডার শুকুর আলী। সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি আনিসুর। কিন্তু ব্রাজিলের সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার ফরোয়ার্ড রদ্রিগেজ পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হন। তার মাটি ঘেঁষা শট থামিয়ে দেন গোলরক্ষক নাইম। এ পেনাল্টি মিসেই কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে বিদায় নিল শেখ রাসেল। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য ড্রয়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিট খেলে ২-০ ব্যবধানের জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম আবাহনী।

প্রথমদিকে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করেছিল শেখ রাসেল। আক্রমণের পর আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্স লাইনকে। হেমন্ত বিশ্বাস, বখতিয়ার, আসররভরা বারবার আক্রমণে গিয়েছেন। কিন্তু কখনো গোলরক্ষক নাইম আবার কখনো ডিফেন্ডাররা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল শেখ রাসেলের ফরোয়ার্ড লাইনের সামনে। ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম আবাহনীর আক্রমণের ধারও বাড়ছিল। অবশ্য প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামলে পুনরায় আক্রমণে যাচ্ছিল শেখ রাসেল। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে পেনাল্টিতে গোল হলে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরাই শেষ হাসি হাসতে পারত। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান রদ্রিগেজের ব্যর্থতায় সেমিফাইনাল খেলা হলো না শেখ রাসেলের। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য ড্র থাকলে ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে।

নকআউট পর্বের ম্যাচ বলেই হয়তো ছিল দারুণ উত্তেজনা। দুই দলের ফুটবলাররাই নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলছিলেন। মাঝে মধ্যে মারমুখী হয়ে উঠছিলেন। একে অপরের দিকে তেড়ে আসছিলেন। ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজানোর সময় বদলি নামা তকলিসকে লাল কার্ড দেন রেফারি। তকলিস চট্টগ্রাম আবাহনীর কাউসারকে ঘুষি মেরে লাল কার্ড দেখেন।

নির্ধারিত সময়ের ৯০ মিনিট এবং এক্সট্রা টাইমেরও ১৫ মিনিট পর্যন্ত খেলা গোলশূন্য থাকে। দুই দলের গোলরক্ষকই বীরবিক্রমে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দেন। বেশ কয়েকটা গোল বাঁচিয়ে দেন চট্টগ্রামের গোলরক্ষক নাইম। বিপরীত দিকে আশরাফুল ইসলাম রানাও ছিলেন সদা তৎপর। কিন্তু এক্সট্রা টাইমের দ্বিতীয়ার্ধে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি রানা। চট্টগ্রাম আবাহনী সাঁড়াশি আক্রমণ করে এ সময়। ১০৭ মিনিটে ডি বক্সের ভিতরে বল পেয়ে জটলার মধ্য থেকে প্লেসিং শটে গোল করেন রাকিব হোসেন। গোলটা করেই তিনি সবাইকে এড়িয়ে ছুটে আসেন কোচ মারুফুল হকের দিকে। জড়িয়ে ধরেন গুরুকে। কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেই যেন খুশিতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন রাকিব। ১১৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে চট্টগ্রাম আবাহনী। নিজেদের অর্ধ থেকে দিদিয়েরের লম্বা পাসে বল রিসিভ করে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে গোল করেন মান্নাফ রাব্বি। এ গোলের পরই শেখ রাসেলের সব আশা শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত আক্রমণ করতে গিয়ে আরও একটা গোল হজম করতে যাচ্ছিল শেখ রাসেল। ম্যাচের ১১৯তম মিনিটে রানা ফিরিয়ে দেন রাকিবের শট। এ শট নিতে গিয়ে পায়ে আঘাত পান রাকিব।

চট্টগ্রাম আবাহনী গতবার ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মোহামেডানের কাছে হেরেছিল ২-০ গোলে। এবার সেমিফাইনালে সেই মোহামেডানের মুখোমুখি হতে পারে বন্দরনগরীর দলটি। আজ দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে মোহামেডান স্পোর্টিং এবং সাইফ স্পোর্টিং। গতবার মোহামেডান সেমিফাইনালে খেলেছিল। অবশ্য তারা হেরে যায় রহমতগঞ্জের কাছে (১-০)। অন্যদিকে সাইফ স্পোর্টিং কোয়ার্টার ফাইনালে গতবার হেরেছিল বাংলাদেশ পুলিশ এফসির কাছে (৩-১)। আজকের বিজয়ী দল সেমিফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর মুখোমুখি হবে।

সর্বশেষ খবর