সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

লাতিন ম্যাজিকে সেমিতে কিংস

রাশেদুর রহমান

লাতিন ম্যাজিকে সেমিতে কিংস

ছবি : রোহেত রাজীব

রবসন বল নিয়ে ছুটলে তাকে রুখে দেওয়া কঠিন। রাউল আর ফার্নান্দেজের কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। বসুন্ধরা কিংসের এই তিন বিদেশি গতকাল দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিলেন। মতিন মিয়া, বিশ্বনাথ, জনি, জিকোরাও নিজেদেরকে উজাড় করে খেলেছেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে নেমেছিল বসুন্ধরা কিংস। প্রতিপক্ষকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ফেডারেশন কাপে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। শেখ জামালের সলোমন-ওতাবেক জুটি বেশ কয়েকটা আক্রমণ করলেও বসুন্ধরার জালে গোল দিতে পারেনি। ফেডারেশন কাপে এখনো পর্যন্ত কিংসের জালই কেবল অক্ষত আছে। তিন ম্যাচে ছয় গোল করেছে তারা। গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচে রহমতগঞ্জকে ৩-০ ও চট্টগ্রাম আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়েছে কিংস।

ম্যাচ জুড়েই বসুন্ধরা কিংসের একক আধিপত্য ছিল। মাঝেমধ্যে শেখ জামালের ওতাবেক-সলোমন জুটি আক্রমণে গেলেও তা বসুন্ধরার ডিফেন্স লাইন ভেদ করে গোল করতে পারেনি। প্রথমার্ধের শেষদিকে শেখ জামাল কয়েকটা আক্রমণ করে। ম্যাচের ৪২ মিনিটে সলোমন কিংয়ের পাসে বল পেয়ে ডি বক্সের ভিতর থেকে শট নেন ওমর জোবে। তবে তার লক্ষ্যভ্রষ্ট শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। দারুণ একটা সুযোগ ছিল শেখ জামালের। ম্যাচের সেরা সম্ভবত! এরপরও ওমর গোলের সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। বিপরীত দিকে বসুন্ধরা কিংস সারাক্ষণই শেখ জামালের ডিফেন্সকে চেপে ধরে রাখে। ম্যাচের শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণ অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। লাতিন আমেরিকার ফুটবলার ফার্নান্দেজ-রাউল-রবসনদের সঙ্গে তালমিলিয়ে আক্রমণে গেছেন মতিন মিয়া, মাশুক আর সুফিলরা। ডিফেন্স থেকে প্রায়ই উপরে উঠেছেন বিশ্বনাথ। তার কৌশলী পাসেই ম্যাচের ১০ মিনিটে দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা পাস দেন বিশ্বনাথ। ডি বক্সের ডান পাশে বল পেয়ে যান ফার্নান্দেজ। এ ব্রাজিলিয়ানের ক্রসে বাম পায়ের আলতো ছোঁয়ায় গোল করেন আর্জেন্টাইন রাউল অস্কার বেসেরা। ৩৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলের কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ফার্নান্দেজ। ডি বক্সের ভিতর থেকে নেওয়া তার শট গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন শেখ জামালের ডিফেন্ডার মোজাম্মেল। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বসুন্ধরা কিংস।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমেও আধিপত্য ধরে রাখে অস্কার ব্রুজোনের দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নিয়মিত অধিনায়ক তপু বর্মন। ৬৩তম মিনিটে আরও একবার ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় কিংস। ডি বক্সের ডান পাশ থেকে বিশ্বনাথের ক্রসে বল পেয়ে হেড করেন রিমন। তার হেড ফিরিয়ে দেন শেখ জামালের গোলরক্ষক মামুন খান। ফিরতি বলে শট নেন রাউল। শেখ জামালের ডিফেন্ডার আলাউদ্দিন ডান পায়ে শটটা ফিরিয়ে গোল বাঁচান। দারুণ একটা সুযোগ হারায় বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে বসুন্ধরা কিংসের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফার্নান্দেজ প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান। কিন্তু শেখ জামালের মামুন তাকে হাত দিয়ে টেনে ফেলে দেয়।

মামুনকে হলুদ কার্ড দিয়ে ডি বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন রেফারি। ৮৯ মিনিটে ফ্রি কিকে নিচু শটে গোল করেন ব্রাজিলের রবসন। বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। এরপর অতিরিক্ত চার মিনিটে শেখ জামাল তেমন কোনো জোরালো আক্রমণ করতে পারেনি। দারুণ এ জয়ের পর কিংস কোচ অস্কার জানালেন, ‘এবারের দল আগের চেয়েও গোছানো।’ শিষ্যদের খেলায় মুগ্ধ এ স্প্যানিশ কোচ। সেমিফাইনালে বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হতে পারে আবাহনী লিমিটেডের।

সর্বশেষ খবর