শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ

উইন্ডিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ২

মেজবাহ্-উল-হক

বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ

বিদেশের মাটিতে প্রথম সিরিজ জয় এবং একসঙ্গে দুই ফরম্যাটে (টেস্ট ও ওয়ানডে) প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার অনন্য কীর্তি গড়ে বাংলাদেশ দল ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ এবং তিন ম্যাচের ওয়নাডে সিরিজ ৩-০। কাগজে-কলমে দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন মধুর লগ্ন আর আসেনি।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার ‘অধিনায়ক’ হিসেবে সেটি ছিল প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। কিন্তু নড়াইল এক্সপ্রেসের কী দুর্ভাগ্য! প্রথম টেস্টে ৬.৩ ওভার বোলিং করার পর ইনজুরিতে পড়লেন। তারপর দেশেই ফিরতে হয় মাশরাফিকে। এরপর যেন বাধ্য হয়েই ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্ব পালন করতে হয় সাকিব আল হাসানকে। অপ্রত্যাশিতভাবে নতুন দায়িত্ব পেয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই সিরিজেই বাজিমাত করে দিলেন।

নেতৃত্বের বাড়তি দায়িত্ব যেন সৌভাগ্যের প্রতীক হয়ে আসে সাকিবের কাছে। নিজের প্রথম চ্যালেঞ্জেই দেখালেন ‘ক্যাপ্টেন্স নক’! ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে দুই সিরিজেই ‘ম্যান অব দ্য সিরিজ’ সাকিব। 

কিংস টাউনে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯৫ রানে হারায় বাংলাদেশ। ওই ম্যাচেই অভিষেক হলেছিল এখনকার জাতীয় দলের দুই তারকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও পেসার রুবেল হোসেনের। প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত বোলিং করেন মাহমুদুল্লাহ। দুই ইনিংস মিলে একাই নিলেন ৮ উইকেট। তারপরও ম্যাচসেরা হতে পারেননি। কারণ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৮ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ তামিম ইকবাল।

সেন্ট জর্জে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টটি তো সাকিবময়। বল হাতে একাই ৮ উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের ধসিয়ে দেন। আর ব্যাট হাতে দ্বিতীয় ইনিংস অপরাজিত ৯৬ রানের এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেই বাইশগজ ছাড়েন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও জেতেন। তবে দুই টেস্ট মিলে ১৫৯ রান এবং ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজের ‘সেরা ক্রিকেটার’ হন সাকিব।

ওয়ানডে সিরিজেও সাকিব-ক্যারিশমা! প্রথম দুই ম্যাচে টানা দুই হাফ সেঞ্চুরি। সঙ্গে বোলিংয়েও নাজেহাল করে ছেড়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের। তাই সিরিজসেরা পুরস্কার তার প্রাপ্তই ছিল। তবে প্রথম ওয়ানডেতে ৫২ রানের জয়ে বড় ভূমিকা ছিল স্পিনার আবদুর রাজ্জাকের ৪ উইকেট এবং মোহাম্মদ আশরাফুলের ৫৭ রান। দ্বিতীয় ম্যাচেও ধারাবাহিক অ্যাশ। খেলেন ৬৪ রানের আরেকটি ইনিংস। সাকিব করেছিলেন ৬৫ রান। টাইগাররা জয় পায় ৩ উইকেটে। তৃতীয় ম্যাচেও জয় আসে একই ব্যবধানে।

সব মিলে সফরে পাঁচে পাঁচ টাইগাররা। পরিসংখ্যানের আলোকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা সফর (দ্বিপক্ষীয় সিরিজ)।

যদিও ওই সফরের কিছু দিন আগে ক্যারিবীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে ক্রিস গেইল, সারওয়ানসহ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল একাদশের অধিকাংশ ক্রিকেটার খেলেননি। যে কারণে প্রথম টেস্টে একসঙ্গে সাতজন ক্রিকেটারের অভিষেক হয়। কিন্তু রেকর্ডবুকে এসবের কোনো মূল্য নেই। সেখানে লেখা থাকবে কেবলই ‘বাংলাদেশের বীরত্ব গাথা’।

সর্বশেষ খবর