মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সাকিব তামিমের ‘অন্যরকম’ শুরু

এবার একই সুযোগ এসেছে তামিমের সামনে। খেলাও হবে দেশের মাটিতে। এখন দেখার বিষয়, ক্যাপ্টেন তামিম এই সুযোগটা লুফে নিতে পারেন কিনা!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাকিব তামিমের ‘অন্যরকম’ শুরু

ছবি : এএফপি

করোনাভাইরাস বদলে দিয়েছে বাস্তবতা। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে।  ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই স্টেমিনা ঠিক রাখতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। তবে অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে সিরিজটা সব ক্রিকেটারের জন্যই বিশেষ কিছু। তবে দলের দুই সেরা তারকা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের জন্য ‘অন্যরকম’ শুরু।

তামিম ইকবাল অনেক আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ানডের নেতৃত্ব পেলেও অভিষেক এখনো হয়নি। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধেই মাঠে নেতা হিসেবে তার অভিষেক হবে।

সাকিব আল হাসান নিষেধাজ্ঞার পর এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারেননি। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে বাইশগজে নেমে নিজেকে ঝালাই করে নিয়েছেন। তবে নিজের চেনা ছন্দে ছিলেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। যদিও এক দিন আগে প্রস্তুতি ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।

‘অধিনায়ক’ হিসেবে প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট, তাই তামিমের জন্য তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি চ্যালেঞ্জিং। একদিকে ব্যাটিংয়ে ওপেনিংয়ে নেমে তাকে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে, অন্যদিকে নেতৃত্বে দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। তবে সাকিব ফিরে আসায় একদিক দিয়ে কাজ সহজও হয়েছে। বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করেই নিতে পারবেন সিদ্ধান্ত। দলে সুযোগ পাওয়া নতুন ক্রিকেটাররাও বেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন দুই পেসার শরীফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। নতুন হলেও তারা ঘরোয়া লিগে দাপট দেখিয়েই দলে জায়গা করে নিয়েছেন।

স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে প্রথমবারের মতো দলে জায়গা পেয়েছেন মেহেদী হাসান। বিপিএলের মতো ঘরোয়া আসরে অনেক দিন থেকেই ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়েছেন তিনি। এমন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ক্রিকেটারদের দলে পাওয়াটা অধিনায়ক হিসেবে তামিম ইকবালের জন্য স্বস্তিদায়কই বটে।

প্রতিপক্ষ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলটিও তুলনামূলক দুর্বল! কারণ করোনাভাইরাসের অজুহাতে ক্যারিবীয়দের সেরা একাদশের বেশ কিছু ক্রিকেটার  আসেননি। এই সুযোগটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে অধিনায়ক তামিমের অভিষেকটা চমকপ্রদই হওয়ার কথা। তা ছাড়া এমনিতেও ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্যারিবীয়রা প্রতিপক্ষ হিসেবে খুব শক্তিশালী নয়।

পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, দুই দলের দ্বৈরথে শেষ ১০ ওয়ানডের মধ্যে ৮টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। অবশ্য মাঠে ভালো করতে না পারলে পরিসংখ্যান  কোনো কাজে লাগে না। তাই প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা কিংবা দুর্বলতা নিয়ে ভাবার চেয়ে করোনার পর নিজেদের গুছিয়ে নেওয়াই তামিমের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

অধিনায়ক হিসেবে ২০০৯ সালে এমন একটা সুযোগ পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসানও। সেবার বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে গেইল-সারওয়ান-চন্দরপলরা খেলেননি। এদিকে মাশরাফির ইনজুরির কারণে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলেন সাকিব। ওই সফরে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই ক্যারিবীয়দের তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।

এবার একই সুযোগ এসেছে তামিমের সামনে। খেলাও হবে দেশের মাটিতে। এখন দেখার বিষয়, ক্যাপ্টেন তামিম এই সুযোগটা লুফে নিতে পারেন কিনা!

ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে এই সিরিজ দারুণ একটা সুযোগ এনে দিয়েছে সাকিবকেও। এক বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সিরিজে ‘তুলনামূলক দুর্বল’ প্রতিপক্ষ পাওয়ায় ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানের খাতাটা রাঙিয়ে দেওয়ার দারুণ সময়।

দুই তারকা তামিম এবং সাকিব এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের ‘অন্যরকম’ শুরুটা সাফল্যের মোড়কে মুড়িয়ে দিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়!

সর্বশেষ খবর