বুধবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

লাল বলে দাপট দেখানোর মিশন

মেজবাহ্-উল-হক

লাল বলে দাপট দেখানোর মিশন

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড কেন এমন দল পাঠাল?

-ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন এই প্রশ্নের জবাবে রসিকতা করে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘ওদের বড়রা আমাদের সঙ্গে পারে না, তাই ছোটদের পাঠিয়েছে এবার!’

কিন্তু ছোটরাও তো পারল না এবার! সাদা বলের লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড়দের মতো ছোটরাও নাস্তানাবুত। জয় তো দূরের কথা, তিন ম্যাচের একটিতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি সফরকারীরা।

ওয়ানডে সিরিজ ৩-০-তে শেষ। এবার শুরু হচ্ছে টেস্ট সিরিজ -‘লাল বলে দাপট দেখানোর মিশন’।

-একটা বিষয় পরিষ্কার যে, ক্যারিশম্যাটিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে ওয়ানডে বাংলাদেশ ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ হলেও টেস্টে এখনো টাইগাররা শিশুই রয়ে গেছে! তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে ও এই উইন্ডিজকে বাদ দিলে সব মিলিয়ে এই ফরম্যাটে জয় মাত্র তিনটি। তারপরও এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সুপার ফেবারিট বাংলাদেশ।

উইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে ছাড়া টেস্টে টাইগাররা হারিয়েছেন অস্ট্র্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে। ঘরের মাঠে স্পিন বিষে নীল করে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে ঘায়েল করেছিল বাংলাদেশ। আর নিজেদের ১০০তম ঐতিহাসিক টেস্টে শ্রীলঙ্কার মাটিতেই তাদের হারিয়ে ম্যাচটি স্মরণীয় করে রেখেছেন টাইগাররা।

জিম্বাবুয়ে এখন বাংলাদেশের কাছে সবচেয়ে সহজ প্রতিপক্ষ। আফ্রিকার দলটির বিরুদ্ধেই জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ফিফটি-ফিফটি। অর্থাৎ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৭ জয় এবং ৭ হার।

তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৬ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র চারটি। দুটি জয় সেই ২০০৯ সালে, ক্যারিবীয় দ্বীপেই। সেবার উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে ক্রিস গেইল, রামনরেশ সারওয়ান, শিবনারায়ণ চন্দরপলের মতো তারকারা খেলেননি। সেই সিরিজে বাংলাদেশ ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করেছিল।

এরপর আরও দুবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করেছে বাংলাদেশ। দুবারই উল্টো হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। ২০১২-১৩-তে দুবার বাংলাদেশ সফরে এসেও লাল বলে দোর্দ- প্রতাপ দেখিয়েছেন টেস্টের এক সময়ের সম্রাটরা।

তবে সাম্প্রতিক টাইগারদের কাছে আর পাত্তাই পাচ্ছে না দলটি। ঘরের মাঠে টাইগারদের কাছে প্রতিপক্ষ হিসেবে ক্যারিবীয়রা যেন ‘ডাল-ভাত’! এর আগের সফরের দুই টেস্টেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নাকাল করে ছেড়েছেন টাইগাররা। ২০১৮ সালের সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬৪ রানে জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে তো ক্যারিবীয়রা দাঁড়াতেই পারেনি। বাংলাদেশের কাছে হেরে যায় ইনিংস ও ১৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।

মজার বিষয় হচ্ছে, ‘কথিত’ ছোটরা নয়, সে সফরে কিন্তু ক্যারিবীয়দের বড়রাই ছিলেন। কাইরন পাওয়েল, ব্রাথওয়েট, হেটমায়ারের মতো তারকা ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ছিলেন দেবেন্দ্র বিশুর মতো বাইশগজের ‘বিষাক্ত’ স্পিনার! তবুও দুই ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এবারও দুই টেস্টের সিরিজ। প্রথমটি বন্দরনগরী চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ঢাকায়। যদিও উইন্ডিজের ওয়ানডে ও টেস্ট দলের মধ্যে সামর্থ্যরে ব্যবধান অনেক। টেস্টে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ বোলার রয়েছেন। যারা ম্যাচের চিত্র পাল্টে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন। তারপরও ওয়ানডে সিরিজের মতো টেস্টেও যদি টাইগাররা ‘নিখুঁত ক্রিকেট’ খেলতে পারেন তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবে কিনা তা নিয়েই সংশয়!

তবে কি এখন লাল বলে দাপট দেখানোর সময়...!

সর্বশেষ খবর