সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

স্পিনে বাংলাদেশ পেসে উইন্ডিজ

সাকিব, তাইজুল, মিরাজ ও নাঈম একত্রে টেস্ট খেলেছেন ১১২টি। উইকেট পেয়েছেন ৪৪০টি। বিপরীতে ক্যারিবীয়দের তিন স্পিনার রাহকিম কর্নওয়াল, জোমেল ওয়ারিক্যান ও ভেরাস্বামী পারমিউল একত্রে টেস্ট খেলেছেন সাকল্যে ১৭টি এবং উইকেট মাত্র ৫৩টি।

আসিফ ইকবাল

স্পিনে বাংলাদেশ পেসে উইন্ডিজ

তৃতীয় ওয়ানডেতে বোলিংয়ের সময় কুঁচকিতে টান পড়ে সাকিব আল হাসানের। ক্যারিবীয়দের পক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে দুরন্ত বোলিং ও ব্যাটিং করে সাকিব প্রমাণ করেছেন, এক বছরের নিষেধাজ্ঞা তার পারফরম্যান্সের উপর বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলেনি। তৃতীয় ওয়ানডেতে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ইনজুরিতে পড়লে কপালে ভাঁজ পড়ে টিম ম্যানেজমেন্টের।

ইনজুরি থেকে সাকিব এখন পুরোপুরি সুস্থ এবং দীর্ঘসময় ব্যাটিং-বোলিং করছেন। আশ্বস্ত হয়েছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। উজ্জীবিত ও উদ্দীপ্ত হয়েছে গোটা দল। কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের মূল পরিকল্পনা সাকিবকে ঘিরেই। ৩-৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরীতে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথমটি খেলবে দুই দল। করোনাকালে বেশ কয়েকটি টেস্ট খেলে নিজেদের ধাতস্থ করে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ প্রায় ১১ মাস পর এই প্রথম সাদা পোশাকে খেলবে। যদিও রঙিন পোশাকে খেলে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। কিন্তু টেস্ট খেলবে এই প্রথম। তাই চাপটা একটু বেশিই থাকছে। তারপরও ঘরের মাঠ বলে সুবিধাজনক অবস্থানেই থাকছে মুমিনুল বাহিনী। তারপরও কেমার রোচ, শন গাব্রিয়েল ও আলঝারি জোসেফকে নিয়ে গড়া পেস অ্যাটাক মুমিনুল বাহিনীর যথেস্ট চ্যালেঞ্জিং। অবশ্য সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল, নাঈম হাসানকে নিয়ে গড়া টাইগারদের স্পিন অ্যাটাক অভিজ্ঞ ও পরিসংখ্যানের বিচারে এগিয়ে যোজন যোজন। পরিসংখ্যানের বিচারে শক্তিমত্তায় স্পিনে এগিয়ে বাংলাদেশ এবং পেসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে ১১৯টি। জয় সাকল্যে ১৪টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬ টেস্ট খেলে জয় ৪টি। ২০১৮ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে এসে সিরিজ হেরেছিল ক্যারিবীয়রা।

ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জয় পেতে স্পিন সহায়ক উইকেট হবে কোনো সন্দেহ নেই। টিম ম্যানেজমেন্টকে স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়ে দেওয়ার যুক্তিও রয়েছে। টেস্ট স্কোয়াড সাজানো হয়েছে চার স্পিনার দিয়ে। দুজন বাঁ হাতি এবং দুজন লেগ স্পিনার। সাকিব, তাইজুল, মিরাজ ও নাঈম একত্রে টেস্ট খেলেছেন ১১২টি। উইকেট পেয়েছেন ৪৪০টি। বিপরীতে ক্যারিবীয়দের তিন স্পিনার রাহকিম কর্নওয়াল, জোমেল ওয়ারিক্যান ও ভেরাস্বামী পারমিউল একত্রে টেস্ট খেলেছেন সাকল্যে ১৭টি এবং উইকেট মাত্র ৫৩টি। বিপরীত চিত্র আবার পেস বিভাগে। টাইগার স্কোয়াডে পেসারের সংখ্যা ৫। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, আবু জায়েদ রাহী ও এবাদত হোসেন একত্রে টেস্ট খেলেছেন ৩৩টি এবং উইকেট ৬৫টি। তিন ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ, শ্যানন গাব্রিয়েল আলঝারি জোসেফ ত্রয়ী ১২৩ টেস্ট খেলে উইকেট শিকার করেছেন ৩৮৬টি। স্পিনে যেমন বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের পার্থক্যে যোজন যোজন এবং পেসে বিপরীত চিত্র। 

স্পিনে টাইগারদের মূল ভরসা সাকিব। ৫৬ টেস্টে তার উইকেট সংখ্যা ২১০টি। বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসেবে ২০০ উইকেটের মাইলফলক গড়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ঘরের মাঠে ৩৭ টেস্টে তার উইকেট ১৪২টি। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১০ টেস্টে উইকেট ৪৬টি। আরেক বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ২৯ টেস্ট খেলে উইকেট নিয়েছেন ১১৪টি। ঘরের মাঠে সফল তাইজুলের শিকার ১৯ টেস্টে ৯৩টি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ টেস্টে ২৮টি। অফ স্পিনার মিরাজ ঘরের মাঠে দুর্বার। ২২ টেস্টে উইকেট ৯০টি। ঘরের মাঠে ১১ টেস্টে উইকেট সংখ্যা ৭১টি। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষেও সফল মিরাজের উইকেট সংখ্যা ৪ টেস্টে ২১টি। নাঈম ৫ টেস্ট খেলে উইকেট নিয়েছেন ১৯টি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে উইকেট ২ টেস্টে ৬টি।

বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ‘কাটার মাস্টার’ ১৩ টেস্টে উইকেট নিয়েছেন ২৮টি। সুইং বোলার আবু জায়েদ রাহী ৯ টেস্টে ২৪ উইকেট, তাসকিন আহমেদ ৫ টেস্টে ৭ এবং এবাদত ৬ টেস্টে ৬ উইকেট। নতুন মুখ হাসান মাহমুদের এখনো অভিষেক হয়নি। অপরদিকে কেমার রোচ একাই ৬০ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ২০৪ উইকেট। গাব্রিয়েল ৫০ টেস্টে ১৫০ উইকেট এবং আলঝারি জোসেপ ১৩ টেস্টে নিয়েছেন ৩২ উইকেট।

দুই দলের ব্যাটসম্যানদের লড়তে হবে পেস ও স্পিনারদের বিপক্ষে। ব্যাটসম্যানদের আড়ালে লড়াইটা মূলত ক্যারিবীয় পেসার ও টাইগার স্পিনারদের।

সর্বশেষ খবর