শিরোনাম
সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ফুটবলার যখন তারকা কোচ

ফুটবলার যখন তারকা কোচ

গফুর বেলুচ

তাঁর অবদান ভোলার নয়

গফুর বেলুচ ৬০ দশকে মাঠ কাঁপানো ফুটবলার ছিলেন। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্থান থেকে ঢাকা ঘরোয়া ফুটবলে খেলতে আসার পর তিনি আর ফিরে যাননি। ১৯৭৩ সালে বিজেআইসি লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়। হেড কোচ সাহেব আলী দায়িত্বে থাকলেও ডেপুটি হিসেবে তার অবদান ভোলবার নয়। তারই প্রশিক্ষণে ব্রাদার্স ইউনিয়ন তৃতীয়, দ্বিতীয় বিভাগ লিগে টানা চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম বিভাগে উঠে। প্রথম ম্যাচেই আবাহনীকে হারিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে দলটি। ১৯৭৮ সালে ঢাকায় যুব এশিয়া কাপে তিনি বাংলাদেশের প্রশিক্ষক ছিলেন। গফুরের প্রশিক্ষণে অনেক ফুটবলার তারকারখ্যাতি পান।

 

গোলাম সারোয়ার

ভারতের মাটিতে ট্রফি জয়

গোলাম সারোয়ার টিপু মোহামেডানে খেলেই তারকারখ্যাতি পান। তারই নেতৃত্বে ১৯৭৪ সালে আবাহনী প্রথম লিগ জেতে। ১৯৭৯ সালে মোহামেডান থেকে অবসর নেন। পরের বছরই ঐতিহ্যবাহী এই দলের কোচের দায়িত্ব পান। অভিষেক দায়িত্বে তিনি দলকে এনে দেন ফেডারেশন কাপ ও লিগ শিরোপা। ১৯৮২ সালেও দুটি শিরোপা ছাড়াও মোহামেডানে ভারতের মাটিতে আশীষ-জব্বার স্মৃতি টুর্নামেন্টে মোহামেডান অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। টিপু বেশ কবার জাতীয় দলের কোচও ছিলেন। টিপুর যোগ্য প্রশিক্ষণে অনেক নতুন ফুটবলারে সন্ধান মেলে। বাদল রায়, সালাম মুর্শেদী, আবদুল গাফফার দেশ পরিচিত ফুটবলার হিসেবে যে খ্যাতিটা পান সেখানে টিপুর অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে।

 

আলী ইমাম

স্বাধীন বাংলা দল গঠনে বড় অবদান

ওয়ান্ডারার্স আবাহনী ও ইস্টএন্ড দলের হয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন আলী ইমাম। স্বাধীন বাংলা দল গঠনের পেছনে তার বড় অবদান রয়েছে। খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নিলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ফুটবলের মায়া ছাড়তে পারেননি। রহমতগঞ্জে কোচ হিসেবে শুরু তার। ১৯৮৪ সালে ইমামের প্রশিক্ষণে আবাহনী লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮৫ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে রানার্সআপ করান। ১৯৮৬ সালে তিন বছর পর মোহামেডান লিগে হারানো শিরোপা উদ্ধার করে ইমামের প্রশিক্ষণে। তার হাত ধরে দেখা মিলেছে অসংখ্য ফুটবলারের। পরবর্তীতে তারাই জাতীয় দলে অপরিহার্য হয়ে উঠে।

 

ওয়াজেদ গাজী

আরামবাগ থেকেই কোচিং ক্যারিয়ার

ওয়াজেদ গাজীই একমাত্র ফুটবলার ছিলেন। যিনি ষাট দশকেই কলকাতা ও ঢাকা লিগে একই সঙ্গে খেলেছেন। বিজেআইসি ও মোহামেডানে খেলে লিগ জয়ের অংশীদারও হয়েছেন। আরামবাগ থেকেই তার কোচিং ক্যারিয়ার শুরু। দলটি বড় ধরনের সাফল্য না পেলেও জায়ান্ট কিলারের টাইটেলটা আসে গাজীর প্রশিক্ষণে। আরামবাগের পর মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াসংঘেও দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন গাজী। খেলোয়াড়রা বরাবরই তাকে ওস্তাদ বলে ডাকতেন। যেমন নাম তেমন কাজ। আলফাজ, জুয়েল রানা, সাইফুল বারী টিটু, বরুন, জিয়া বাবু, আহমেদ, তুহিন, আয়াজসহ অসংখ্য ফুটবলার তারকা হওয়ার পেছনে গাজীর অবদান রয়েছে।

 

 কাজী সালাউদ্দিন

অভিষেকেই দুই শিরোপা

শুধু ফুটবল নয়। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম সুপারস্টারের নাম কাজী সালাউদ্দিন। এখন যেমন সাকিব, এক সময়ে সালাউদ্দিনই ছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের বড় বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশে প্রথম হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব তারই। আবাহনীতে খেলেই পরিচিত পেয়েছেন। ১৯৮৪ সালে অবসর নেওয়ার পরই ১৯৮৫ সালে আবাহনীর কোচের দায়িত্ব পান। অভিষেকেই এনে দেন ফেডারেশন কাপ ও লিগের শিরোপা। পরের বছরও ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন। লিগে রানার্স আপ। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় সাফ গেমসে বাংলাদেশ রৌপ্য জিতেছিল তারই প্রশিক্ষণে। ১৯৯৪ সালে মুক্তিযোদ্ধার কোচের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম বার ফেডারেশন কাপ জেতান। লিগে রানার্স আপ।

 

শফিকুল ইসলাম

দুই প্রধানের দাপট ভাঙল মুক্তিযোদ্ধা

শফিকুল ইসলাম মানিক দেশের ফুটবলে পরিচিত মুখ। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও মোহামেডান মিলে এক যুগেরও বেশি ঘরোয়া আসরে মাঠ কাঁপান তিনি। মাঠ থেকে অবসর নিলেও ফুটবলের মায়া ছাড়তে পারেননি তিনি। মানিকের কোচিং ক্যারিয়ার শুরু মোহামেডানের ডেপুটি হিসেবে। সে বছর মোহামেডান অপরাজিত চ্যাম্পিয়নও হয়। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে মানিক মুক্তিযোদ্ধার দায়িত্ব পান। এখানেই বাজিমাত। মোহামেডান-আবাহনীর দাপট ভেঙে তার প্রশিক্ষণে লিগে নতুন চ্যাম্পিয়ন হয় মুক্তিযোদ্ধা। ফেডারেশন কাপ, লিগ, জাতীয় লিগ ছাড়াও মানিকের প্রশিক্ষণে ভারতের মাটিতে ম্যাগডোনাস কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় মুক্তিযোদ্ধা। 

মোহামেডান একবার জাতীয় লিগ ও চট্টগ্রাম আবাহনী শেখ কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন তারই প্রশিক্ষণে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর