২০০৩
ইনজামাম ১৩৮ রান
হোয়াংহো নদী যেমন চীনের দুঃখ। মুলতান তেমনই বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুঃখ। গত দুই দশকের ক্রিকেট ইতিহাসে বহু ম্যাচ হেরেছে টাইগাররা। কিন্তু ২০০৩ সালের মুলতানের হার কখনোই ভুলতে পারবে না। আজীবন পোড়াবে। টেস্টের চার দিন চালকের আসনে বসে থেকেও ইনজামাম-উল-হকের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের কাছে হেরেছিল। ২৬১ রানের টার্গেটে পাকিস্তান এক পর্যায়ে ২০৫ রান তুলতে হারিয়েছিল ৮ উইকেট। সেখান থেকে ইনজামাম একাই ১৩৮ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলকে ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় উপহার দেন। যদি বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতত, তাহলে সেটাই হতো টাইগার প্রথম টেস্ট জয়। কিন্তু ইনজামামের জন্য হয়েও হয়নি।
২০০৫
গিলক্রিস্ট ১৪৪ রান
‘২০০৫ সালেও জয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছিল বাংলাদেশ। ফতুল্লায় পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়াকে বাগে পেয়েও জিততে পারেনি দুই তারকা ক্রিকেটার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও রিকি পন্টিংয়ের জন্য। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে দলের চরম বিপর্যয়ে হিমালয়সম দৃঢ়তায় ব্যাটিং করেছিলেন গিলক্রিস্ট। বাংলাদেশের ৪২৭ রানের জবাবে এক পর্যায়ে অসিরা ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা, তখন গিলক্রিস্ট ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে ম্যাচে ফেরান। ইনিংসটি সাজনো ছিল ২১২ বলে ১৫ চার ও ৬ ছক্কায়। ৩০৭ রানের টার্গেট টপকে ৩ উইকেটের জয়ে আবার সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক পন্টিং। খেলেছিলেন ১১৮ রানের হার না মানা ইনিংস।
২০০৮
ভেট্টরি ৭৬ রান
২০০৮ সালেও জয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছিল বাংলাদেশ। সেবার টাইগারদের জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টরি। আশ্চর্য হলেও সত্যি, ভেট্টরি এখন বাংলাদেশের স্পিন কোচ। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দলের বিপর্যয়ে প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন ব্ল্যাক ক্যাপস অধিনায়ক। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১৭ রান টপকে ম্যাচ জিততে ভেট্টরি ফের খেলেন ৭৬ রানের ইনিংস। ২১৩ বল স্থায়ী ইনিংসটিতে ছিল ৭টি চার। তার দৃঢ় ব্যাটিংয়ের কাছেই হেরে যায় টাইগাররা। অথচ ব্যাটিংয়ের সময় ভেট্টরি সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারেনি টাইগাররা।
২০১৯
রশিদ খান ৬ উইকেট
২০১৯ সালে আফগানিস্তানকে হারাতে জহুর আহমেদ চৌধুরীর উইকেট বানানো হয়েছিল স্পিন সহায়ক। অথচ সেই স্পিন ফাঁদেই নিজেরা আটকে পড়ে হেরেছিল ২২৪ রানের পর্বতসমান ব্যবধানে। টাইগারদের একাই হারিয়েছিলেন বর্তমান সময়ের বিশ্বসেরা লেগ স্পিনার রশিদ খান। তার ঘূর্ণিতে বেসামাল হয়েছিল টাইগাররা। আফগানদের প্রথম ইনিংসের জবাবে রশিদের ঘূর্র্ণিতে ২৬০ রান করেছিল টাইগাররা। ৩৯৮ রানের জবাবে খেলতে নেমে ফের রশিদের ঘূর্ণিতে ১৭৩ রানে গুটিয়ে যায় সাকিব বাহিনী। এই ইনিংসে ৬ উইকেট নেন রশিদ। দুই ইনিংস মিলিয়ে উইকেট নেন ১১টি ১০৪ রানের খরচে।
২০২১
মেয়ার্স ২১০* রান
চার দিন চালকের আসনে বসেছিল বাংলাদেশ। শুধু মুমিনুলরা নন, ক্রিকেটপ্রেমীরাও ঘূর্ণাক্ষরে ভাবতে পারেননি চট্টগ্রাম টেস্টে হারবে টাইগাররা। কিন্তু সেই অসাধ্য কাজটি করেছেন কাইল মেয়ার্স। ২৮ বছর বয়সী ক্যারিবীয় ক্রিকেটার মেয়ার্স অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমেই বাজিমাত করেন। ২১০ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে মুমিনুলদের একাই হারিয়ে দেন। অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড এটা সপ্তম। কিন্তু চতুর্থ ইনিংসে প্রথম। ৩৯৫ রান তাড়া করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ উইকেটের জয় উপহার দেন মেয়ার্স আকাশসম দৃঢ়তায় ব্যাটিং করে। তাকে অবশ্য আরেক অভিষিক্ত ক্রিকেটার এনক্রুমাহ বোনারও সহায়তা করেন দুর্দান্ত ব্যাটিং করে।