বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

গোলপোস্টে কিংসের কাণ্ডারি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

গোলপোস্টে কিংসের কাণ্ডারি

আনিসুর রহমান জিকো

ঘুরে ফিরে একই দৃশ্য। বিদেশি ফুটবলাররাই লিগে মাঠ মাতাচ্ছেন। স্থানীয়দের নৈপুণ্য চোখে পড়ার মতো নয়। দু-তিন জন মাঝেমধ্যে নিজেদের মেলে ধরলেও বাকিরা একেবারে নীরব। বিশেষ করে জাতীয় দলের ফুটবলারদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। কারোর কারোর একাদশেও সুযোগ মিলছে না। বদলি হিসেবেই তাদের দেখা যাচ্ছে। তবে একজনের কথা না বললেই নয়। স্থানীয়দের মধ্যে শুধু আনিসুর রহমান জিকোই আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন। বসুন্ধরা কিংসের অপরাজয়ের রেকর্ড ধরে রাখার পেছনে জিকোর অবদান স্বীকার করতেই হবে।

রবসন, রাউল, ফার্নান্দেজ গোলের নেশায় আছেন। খালিদ শাফি রক্ষণভাগে চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য প্রদর্শন করছেন। গোলরক্ষক জিকো অনেক নিশ্চিত গোল রক্ষা করে দলের অবস্থান মজবুত করছেন।  কিংসকে টানা দ্বিতীয় বার শিরোপা জয়ের স্বপ্নও দেখাচ্ছেন। প্রথম লেগে ১২ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে কিংস এখনই অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। দ্বিতীয় লেগে বড় কোনো অঘটন না ঘটলে শিরোপা যে তাদের ঘরে থাকছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ১২ ম্যাচে ১১ জয় ও ১ ড্র কিংসের। গোল করেছে ৩২টি আর বিপক্ষে মাত্র ৫টি। এতেই প্রমাণ মিলে জিকোর ক্যারিশমা। জাতীয় দলের অন্য দুই গোলরক্ষক শহিদুল আলম ঢাকা আবাহনীর হয়ে ১১, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের আশরাফুল ইসলাম রানা ১৫টি গোল হজম করেছেন। অবশ্য রানা প্রথম কয়েক ম্যাচ খেলেননি অসুস্থতার কারণে।

কাতারের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দ্বিতীয় লেগে জিকো জাতীয় দলের গোলরক্ষক ছিলেন। ম্যাচে শোচনীয় হার হলেও জিকো যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন তা না হলে বাংলাদেশ ১ ডজন গোল হজম করলেও অবাক হওয়ার থাকত না। কোচ জেমি ডে তো লিগের পারফরম্যান্স দেখেই সামনে জাতীয় দল সাজাবেন। জিকো যে দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছেন তাতে পছন্দের ১ নম্বর তালিকায় তার নাম যে থাকবে এ নিয়ে সংশয় নেই। দুরন্ত শট, হেড বা পেনাল্টি সেভ করাটা জিকোর কাছে যেন মামুলি ব্যাপার। এই অল্প ক্যারিয়ারে ৬টি পেনাল্টি সেভ করার রেকর্ড আছে তার।

অনেকদিন ধরে গোলরক্ষক পজিশন নিয়ে হতাশা বিরাজ করছিল। শহিদুর রহমান সান্টুর শূন্যতা এখনো পূরণ হয়নি। তবুও মহসিন ও কাননের নাম সবার মুখে মুখে ছিল। এরপর আমিনুল ও বিপ্লবের বিদায়ের পর গোল পজিশনে তেমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কানন বলেন, ‘আমি বলব এ মুহূর্তে জিকোই নাম্বার ওয়ান। উঁচু বা নিচে বল ধরার দক্ষতা আছে। তবে একটু অস্থির প্রকৃতির। তা কাটানো দরকার। জিকোর ভাগ্য ভালো একজন জাত কোচের অধীনে আছেন। বয়সও কম, তাই ও যদি তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে আমি বলব জিকোই হবে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে সেরা গোলরক্ষক। জিকোর কথা, ‘আমি কতটুকু পারছি তা দর্শকরাই বিচার করবেন।’

সর্বশেষ খবর