বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ফুটবলে তারুণ্যের জয়গান

ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৯৭৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে। জাতীয় দল গড়া নিয়ে অনেক বিতর্ক ও আলোচনা হয়েছে। তবে ৪৮ বছরের ইতিহাসে এবারের মতো চমক কখনো হয়নি। জাতীয় দলে ৯ তারকা ফুটবলার যেমন বাদ পড়েছেন তেমনিভাবে ৫ নতুন মুখের দেখা মিলেছে। এত জন বাদ বা নতুন মুখের দেখা কখনো ঘটেনি। দল ঘোষণা করার কথা ছিল ১৩ মার্চ। অনুশীলনের কথা চিন্তা করেই ২৪ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাফুফে। ২৩ মার্চ থেকে নেপালের কাঠমা-ুতে শুরু হচ্ছে ত্রিদেশীয় ফুটবল। স্বাগতিক নেপাল ছাড়াও বাংলাদেশ এবং কিরগিজস্তান অংশ নিচ্ছে। তবে কিরগিজস্তানের অনূর্ধ্ব-২৩ দল খেলবে।

ফিফা স্বীকৃত বলেই বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। আগের দিনই ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি বলেছেন, ‘টুর্নামেন্টে লক্ষ্য একটাই শিরোপা।’ বাস্তবে তা সম্ভব কিনা মাঠের লড়াইয়ে বোঝা যাবে। নেপালের মাটিতে নেপালকে হারানো খুবই কষ্টকর। তাছাড়া অনূর্ধ্ব-২৩ হলেও কিরগিজস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী। গত নভেম্বরে ঢাকায় নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রীতিম্যাচে অংশ নেন জামাল ভূঁইয়ারা। এক ম্যাচে জয় ও অপরটি ড্র হয়। ৪ ডিসেম্বর দোহায় কাতারের বিশ্বকাপ দ্বিতীয় লেগে বাংলাদেশ ৫-০ গোলে হারে। এটিই ছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক শেষ ম্যাচ।

চার মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিরছে বাংলাদেশ। কোচ জেমি ডে এতে খুশি। তার কথা ফল যাই হোক না কেন খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ঝালাই করা যাবে। হুট করে জাতীয় দলের নাম ঘোষণা হলেও এ নিয়ে কোচ বেশ বিপাকে ছিলেন। কীভাবে দল সাজাবেন তার ভিতর অস্থিরতা কাজ করছিল। কেননা লিগে তিনি জাতীয় দলের ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি নাকি এটাও বলেছেন, যা দেখলাম তাতে চার জন ছাড়া কেউ জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না।

কোচ নাকি এটাও চেয়েছিলেন জাতীয় দলের পরিবর্তে অনূর্ধ্ব-১৯ দল টুর্নামেন্টে অংশ নিক। কিন্তু বাফুফে রাজি না হওয়ায় জাতীয় দলই খেলতে যাবে। দলে তিনি তরুণদেরই প্রাধান্য দিয়েছেন।

ক্যাম্পে ডাক পাওয়া নতুনরা হলেন- বসুন্ধরা কিংসের রিমন হোসেন, মুক্তিযোদ্ধার মো. ইমন, মেহেদী হাসান, ফরোয়ার্ড মেহেদী হাসান ও মোহামেডানের হাবিবুর রহমান সোহাগ। ৪ ডিসেম্বর কাতারের বিপক্ষে খেলা দল থেকে বাদ পড়েছেন ৯ জন। যা এক নতুন রেকর্ড। ক্যারেন্ট ন্যাশনাল টিমে এত অধিকসংখ্যক ফুটবলার কখনো বাদ পড়েনি।

জাতীয় দলে যারা সুযোগ পেয়েছেন লিগে অনেকের পারফরম্যান্স আহামরি ছিল না। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে এদের কোন চিন্তায় ক্যাম্পে ডাকা হলো? এ ব্যাপারে বাফুফের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ছাড়া তো উপায় নেই। খেলোয়াড় খুঁজে পাব কোথায়? দল গঠন নিয়ে কোচ জেমি ডেও পুরোপুরি সন্তুষ্টও নন। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এর চেয়ে যোগ্য খেলোয়াড় আর খুঁজে পাইনি।

পাঁচজন নতুন ডাক পেয়েছেন যোগ্যতা দিয়েই। প্রশ্ন হচ্ছে শেখ জামাল ধানমন্ডির নুরুল আবছার কেন নেই? এবার লিগে যে ক’জন স্থানীয়রা চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছে তাদের মধ্যে আবছার অন্যতম। জেমির মুখেও তো আবছারের নাম শোনা গিয়েছিল। তাহলে কোন রহস্যে তাকে বঞ্চিত করা হলো। অথচ অধিকাংশ ম্যাচে সাইড বেঞ্চে বসে থাকার পরও কেউ কেউ দলে সুযোগ পেয়েছেন। জামাল ভূঁইয়াকে দলে রাখা হয়েছে।

কলকাতা মোহামেডানের অনুমতি নিয়েই জামাল টুর্নামেন্টে খেলাবে বাংলাদেশ। তাহলে কি পুরনো অভ্যাসটা বদলালো না। স্বজনপ্রীতির নোংরামিটা কী থেকেই যাবে?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর