বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

মুক্তির আনন্দ

ক্রাইস্টচার্চ থেকে কুইন্সটাউনে টাইগাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মুক্তির আনন্দ

ভিডিওতে স্পষ্ট, কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্তি পেয়ে কতটা আনন্দিত টাইগার ক্রিকেটাররা। ছিমছাম কুইন্সটাউন স্টেশনে দাঁড়ানো মাস্ক ছাড়া মুশফিক, লিটন, সৌম্য সরকাররা যেন বাধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে দলের সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে জড়িয়ে ধরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। লিটন দাসকে কানে কানে সুখবর শোনাচ্ছেন সাইফ উদ্দিন। আবার লিটনের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করছেন রুবেল হোসেন।

ক্রাইস্টচার্চে দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইন বন্দী জীবনের পর কুইন্সটাউনে টাইগার ক্রিকেটারদের মুক্তির আনন্দের খন্ড খন্ড চিত্র। কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হওয়ার অনুভূতিটাও টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাছে অনেকটা স্বাধীনতার মতো, ‘এখন আমরা বাইরে বের হতে পারছি। এটা দারুণ ব্যাপার। মুক্ত বাতাসে আছি। খুব ভালো লাগছে।’       

২৪ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে পা রাখার পরই ঘরবন্দী হয়ে পড়েন তামিমরা। করোনামুক্তির জন্য চার চারবার পরীক্ষা করে ক্রিকেটাররা মুক্ত জীবন পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডে। এখন তারা মুক্ত স্বাধীন। ৪৫ দিনের সফরের বাকি দিনগুলো এখন আর মাস্ক পড়তে হবে না, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে না। এই আনন্দে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক মিডিয়ার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। সেখানে তিনি ক্রাইস্টচার্চের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। আমরা জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকেছি, কিন্তু সঙ্গনিরোধ অবস্থায় থাকিনি। সত্যি বলতে এখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা আমাদের দারুণ দেখাশোনা করেছেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট আমাদের যেভাবে দেখাশোনা করেছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ। আমরা সময়টায় যাতে বিরক্ত না হই, সেজন্য তারা কষ্ট করেছে অনেক। তারা চেষ্টা করেছে আমাদের জন্য, যতটা সহজ করা যায়।’

প্রাণঘাতী করোনা থেকে মুক্ত থাকতে নিউজিল্যান্ড সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অকল্যান্ডে লকডাউন চলছে। করোনাকালীন সিরিজ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া সফর করেছে নিউজিল্যান্ডে। পাকিস্তান ও ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ নিয়ে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের অভিযোগ ছিল। কিন্তু টাইগার ক্রিকেটারদের নিয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি। বরং প্রশংসাও পেয়েছে। দেশের বাইরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন ছিল কঠিন, সেটা স্বীকার করেছেন তামিম, ‘ব্যাপারটা ছিল খুবই কঠিন। নিউজিল্যান্ডে আমাদের ৪৫ দিন থাকতে হবে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে সফরটি ২০-২৫ দিনেই শেষ হয়ে যেত। পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। আমাদের উচিত প্রতিটি দেশের নিজস্ব নিয়মকে সম্মান জানানো।’

কুইন্সটাউনে পাঁচ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পাশাপাশি একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে। ১৬ মার্চ যাবে ডানেডিনে। সেখানেই তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি খেলবে ২০ মার্চ। কুইন্সটাউনে স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরি যোগ দিয়েছেন দলের সঙ্গে।

২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে জুম্মার দিনে মুসল্লিদের উপর গুলীবর্ষণ করেছিল ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামে একজন অস্ট্রেলিয়ান সন্ত্রাসী। তাতে মারা গিয়েছিলেন ৫১ জন। ক্রাইস্টচার্চে টেস্ট না খেলেই দেশে ফিরেন ক্রিকেটাররা। সন্ত্রাসী হামলার মুখে না পড়লেও তামিমরা ভয়াবহতা দেখেছিলেন কাছ থেকে। দেশটির ক্রিকেট বোর্ড ও সরকারের প্রচেষ্টায় দেশে ফিরে আসেন। গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডানকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চান, ‘নিউজিল্যান্ড খুব সুন্দর দেশ। আমি ছয়বার এখানে এসেছি। আমরা সবসময় এখানে আসতে চাই। এখানকার মানুষজন খুবই ভালো। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কথা বলতেই হয়। কঠিন সময়টি তিনি যেভাবে সামলেছেন, তার সঙ্গে দেখা হলে আমি ধন্যবাদ জানাব তাকে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর