শিরোনাম
সোমবার, ২৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ঘুচে যাক শিরোপার খরা

বাংলাদেশ-নেপাল ফাইনাল আজ

ঘুচে যাক শিরোপার খরা

ট্র্রফি ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া ও নেপালের অধিনায়ক কিরন কুমার। -বাফুফে

২২ বছর পর ফুটবলে বাংলাদেশ-নেপাল আজ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। পরের দেশ হলেও জামাল ভূঁইয়ারা চেনা ভেন্যুতেই নামছে। এর আগে ১৯৮৪ ও ১৯৯৯ সালে সাফ গেমসে নেপালের বিপক্ষে দশরথ স্টেডিয়ামেই লড়েছিল বাংলাদেশ। দু’দল আরও আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলেছে এখানে। চেনা ভেন্যু ও চেনা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নামছে বাংলাদেশ। তবুও প্রশ্ন, ফাইনালে কী হবে আজ। আমার মতো পুরো দেশই চাইবে জামালদের হাতে চ্যাম্পিয়নের ট্রফি উঠুক। তিন জাতির টুর্নামেন্ট ছোট না বড় এটা আমার প্রশ্ন নয়। কথা একটাই বাংলাদেশের শিরোপা জেতাটা খুবই জরুরি। হতশায় আমরা ডুবে আছি। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারছি না। ১৯৯৯ সালে সাফ গেমসে সোনা ও ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জেতার পর ভেবেছিলাম ফুটবলে আর পেছনে তাকাতে হবে না। অথচ সাফে ট্রফি জেতার পরই যেন সর্বনাশ নেমে আসে।

দেড় যুগ ধরে ফুটবলে জাতীয় দলের কোনো শিরোপা নেই। একেবারে ঘরশূন্য। এতটা সংকটাপন্ন অবস্থা যে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে খেলাটাই স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ বড় কোনো টুর্নামেন্টে ট্রফি জিতবে সেই প্রত্যাশার কথাও ভাবিনি। কিন্তু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বিখ্যাত কোনো দেশ খেলে না। এরপরও আমরা ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী কেন? দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশ যদি এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে কেন? আমরা যখন খেলতাম তখনো বড় কোনো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। তবুও ফুটবল তো একটা অবস্থানে ছিল। তার এতটা করুণ পরিণতি হলো কেন?

যাক অতীত অতীতই। ফুটবল নতুন পথে চলুক। সেটাই আমার প্রত্যাশা। আর এ জন্য দরকার ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে শিরোপা। আর এতেই পাল্টে যেতে পারে হতাশায় ঢাকা ফুটবল। ঘরের মাঠে নেপাল বরাবরই ফেবারিট। তারপরও বলব শিরোপা জেতাটা কঠিন নয়। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে রাউন্ড রবিন লিগে যা দেখলাম তাতে বাংলাদেশকেই শক্তিশালী মনে হয়েছে। বেশ কজন নতুন মুখের দেখা মিলেছে। যারা অভিষেকেই নজর কেড়েছে। শিরোপা জিতে ফুটবলে বাংলাদেশ নতুন পথের সন্ধান পাবে এ প্রত্যাশা সবারই। ঘুচে যাক দেড় যুগের শিরোপা খরা।

জাতীয় দলের বড় সুবিধাটা হচ্ছে কোচ জেমি ডে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। কার কেমন পারফরম্যান্স তিনি ভালো মতোই জানেন। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচ দেখে জেমি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন ফাইনালে একাদশ কীভাবে গড়বেন। কোচ শুরু থেকেই বলে আসছেন এ সফরটা মূলত তার পরীক্ষার। শিষ্যদের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আগে পরখ করে নিতে চান। কিন্তু আজ কোনো পরীক্ষা নয় যারা যোগ্য তাদেরকেই ফাইনালে নামাবেন। পরীক্ষার দরকার আছে। কিন্তু শিরোপা জেতাটা দেশের জন্য খুবই জরুরি।

সাফ গেমসে যখন জাতীয় দল খেলত প্রতিবারই আমরা ছিলাম ফেবারিট। অথচ এ সামান্য সাফল্য পেতে ১৫ বছর লেগে গেছে। ১৯৮৪ সালে গ্রুপ পর্বে নেপালকে ৫-০ গোলে হারালেও ফাইনালে তাদের কাছে ২-৪ গোলে হেরে যায়। আমি ছিলাম সেই দলে। ১৯৯৯ সালে এই কাঠমা-ুতেই ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে প্রথম সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। শেষ স্মৃতিটা সুখের। আমার বিশ্বাস ২২ বছর পরও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশের বিজয়ের পতাকা উড়বে এটাই আশা করি।

২০১৭ সালে ঘরের মাঠে নেপালের কাছে হেরে আমরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে খেলতে পারিনি। গত বছর যে নেপাল প্রীতিম্যাচ খেলে যায়, ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে সেই তুলনায় নেপালকে শক্তিশালী মনে হয়নি। তারপরও ফাইনাল বলে যত কথা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর