সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ড্র টেস্টেও প্রাপ্তি কম নয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ড্র টেস্টেও প্রাপ্তি কম নয়

পাঁচ বছর আগে কলম্বোয় টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটা ছিল টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়। নিজেদের ১০০ টেস্টে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। ‘দ্বীপরাষ্ট্র্র’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত এটাই একমাত্র জয়। ঐতিহাসিক টেস্টটিতে জয় তুলে নিতে অসাধারণ ব্যাটিং করেছিলেন বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল। অবশ্য ভারত মহাসাগরের পাড়ের দেশটিতে টাইগারদের আরও একটি ড্র ছিল। ২০১৩ সালে ড্র করেছিল গলেতে। লঙ্কা জয়ের পাঁচ বছর পর পাল্লেকেলেতে আরও একটি টেস্ট ড্র করে বাংলাদেশ। ড্র টেস্টের শেষ দিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন বাঁ হাতি ওপেনার তামিম। খেলেছেন ৭৪ রানের দ্যুতিময় ইনিংস। তার হার না মানা ইনিংসই শেষ দিনে রোমাঞ্চ ছড়াতে দেয়নি। এমন এক সময়ে ড্র করে বাংলাদেশ, যখন দেশের বাইরে হারতে হারতে তলানিতে এসে ঠেকেছে আত্মবিশ্বাস। দেশের বাইরে ৯ টেস্ট হারের পর ড্র করেছে মুমিনুল বাহিনী এবং আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে টানা ৫ হারের পর এই প্রথম পয়েন্ট পেল। ড্র হলেও এই টেস্টে দুই দলের প্রাপ্তি কম নয়।

পাল্লেকেলেতে এই প্রথম টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সম্পূর্ণ ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর ১৬৩ ও মুমিনুলের ১২৭ এবং তামিমের ৯০, মুশফিকের অপরাজিত ৬৮ ও লিটনের ৫০ রানে ভর করে ৭ উইকেটে ৫৪১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা। যা দ্বীপরাষ্ট্র্রের মাটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। জবাবে অধিনায়ক দিমুথ কারুণারতেœর ২৪৪ ও ধনাঞ্জয়ার ডি সিলভার ১৬৬ রানে ভর করে ৮ উইকেটে ৬৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। টেস্টের চারদিনে দুই দলের উইকেটের পতন হয়েছিল ১০টি। গতকাল হয়েছে ৭টি। ৩ উইকেটে ৫১২ রান নিয়ে খেলতে নেমে স্বাগতিকরা ইনিংস ঘোষণা করে স্কোর বোর্ডে আরও ১৩৬ রান যোগ করে

এবং ৫ উইকেট হারিয়ে। স্বাগতিকরা যখন ইনিংস ঘোষণা করে, তখন এগিয়ে ১০৭ রানে। ১৫ সেসনের তখন ১৩টি শেষ। সাদা চোখে টেস্টের ফল ড্র। কিন্তু হঠাৎ করেই ২৭ রানের মধ্যে সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট হারালে ম্যাচে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুরোপুরি ব্যর্থ ওপেনার সাইফ। প্রথম ইনিংসে ০ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১ রান করেন। প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল সাজঘরে ফিরেন শূন্য রানে। ব্যক্তিগত ২৯ রানে আবার রিভিউতে বেঁচে যান তামিম ইকবাল। দলের স্কোরও তখন ২৯। শুরুর ধাক্কা সামলে তামিম ও অধিনায়ক মমিনুল দলকে টেনে নিয়ে যান। তামিম ও মুমিনুল দুজনে ৭৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে রক্ষা করেন। তামিম অপরাজিত থাকেন ৭৪ রানে। টাইগার অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ২৩ রানে। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম দারুণ ব্যাটিং করেন দুই ইনিংসে। প্রথম ইনিংসে একটি বাজে শট খেলে স্লিপে ক্যাচ দেন ব্যক্তিগত ৯০ রানে। মিস করেন সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ইনিংসে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করেন তিনি। ৯৮ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি ছক্কা এবং ১০ চার। এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে ছক্কা হাঁকানোয় সবচেয়ে এগিয়ে তামিম। ১২১ ইনিংসে তামিমের ছক্কা ৩৯টি। দুইয়ে থাকা মোহাম্মদ রফিকের ছক্কা ৩৪ এবং তিনে থাকা মুশফিকের ১৩৫ ইনিংসে ৩১টি।

৭৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে তামিম আবার ফিরে পেয়েছে তার শীর্ষস্থান। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৬৩ টেস্টের ১২১ ইনিংসে তার রান ৩৯.২৬ গড়ে ৪৬৭২। সেঞ্চুরি ৯ এবং হাফসেঞ্চুরি ৩০টি। যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। দুইয়ে থাকা মুশফিকের রান ৭৩ টেস্টে ১৩৫ ইনিংসে ৪৬০৫ রান। সেঞ্চুরিতে অবশ্য সবার উপরে মুমিনুল, ১১টি। তামিম যেমন ব্যাটিং করেছেন, বোলিং করেছেন তাসকিন। গতির ঝড় তুলে ১১২ রানের খরচে নেন ৩ উইকেট।  

সর্বশেষ খবর