মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বদলে যাওয়া তাসকিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বদলে যাওয়া তাসকিন

২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ গতির ঝড় তুলে। মাঠের লড়াইয়ে নাকাল হচ্ছিলেন ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যানরা। মেলবোর্নের প্রেস বক্সে বসে ভারতের কিংবদন্তীর ব্যাটসম্যান রাহুল দ্রাবিড় পাখির চোখে দেখছিলেন তাসকিনের বোলিং। মুগ্ধ ভারতীয় কিংবদন্তী তাসকিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের উজ্জ্বল আলোকবতির্কা হতে ২০১৭ সালে টেস্ট অভিষেক তাসকিনের। সুঠামদেহী তাসকিন গতির সঙ্গে বাউন্সের অপূর্ব সমাহারে ক্রিকেটপ্রেমীদের স্বপ্ন দেখানো শুরু করেন। অভিষেকের বছর ৫টি টেস্টও খেলেন ডান হাতি ফাস্ট বোলার। কিন্তু ফিটনেস ধরে রাখতে পারেনি বলে জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েন একসময়। স্মৃতি হয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ বোধোদয় হলে অক্লান্ত পরিশ্রমে ফিরেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। পাঁচ বছর পর ফিরলেও ফিরেছেন পুরনো ছন্দে। হয়তো উইকেট নিতে পারেননি। তবে গতি, সুইং ও আগ্রাসী মনোভাবে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের নাকাল করেছেন প্রতিমুহ‚র্তে। পাল্লেকেলে টেস্টে স¤পূর্ণ পেসার বিপরীত উইকেটে গতির ঝড় তুলে ‘আস্থার প্রতীক’ হয়ে উঠেছেন তাসকিন। এ যেন বদলে যাওয়া তাসকিন।

করোনাকালে সব ক্রিকেটার যখন ঘরবন্ধী, তখন তাসকিন তার বাড়ির গ্যারেজ, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের বালির মাঠ, বাড়ির সিঁড়ি, ধানমন্ডি ৪ নম্বর মাঠে অনুশীলন করে ফিটনেস ঠিক করেছেন। পাঁচ বছর পর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফিরেন। দীর্ঘ বিরতির চাপ সামলে নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে না পারলেও নিউজিল্যান্ডে আলো ছড়ান। যদিও তাসমান সাগর পাড়ের দেশটিতে টি-২০ ও ওয়ানডে সিরিজে উইকেট পাননি। কিন্তু আগ্রাসী মেজাজে বোলিং করে প্রশংসা কুড়ান টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক এবং শ্রীলঙ্কা সফরের টিম লিডার খালেদ মাহমুদ সুজনের। তাসকিনের বোলিংয়ে মুগ্ধ মাহমুদ বলেন, ‘সাদা চোখে পারফরম্যান্স হয়তো ভালো নয় তাসকিনের কিন্তু আমি ভীষণ মুগ্ধ তার বোলিংয়ে। কি আগ্রাসী মেজাজ, আক্রমণাত্মক ভঙ্গী। একজন পেস বোলারের যা যা দরকার, তার সবটাই রয়েছে তাসকিনের।’

ভুল বলেননি মাহমুদ পাল্লেকেলের মরা উইকেটে ইবাদত, আবু জায়েদ রাহী, সুরঙ্গা লাকমলরা যখন ১২৫-১৩০ কিলোমিটারের বেশি গতি তুলতে পারেননি, সেখানে তাসকিন নিয়মিত ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছেন। যদিও তার পারফরম্যান্স আহামরি নয়। টেস্টের একমাত্র ইনিংসে তার বোলিং স্পেল ৩০-৬-১১২-৩। ৬ টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা তার সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। ৬ টেস্টে উইকেট সংখ্যা মাত্র ১০। সাদা চোখে একজন পেসারের সামর্থ্যরে মাপকাঠি হতে পারে না। কিন্তু পাল্লেকেলেতে ডান হাতি ফাস্ট বোলার তাসকিন যে আক্রমণাত্মক ধারা বজায় রেখে বোলিং করেছেন, এখন নিশ্চিত ২৮ এপ্রিল-২মে দ্বিতীয় টেস্টে সবার নজর থাকবে তাসকিনের ওপর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর