শিরোনাম
বুধবার, ২৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

মুশফিকের বীরত্ব মিরপুরে

সিরিজ জিতে সুপার লিগে শীর্ষে বাংলাদেশ

আসিফ ইকবাল

মুশফিকের বীরত্ব মিরপুরে

ছবি : রোহেত রাজীব

১১৪ বলে তিন অঙ্কের জাদুকরি ইনিংসটি খেলেন চামিরাকে লেগ গ্ল্যান্সে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১২৫ রানের ইনিংসটি খেলেন ১২৭ বলে ১০ চারে

ভারতীয় ক্রিকেটে রাহুল দ্রাবিড়। বাংলাদেশে মুশফিকুর রহিম। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়। খেলেছেন শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলীদের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের সঙ্গে। অবিশ্বাস্য সব ইনিংস খেলে ক্যারিয়ারে বহু জয় উপহার দিয়েছেন দেশকে। কিন্তু তারকাখ্যাতিতে পেছনে ফেলতে পারেননি টেন্ডুলকার কিংবা গাঙ্গুলীকে। দুই তারকার পেছনে পেছনেই হেঁটেছেন গোটা ক্যারিয়ারে। ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ বলা হলেও দ্রাবিড় ছিলেন দেশটির ক্রিকেটের ‘আনসাং হিরো’। দ্রাবিড়ের মতো মুশফিকও চাপের মুখে লড়াইয়ের জন্য সতীর্থদের কাছে কখনো ‘মি. ওয়াল’, কখনো ‘মি. ডিপেন্ডেবল’। ছোটখাটো গড়নের মুশফিক তার ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন

সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। অসাধারণ সব ইনিংস খেলার পরও এসব তারকা ক্রিকেটারের ছায়া হয়েই ছিলেন এবং আছেন। সেজন্যই তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘আনসাং হিরো’।

১২৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে গতকালই প্রথম সবাইকে ছাপিয়ে আলোচনার মূলে ছিলেন মুশফিক। তারপরও সাইফুদ্দিনের ইনজ্যুরি, ‘কনকাশন’ ক্রিকেটার তাসকিন, সাকিবের ১১তম শূন্য এবং দুই দুবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ- এসব সিক্যুয়াল কিছুটা হলেও মুশফিকের সঙ্গে ম্যাচের আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে।

২০১৮ সালে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৪ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। ১৩৭ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দিন শেষে সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন তামিম ভাঙা হাতে ব্যাটিং করে। প্রায় আড়াই বছর আগে মুশফিক যে দৃঢ়তা নিয়ে ব্যাটিং করেছিলেন দুবাইয়ে, গতকাল সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একই সমান মানসিকতা নিয়ে খেলেন ১২৫ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। ২২৬ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪৬ রান। ১১৪ বলে তিন অঙ্কের জাদুকরি ইনিংসটি খেলেন চামিরাকে লেগ গ্ল্যান্সে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১২৫ রানের ইনিংসটি খেলেন ১২৭ বলে ১০ চারে।

সেঞ্চুরির ইনিংসটি খেলেন সাবেক অধিনায়ক দলের চাপের মুখে। ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দল যখন কোণঠাসা, তখন মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৮৭ রান। প্রথম ম্যাচেও এই জুটি ত্রাণকর্তা হয়েছিল। পঞ্চম জুটিতে যোগ করেছিলেন ১০৭ রান। ওই ম্যাচেও মুশফিক খেলেছিলেন ৮৪ রানের লড়াকু ইনিংস। সামান্য ভুলে সেদিন সেঞ্চুরির দেখা পাননি। অহেতুক রিভার্স সুইপ খেলে আউট হয়েছিলেন। গতকাল কোনো ভুল করেননি। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলে দলের স্কোর গড়েছেন এবং একই সঙ্গে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখে নিয়েছেন।

গতকাল সেঞ্চুরি করে মুশফিক এখন ওয়ানডে ক্রিকেটে টাইগারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সেঞ্চুরি করে পেছনে ফেলেন সাকিবকে। ২২৬ ম্যাচের ২১২ ইনিংসে মুশফিকের রান ৬৫৫৩।

সর্বশেষ খবর