স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি করেছে বাংলাদেশ। যেখানে ফুটবল এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে কিনা জাতীয় দলের প্রস্তুতি নিয়ে ফুটবলারদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ ফুটবলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে। পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে যারা স্বাধীনতার দেড় বছরের মধ্যে জাতীয় দল গড়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক ঘটিয়েছে। সাংগঠনিক দক্ষতার কারণেই বাফুফে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছিল। কিন্তু এই দক্ষতা ধরে রাখা গেল না কেন? স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি করেছে বাংলাদেশ। যেখানে ফুটবল এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে কিনা জাতীয় দলের প্রস্তুতি নিয়ে ফুটবলারদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রস্তুতি নিয়ে যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাতে ফুটবলের দৈন্য দশাটা ফুটে উঠেছে। জামাল কৌশলগত কারণে বাফুফে বা কোনো কর্মকর্তার নাম উচ্চারণ করেননি। কিন্তু কারোর আর বুঝতে বাকি নেই জামাল তীরটা কোনদিকে ছুঁড়েছেন।
বাফুফে জামালের এ কথায় যে ক্ষুব্ধ তা গতকাল সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কিন্তু জামাল যা বলেছেন তা পুরোপুরি সত্য। বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব বা কোনো আসরে বাংলাদেশ অংশ নিলে আমরা দেখতে পাই সংক্ষিপ্ত অনুশীলন করেই খেলতে নামে। জাতীয় দলকে ঘিরে মূলত কোনো পরিকল্পনারই দেখা মেলেনি। অবশ্য এটি নতুন নয়, ৫০ বছর ধরে একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে কর্মকর্তারা এ কাজটি কেন করতে পারছেন না? বিভিন্ন ক্লাব থেকে ফুটবলার ডেকে ক্যাম্প করে চূড়ান্ত দল গড়াটাই কি জাতীয় দলের জন্য সব হয়ে গেল। জামালের ক্ষোভটা তো এখানেই। অন্যরা পারলে আমরা কেন পারব না।আসলে জামাল নীরবই বা থাকে কীভাবে? বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরে খেলবে। অথচ এখানে বাফুফের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে দল পাঠানোটাই মূল দায়িত্ব। বাংলাদেশের প্রস্তুতি ম্যাচ না খেললেও দুই প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও ওমান ঠিকই খেলছে। এরই মধ্যে একদল থাইল্যান্ড, আরেক দল ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে ভারত না খেললেও তারা অনেক আগেই কাতারে পৌঁছে সেখানে অনুশীলন করছে।
যাক আজ শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে জাতীয় দলের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ বিদেশি দল হলে ভুল-ত্রুটি ভালোমতো শোধরানো যেত। ফুটবলার রহমত মিয়া যখন গতকাল মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছিলেন তারও কণ্ঠে হতাশা। অতীতে হয়নি ভালো কথা কিন্তু এখন কি পরিকল্পনা করে এগুনো যায় না। হারলেই ফুটবলার ও কোচের দোষ দেওয়া হয়। কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা ও অপরিকল্পনায় বন্দী থাকায় ফুটবল হতাশার বৃত্তেই আটকে আছে তাতো কেউ বলে না।