মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ম্যারাডোনার শহরে মেসি বন্দনা

ক্রীড়া ডেস্ক

ম্যারাডোনার শহরে মেসি বন্দনা

ফুটবলীয় যে কোনো উৎসবে আর্জেন্টিনার মানুষ প্রথমে স্মরণ করে দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। শনিবার কোপা আমেরিকা ফাইনালের আগে ও পরে যেমনটা করল। বুয়েন্স আয়ার্সের সান আন্দ্রেসে অবস্থিত ম্যারাডোনার বাড়ির সামনে ম্যাচের আগেই প্রার্থনা করতে ছুটে যায় আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। কোপা আমেরিকা জয়ের পর তারা ছুট দেয় প্লাজা দি রিপাবলিকার দিকে। এটাই আর্জেন্টাইনদের উৎসবের স্থান। এবার আর্জেন্টাইনদের উৎসবে কেবল ম্যারাডোনা নয়, তাদের সঙ্গে থাকলেন লিওনেল মেসিও। কোপা আমেরিকাজয়ী তারকার ছবি আঁকা মুখোশ পড়েছেন সমর্থকরা। এক হাতে জাতীয় পতাকা ও অন্য হাতে নিয়েছেন প্ল্যাকার্ড। ম্যারাডোনার মতোই সেসব প্ল্যাকার্ড-ব্যানার-ফেস্টুনে শোভা পেয়েছে মেসির ছবি। চোখে আনন্দাশ্রু ও মুখে হাসি নিয়ে ‘মেসি, মেসি’ চিৎকারে চারপাশ কাঁপিয়ে রেখেছে তারা সারা রাত।

অথচ এক সময় লিওনেল মেসির প্রতি ভয়ঙ্কর রকমের ক্ষোভ ছিল আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। ২০১৭ সালে দেশটির রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে অবস্থিত মেসির মূর্তি ভাঙচুর করে তারা। এর আগেও এমন কাজ কম করেনি তারা দেশজুড়ে। সমালোচনার তীক্ষè তীর প্রতিনিয়তই ছুটে আসত মেসির দিকে। সেই মেসিই অবশেষে দীর্ঘ ২৮ বছরের শিরোপা খরা ঘুচালেন। আর্জেন্টিনাকে উপহার দিলেন আন্তর্জাতিক ট্রফি। তাও মারাকানার মতো স্টেডিয়ামে ব্রাজিলকে হারিয়ে। এজন্যই ম্যারাডোনার শহরে লিওনেল মেসির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলো সবাই। ম্যারাডোনার মতোই আর্জেন্টাইনদের কাছে মেসিও এখন মর্যাদার আসনে সমাসীন। কারণ, তিনি এক দীর্ঘ অন্ধকার রাতের সমাপ্তি টেনেছেন। যে রাতের সমাপ্তি টানতে চারবার কোপা আমেরিকা (২০০৪, ২০০৭, ২০১৫ ও ২০১৬) ও একবার বিশ্বকাপ (২০১৪) ফাইনাল খেলেও সফল হয়নি আলবেসিলেস্তরা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ট্রফি জিতে দেশটিকে যেন শাপমুক্তিই দিলেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার যে কোনো ফুটবল ম্যাচে সমর্থকরা সুর করে ‘ম্যা-রা-ডো-না’ সংগীত গাইত। স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে সেই সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে পড়ত সবখানে। পৃথিবীর নানান দেশে ছড়িয়ে থাকা আর্জেন্টাইন সমর্থকদের অন্তরে অন্তরে। এবার ম্যারাডোনা সংগীতে যোগ হলো লিওনেল মেসির নামও। ফুটবলের তীর্থ স্থানে সান আন্দ্রেসের মতোই যোগ হবে লিওনেল মেসির শহর রোসারিওর নাম।

সর্বশেষ খবর