শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

‘ডাক্তার বলেছেন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে’

ক্রীড়া প্রতিবেদক

‘ডাক্তার বলেছেন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে’
আমরা এজিএমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১ সেপ্টেম্বর বোর্ড সভায় নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। খুব দ্রুতই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করব। 
----------- নাজমুল হাসান পাপন, বিসিবি সভাপতি 

 

বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) হৈ হট্টোগোল হবে, এটাই ছিল এক সময়কার সাধারণ নিয়ম। বিসিবির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাধান করতেন কাউন্সিলররা। কিন্তু সময়ের চোরাস্রোতে পাল্টে গেছে সবকিছু। এখন এজিএম হয়, কিন্তু কাউন্সিলররা আর প্রশ্ন তুলেন না। দামি দামি উপহার পেয়ে খুশি মনে ফিরে যান বাড়ি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গতকাল একটি তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বহুল আলোচিত বার্ষিক সাধারণ সভা। ১৬৬ কাউন্সিলরের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১২৬ জন। অনেকেই বক্তব্য রেখেছেন। অনেক সমস্যার কথা বলেছেন। কিন্তু বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বোর্ডের কার্যক্রমের প্রশংসাই করেছেন বেশি। তবে দিন শেষে চমক সৃষ্টি করেছেন বিসিবি সভাপতি স্বয়ং। উপস্থিত সবাইকে তিনি চমকে দিয়েছেন, তৃতীয়বারের মতো বিসিবি সভাপতি হতে আগ্রহী নন বলে জানিয়ে। কেন আগ্রহী নন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। শারীরিক ও মানসিক ধকল কমাতে চিকিৎসকরা তাকে ক্রিকেট থেকে যত দ্রুত সম্ভব দূরে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলেন বিসিবি সভাপতি, ‘ডাক্তারের পক্ষ থেকে আমাকে বারবার বলা হয়েছে, ক্রিকেট থেকে যত দ্রুত সম্ভব সরে যেতে। অন্তত বোর্ডে থাকলেও যেন সব বিষয়ে নিজেকে সম্পৃক্ত না করি।’

২০১৭ সালে সর্বশেষ এজিএম হয়েছিল বিসিবির। প্রতি বছর এজিএম হওয়ার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য গত দুই বছরে হতে পারেননি। গতকাল আয়োজন করা হয়েছে। এজিএম হলেও বিসিবির পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। ১ সেপ্টেম্বর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে জানান বিসিবি সভাপতি, ‘আমরা এজিএমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১ সেপ্টেম্বর বোর্ড সভায় নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। খুব দ্রুতই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করব।’ তবে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় অক্টোবরের মধ্যে যেকোনো সময়। নাজমুল হাসান পাপন বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ২০১২ সাল থেকে। সরকারের মনোনয়নে তিনি দায়িত্ব নেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। ২০১৭ সালে ফের পুনরায় নির্বাচিত হন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।

গতকালের সাধারণ সভায়, বিসিবি সভাপতি বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি জানিয়েছেন প্রয়োজনে দুটি জাতীয় দল গঠন করা হবে, ‘আমাদের দুটি জাতীয় দল একসঙ্গে খেলবে, এমন সময়ের বেশি দেরি নাই। নভেম্বরে পাকিস্তানের আসার কথা। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড সিরিজও আছে। সুতরাং সেখানে হতেই পারে এমন কিছু।’ টি-২০ বিশ্বকাপের পর আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে ২ টেস্ট ও ৩ টি-২০ খেলতে পাকিস্তান আসবে বাংলাদেশে। সিরিজটি শেষ হতেই ডিসেম্বরে ২ টেস্ট খেলতে আসার কথা শ্রীলঙ্কার। এরপর ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ২ টেস্ট, ৩ টি-২০ খেলতে নিউজিল্যান্ড যাবে টাইগাররা। ক্রিকেটারদের মানসিক ধকল কাটাতেই বিসিবি এমনটি ভাবছে।

গতকালের সভায় কাউন্সিলরদের সম্মতিক্রমে তিন বছরের আর্থিক বিবরণীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটও অনুমোদন করা হয়। গত ৩ অর্থবছরে বিসিবি খরচ করেছে ৬৯২ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৪৮০ টাকা। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, দেশের আটটি বিভাগ ছাড়াও বিভিন্ন জেলাগুলোতে নিজস্ব ক্রিকেট মাঠ তৈরি করবে। এছাড়া যে সব জেলায় ক্রিকেট লিগ অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে ২ লাখ টাকার পরিবর্তে বেশি অর্থ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর সংগঠক ফোরাম ১০ লাখ টাকা করে দাবি করেছে।

সর্বশেষ খবর