সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রেকর্ডের দিনে হতাশার হার

আসিফ ইকবাল

রেকর্ডের দিনে হতাশার হার

বিজয়ী প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে মাঠ ছাড়ছেন মুশফিকুর রহিম -রোহেত রাজীব

সময়ের হিসেবে ১৪ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সৃজনশীল ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ এখন দেশের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটারদের একজন। সফল অধিনায়কও। গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয়টি ছিল টাইগার টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর জন্য বিশেষ কিছু। ক্যারিয়ারের ১০০টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন গতকাল। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই বিরল রেকর্ডটি গড়েছেন। টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে তার আগে আরও সাত ক্রিকেটার শয়ের ওপর ম্যাচ খেলেছেন। সবেচেয়ে বেশি ১১৬ ম্যাচ খেলেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক। পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের তৃতীয়টি শততম ম্যাচ হলেও ব্যাট হাতে রাঙাতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ। হতাশার হারে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। আসলে গোটা দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচটি হেরে গেছে। এখন সিরিজ জয়ের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৭ উইকেটে ও দ্বিতীয়টি ৪ রানে জিতেছিল টাইগাররা। গতকাল ৫২ রানে জিতে সিরিজের ব্যবধান ১-২ করেছেন টম ল্যাথামের নিউজিল্যান্ড।    

২০০৭ সালের প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে কেনিয়ার নাইরোবিতে চার জাতির টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। অভিষেক হয়েছিল মাহমুদুল্লাহর। ২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর কেনিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয়ী ম্যাচে তার সঙ্গে অভিষেক হয়েছিল মোহাম্মদ আশরাফুল, অলক কাপালি, তামিম ইকবাল, নাজিমুদ্দিন ও সৈয়দ রাসেলের। অভিষিক্ত ছয় ক্রিকেটারের মধ্যে মাহমুদুল্লাহ ছাড়া শুধুমাত্র তামিম এখনো খেলছেন। অভিষেক ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ ৮ বলে ২ রান করেছিলেন মাত্র। গতকাল টস হেরেছেন। ম্যাচ হেরেছেন। ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাট হাতে। ৩ রান করেছেন। বোলিংয়ে ২ ওভারে ১০ রানের খরচে নেন ১ উইকেট। ক্যাচ নিয়েছেন একটি।

তার রেকর্ডর ম্যাচে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৯.৪ ওভারে মাত্র ৭৬ রানে। যা নিজেদের টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। চলতি বছরের ১ এপ্রিল অকল্যান্ডেও টাইগাররা ৯.৩ ওভারে ৭৬ রানে অলআউট হয়েছিল। টাইগারদের সর্বনিম্ন স্কোরও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে কলকাতায় ৭০ রানে। আশ্চর্য হলেও সত্যি, শয়ের নিচে বাংলাদেশের যে ৮টি স্কোর রয়েছে, তার সর্বনিম্ন চারটির প্রতিপক্ষই নিউজিল্যান্ড।

২০০৭ সালে অভিষেক। টাইগারদের অধিনায়ক হিসেবে তার অভিষেক ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফিতে। সাকিব আল হাসানের ইনজুরিতে তিনি তিন জাতির টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গতকাল পর্যন্ত দেশকে ২৫ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জয় উপহার দিয়েছেন ১২টি। ২৮ ম্যাচে ১০ জয়ে নিয়ে দুয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজা। সতীর্থ সাকিবের সাফল্য ২১ ম্যাচে ৭ জয় এবং মুশফিকের ২৩ ম্যাচে ৮ জয়। ১০০ ম্যাচের ৯২ ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ২০টি। রান করেছেন ১১৯.৮১ স্ট্রাইকরেটে ১৭০৫। সেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ ৬৪* এবং হাফসেঞ্চুরি ৫টি।  বাউন্ডারি মেরেছেন ১৩৬টি এবং ছক্কা ৫১টি।

মাহমুদুল্লাহ রেকর্ড গড়ার ম্যাচটি আবার বাংলাদেশের ১১০ নম্বর। টাইগার অধিনায়ক শুধু ১০ ম্যাচ খেলেননি। বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা ৫৫ ম্যাচ খেলে রেকর্র্ড গড়েছেন। টানা ৬৬ ম্যাচে তিনি শূন্য করেননি। অনেকগুলো রেকর্ড হলেও ম্যাচটি জিততে পারেননি দিন শেষে। তার সঙ্গে আরও একটি রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিবকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। গতকাল তিনি ছিলেন উইকেটশূন্য। তাই তার টি-২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রেকর্ডধারী  মালিঙ্গার পাশে নাম লেখানো হয়নি।

সর্বশেষ খবর