শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

জয়ে হোক জামালদের যাত্রা

জয়ে হোক জামালদের যাত্রা

সাফ ফুটবলে সর্বোচ্চ ম্যাচে অংশ নেওয়ার রেকর্ড আছে আমার। তাই টুর্নামেন্টটি ঘিরে আমার অভিজ্ঞতা কম নয়। ১৯৯৫ সালে সার্ক নামেই তো দক্ষিণ এশিয়ার সেরা এ আসরের যাত্রা। ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৫, ২০০৭, ২০০৯, ২০১১ ও ২০১৩ টানা আটটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলি। বলতে দ্বিধা নেই সফলতার চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি। আবার নিজেকে সৌভাগ্যবানও দাবি করতে পারি, বাংলাদেশ একবার সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেই দলের সদস্য ছিলাম আমি। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ বরাবরই ফেবারিট থাকে। শিরোপা জেতার সামর্থ্যও রয়েছে। তারপরও মাত্র ১ বার চ্যাম্পিয়ন ও দুবার রানার্স আপ হয়েছে। অবস্থা এখন এতটা সংকটাপন্ন যে গত চার আসরে বাংলাদেশ গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। সেমিফাইনাল খেলাটাই স্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

অতীত কখনো ভোলা যায় না। আনন্দ বা বেদনা মনের ভিতর নাড়া দেবেই। তারপরও বলবো সবভুলে গিয়ে এবার জ্বলে উঠতেই হবে। আজই মালদ্বীপে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর্দা উঠছে। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়বে। পাঁচ দেশকে নিয়ে টুর্নামেন্ট বলেই এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনাল নেই। রাউন্ড রবিন লিগে প্রতিটি দেশ সবার সঙ্গে খেলবে। এরপর ১৬ অক্টোবর পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ দুই দল ফাইনাল খেলবে।

নতুন ফরম্যাটে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হচ্ছে। ফুটবলার হলেও আমি এ খেলার বিশেষজ্ঞ নই। তবুও আমার কাছে মনে হয় এ এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। বলা হচ্ছে বাংলাদেশের মূল প্রতিদ্ব›দ্বী নেপাল ও মালদ্বীপ। তার মানে কি আমরা ধরে নিচ্ছি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতব আর ভারতের কাছে হারব। আর দুই ম্যাচে একটা জয় বা ড্র করব। আসলে এত হিসাব-নিকাশ করে খেলা তো যায় না। ফাইনালের জন্য প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল। শ্রীলঙ্কা ছাড়া বাকি তিন দেশ ফিফা র‌্যাঙ্কিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। এই এগিয়ে মানে কি আমরা শ্রীলঙ্কাকে হারাবোই। বিষয়টি এত সহজ নয়। আমি বলব প্রথম ম্যাচই বাংলাদেশের কাছে ফাইনাল। কেন বলছি এর ব্যাখ্যাও আছে। ৪ অক্টোবর বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। টানা দুই ম্যাচে পয়েন্ট হারানো মানে ফাইনালের পথ অনেকটা অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া।

ফাইনালের পথে হাঁটতে হলে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাতেই হবে। কারণ শুরুটা জয়ে হলে আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে যাবে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আত্মবিশ্বাসটা বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি। লক্ষ্য করলে দেখবেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা মাঠে এতটা স্নায়ুচাপে থাকে যে মনে হয় ম্যাচের আগেই হেরে গেছে। এবারও শক্তির বিচারে বাংলাদেশের সাফ জেতার সামর্থ্য রয়েছে। চাপটাকে সামাল দিয়ে স্বাভাবিক খেলা খেলতে হবে। আমি অস্কার ব্রুজোনকে ধন্যবাদ জানাই তিনি সাফে কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন। সাত দিনও তো তিনি দলকে প্রশিক্ষণ দিতে পারেননি। তবুও বলব অস্কারই পারেন বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করতে। তিনি বসুন্ধরা কিংসকে দীর্ঘ সময় ধরে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। নিজের এবং প্রতিপক্ষের সব খেলোয়াড়ই তাঁর চেনা ও জানা। এরাইতো সাফে লড়বেন।

অস্কার প্রফেশনাল বলেই তারই সহকারীদের কাজে লাগাচ্ছেন। তিনি কিন্তু বড় কোনো প্রত্যাশা দিয়ে যাননি। বলেছেন তাঁর হাতে আলাদ্বীনের চেরাগ নেই। ছেলেদের সেরাটা দিতে হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ টার্গেট করে এগুতে হবে। মিশনটা কঠিন তবুও আমার বিশ্বাস অস্কার আছেন বলেই এবার হতাশার দৃশ্যটা পাল্টাতে পারে। কোচের ওপর আস্থা রয়েছে। এখন তাঁর শিষ্যরা সেরাটা দিতে পারেলেই ভয়কে জয় করা সম্ভব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর