শুক্রবার, ৮ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

জটিল সমীকরণে বাংলাদেশ

জটিল সমীকরণে বাংলাদেশ

৯০ মিনিটের খেলা ফুটবল। কিন্তু বাংলাদেশ-মালদ্বীপ লড়াইটা শুরু হয়েছিল ম্যাচের দুই দিন আগে। টিকিট কেনা নিয়ে বেশ উত্তেজনা ছড়ায় দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে। বাংলাদেশি সমর্থকরা উপায়ান্তর না দেখে ব্ল্যাক মার্কেট থেকে টিকিট কেনেন। কিন্তু এ টিকিট নিয়ে মাঠে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মাঠে প্রবেশের সুযোগ পেলেন কয়েক শ বাংলাদেশি সমর্থক।

ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা দু-এক আগেই মাঠে প্রবেশ করে লড়াইয়ে মেতে ওঠেন দুই দলের সমর্থকরা। কিন্তু মালদ্বীপের হাজার হাজার দর্শকের বিপরীতে কয়েক শ বাংলাদেশি সমর্থক মহাসমুদ্রের সুবিশাল তরঙ্গমালার বিপরীতে এক ছোট্ট নদীর স্রোতের মতোই হারিয়ে যায়। মাঠের লড়াইয়েও ছিল একই চিত্র। বন্যার মতো ধেয়ে আসা আক্রমণ সামলাতে ব্যর্থ হন তপু বর্মণরা। দুটি গোল হজম করে মাঠ ছাড়েন ২-০ ব্যবধানের পরাজয় নিয়ে। মালদ্বীপের কাছে পরাজিত হওয়ায় ফাইনাল খেলার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল বাংলাদেশের।

ম্যাচের শুরু থেকেই হামজা, আলি ফাসির আর আলি আশফাকদের আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশ। ৫৬তম মিনিটে কর্নার কিক থেকে বল মাঝমাঠ হয়ে বাংলাদেশের ডি বক্সে ফিরে আসে। ডি বক্সের ভিতর থেকে বাইসাইকেল কিকে দারুণ এক গোল করেন হামজা মোহাম্মদ। মালদ্বীপের দর্শকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। অনেকেই গ্যালারির ব্যারিকেড ভেঙে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে ফুটবলারদের সঙ্গে গোল উৎসবে যোগ দেন। এরপর ৭৪তম মিনিটে আলি আশফাক পেনাল্টি থেকে গোল করলে ম্যাচটা সেখানেই শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশ কয়েকবার আক্রমণে উঠলেও সুবিধা করতে পারেনি। অস্কার ব্রুজোন মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে সব মিত্রতা ভুলে যেতে চেয়েছিলেন। কেবল কোচই নন, ফুটবলাররাও তা ভুলে যান। উত্তেজনাপূর্ণ এ ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রেফারিকে পাঁচটি হলুদ কার্ড দেখাতে হয়েছে। দুই দলের মিলিত ফাউলের সংখ্যা ছিল ৩৭। এর ৩০টিই করেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা!

এ পরাজয়ে ১৬ বছর পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনাল খেলা এখন জটিল সমীকরণে আটকে গেল। সামনের ম্যাচে নেপালকে হারালেই চলবে না বাংলাদেশের। ভারতকে জিততে হবে নেপাল ও মালদ্বীপের বিপক্ষে। তা হলেই ফাইনালে দেখা হবে বাংলাদেশ-ভারতের। কিন্তু এত কিছু আশা করা কঠিন। বিশেষ করে গতকালের ঘটনার পর। গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে ভারতকে রুখে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

‘হু, হু, হু, শ্রী-ল-ঙ্কা’। কয়েক শ লঙ্কান সমর্থকের সমস্বরে এমন চিৎকারের মধ্য দিয়েই ম্যাচটা শেষ হয়। গোলশূন্য (০-০) ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে শ্রীলঙ্কা ও ভারত।

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ২০৫ নম্বরে থাকা লঙ্কানদের কাছে এ ড্র ছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের মতোই মহাব্যাপার। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর অন্তত ১৫ মিনিট সমর্থক ও ফুটবলাররা সমস্বরে লঙ্কান ভাষায় গান গাইলেন। সে গানের অর্থ- ‘সিংহলিজ, তামিল, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান আমরা সবাই এক জাতি’।

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র করা ভারতের পক্ষে নেপাল ও মালদ্বীপের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ জেতা কঠিন বটে। যদিও ভারতের কোচ ইগর স্টিমাচ বলেছেন, ‘পরের দুই ম্যাচ জিতেই ফাইনাল খেলতে চাই আমরা।’ এমনটা হলে বাংলাদেশের জন্য সুবিধাই হবে। সে ক্ষেত্রে কেবল নেপালের বিপক্ষে জিতলেই ফাইনাল খেলার আশা পূরণ হবে অস্কার ব্রুজোনের দলের। কিন্তু মালদ্বীপের কাছে পরাজয়ের পর নেপাল ম্যাচ নিয়েও তো এখন দুশ্চিন্তা কম নয়!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর