সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মালদ্বীপের ম্যারাডোনা

মালদ্বীপের ম্যারাডোনা

আর্জেন্টাইনরা এখনো যে কোনো ফুটবল ম্যাচেই গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে সুর করে ‘ম্যা-রা-ডো-না, ম্যা-রা-ডো-না’ গান গায়। আর কোনো শব্দ নয়, কেবলই ম্যারাডোনা। মালদ্বীপের দর্শকরাও সমস্বরে কোরাস গায় ‘আশফাক, আশফাক’। দ্রুততালে এই কোরাস গাওয়ার সময় চারপাশে আর কোনো কোলাহল থাকে না। গ্যালারির সীমানা পেরিয়ে ছোট্ট দ্বীপ মালের সবখানে গুঞ্জরিত হয় আশফাকের নাম। মালদ্বীপবাসীর কাছে আশরাফ ম্যারোডানা বলেই পরিচিত। বাংলাদেশের মানুষ ফুটবল নিয়ে দারুণ উত্তেজনায় ভোগে। বিশেষ করে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। কিন্তু নিজ দেশের ফুটবল নিয়ে কোনো উন্মাদনা নেই। কেবল বাংলাদেশ কেন, মালদ্বীপের মতো ফুটবলীয় উন্মাদনা সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আর কোথাও নেই। বাদ্যের তালে তালে তারা নেচে উঠে। গলা ফাঁটিয়ে গান ধরে। কখনো কখনো মনে হয় বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ হচ্ছে বোধহয়! ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের সমর্থকদের মতোই মালদ্বীপের মানুষ একতালে ফুটবলীয় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। মালদ্বীপের এই ফুটবল প্রীতির কারণ কী!

শত শত দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে মালদ্বীপ। ফুটবল খেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো মাঠের দরকার নেই তাদের। সমুদ্রের তীরে ফুটবল নিয়ে মেতে উঠে তারা যখন-তখন। তারপর খেলা শেষে সমুদ্রের নোনাজলে সাঁতার দিয়ে এখানে-সেখানে লেগে থাকা ব্যথা দূর করে। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই তারা ফুটবল শিখেছে। ঝকঝকে-তকতকে মাঠ খুব বেশি নেই এখানে। আছে আলি আশফাকের মতো ফুটবলারের কাছ থেকে পাওয়া অফুরন্ত অনুপ্রেরণা। মালদ্বীপের ছেলেরা কৈশোরে ফুটবল পায়ে নিয়েই ভাবে, একদিন আলি আশফাকের মতো হতে হবে আমাকে। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া প্রতিটা ফুটবলারই নিজেকে আশফাকের মানদে  পরিমাপ করে। ম্যারাডোনা যেমন আর্জেন্টিনাকে একটা মানদ  দিয়েছিলেন আশফাকও দিয়েছেন মালদ্বীপকে।

আলি আশফাকের শুরুটা হয়েছিল ১৬ বছর বয়সে। স্কুল পড়ুয়া আশফাক ভ্যালেন্সিয়া দলে যোগ দেন। এরও আগে থেকেই নাকি তার ফুটবল প্রতিভার কথা সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। ১৪ বছর বয়সেই তিনি অনূর্ধ্ব-১৮ দলে খেলার সুযোগ পান সেই প্রতিভার জোরে। ক্যারিয়ারের সূচনা হওয়ার পর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৪ সালে জাতীয় দলে স্থান পান আশফাক। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেন ২০০৮ সালে। জাতীয় দলের জার্সিতে ৮৩ ম্যাচ খেলে ৫৪ গোল করেছেন তিনি। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে করেছেন ২২ গোল। দলগতভাবে ১১টি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ গোল করেছে ৪৩টি! ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে সাড়ে চারশর বেশি গোল করেছেন আশফাক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর