মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

তামিমের চেয়ে বড় ওপেনার নেই

মেজবাহ্ উল হক, মাস্কাট থেকে

সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দল যখন অনুশীলনের জন্য আল আমিরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তখন মিডিয়াকর্মীরা অপেক্ষমাণ স্টেডিয়াম থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে শেরাটন হোটেলে। বাংলাদেশ দলের বিপর্যয় নিয়ে কথা বলবেন, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কথা বললেনও। ভারাক্রান্ত মনে জানালেন, স্কটিশদের বিরুদ্ধে হারটা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। এমন হারের কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং কিছুই ভালো লাগেনি তার। তারপরও গতকাল দুপুরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন, সান্ত্বনা দিয়েছেন। নাজমুল হাসান মনে করেন, ওপেনিং ব্যর্থতার জন্যই কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়েও। ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারানোর স্কটল্যান্ডের মতো দল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৪০ রান করে কীভাবে?

টি-২০তে জয়ের জন্য বড় ভূমিকা রাখে পাওয়ার প্লে। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাওয়ার প্লেতে খুবই বাজে করেছিল টাইগাররা। এজন্য তামিমের অভাববোধ করছেন নাজমুল হাসান, ‘দলে এখন যত ওপেনারই খেলুক না কেন, তামিমের চেয়ে ভালো ওপেনার একটাও নেই।’ তবে তামিম যে অভিমান করে এবারের বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন সে কথাও জানেন। কিন্তু বিষয়টি মানতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দল কোনো অভিমানের জায়গা নয়। অভিমান করে খেলব না এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

এদিকে স্কটল্যান্ডের হারার পর বাংলাদেশ দল যেন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এমন হারে ক্রিকেটার নিজেরাই রীতিমতো অবাক। তবে আজ ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য যে তারা মুখিয়ে আছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্কটল্যান্ড ম্যাচে হারের কারণ হিসেবে কেবলমাত্র খেলোয়াড়রাই দায়ী নয়। একজন বোর্ড পরিচালক তো সরাসরি কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে দায়ী করছেন। টানা ১৬ টি-২০ খেলানোর পরও কেন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে কেন হঠাৎ করে নিয়মিত ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে বাদ দেওয়া হলো একাদশ থেকে? তবে আজ তাকে একাদশে রাখা হচ্ছে।

পেসার শরিফুলকেই বা কেন বাদ দেওয়া হলো? এই দুটি পরিবর্তন এবং দলের ভিতরের আরও অনেক সিদ্ধান্তেই কোচের ওপর নাখোশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা।

তবে এই মুহূর্তে টাইগার কোচ অন্য কিছু নেই ভাবতে চান না। তিনি কেবল খেলার দিকেই নিজেকে ফোকাস রাখতে চান। গতকাল আল আমিরাতের প্রেস কনফারেন্সে রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, ‘ওমান খুবই শক্তিশালী দল। আমরা ওদেরকে নিয়ে স্ট্যাডি করেছি। তবে এটা ঠিক যে, ওমান ছেড়ে কথা বলবে না। তারা চাইবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য। আমাদের ক্রিকেটাররাও জানে, তাদের কি করতে হবে!’ তাহলে কি বাংলাদেশ ওমানকে হারাচ্ছেই? ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমি কোচ হিসেবে কখনো জয়ের গ্যারান্টি দিতে পারি না। তবে এটা বলতে পারি আমার কাজটা আমি সঠিকভাবেই করব। প্রথম ম্যাচে যে ভুল করেছি তা নিয়ে আর পড়ে থাকতে চাই না। আমাকে তাকাতে হবে সামনের দিকে।’

২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপেও প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের গ্রুপে ছিল ওমান। সেবার এই দলটিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিল টাইগাররা। দুর্দান্ত একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবাল। যা কিনা আন্তর্জাতিক টি-২০তে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের সেরা ইনিংস। যদিও গত আসরের ওমান আর এবারের ওমানের মধ্যে অনেক পার্থক্য। বিশ্বকাপের স্বাগতিক দলটি এবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে। তবে বাংলাদেশের জন্য আজকের ম্যাচ ‘ডু অর ডাই’। হারলেই বেজে যাবে বিদায়ঘণ্টা। জিতলে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার দারুণ সুযোগ। কারণ শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনি। এই গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল। তবে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারার পর আর কোনো দলকে দুর্বল ভাবার সুযোগ নেই। অবশ্য পাপুয়া নিউগিনিও এখন প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তার আগে ওমানকে তো হারাতে হবে। অন্যথায় শেষ ম্যাচটি হয়ে যাবে কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিকতার। 

সর্বশেষ খবর