বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ ভয়ংকর এক দল, তবে...

জীবন্ত কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েডের সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশ ভয়ংকর এক দল, তবে...

ক্লাইভ লয়েড -ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম তিন আসরেই (১৯৭৫, ১৯৭৯ ও ১৯৮৩) ফাইনাল খেলেছে ক্যারিবীয়রা। প্রথম দুই আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন তিনি। ১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৫ বলে ১০২ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসটি এখনো সেরা।

টেস্টেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা অধিনায়কদের একজন তিনি। সেই ক্লাইভ লয়েড বয়সের ভারে খানিকটা ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। ক্যারিবীয় এই কিংবদন্তি ইতিমধ্যে ৭৭টি বসন্ত পার করেছেন।

গতকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ- দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগে দেখা হয়ে যায় ক্লাইভ লয়েডের সঙ্গে। দুবাইভিত্তিক চ্যানেল-২ গ্রুপের রেডিওতে ‘ক্রিকেট স্পেশালিস্ট’ ধারাভাষ্য দিতে এসেছিলেন। প্রেস বক্সের ডাইনিংয়ে বসেই তিনি কথা বলেন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। প্রথমেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়ে প্রশ্ন করায়, কিছুটা বিরক্তির ভাব ফুটে ওঠে তার মুখোচ্ছবিতে।

 

এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে কতটা আশাবাদী?

লয়েড বলেন, ‘একটা দল যখন ৫৫ রানে (ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে) অলআউট হয়ে যায়, তখন সেই দলকে নিয়ে মানুষ আর কতটা আশাবাদী হতে পারে! তবে দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলেই আমার আত্মবিশ্বাস আছে। তা ছাড়া ফরম্যাটটাও তো টি-২০। সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন।’

টি-২০ ক্রিকেটে তো যে কোনো কিছুই হতে পারে! সেরা দলও হেরে যেতে পারে ছোট দলের বিরুদ্ধে। ২০১৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তো জেতার কথাই ছিল না। কিন্তু শেষ ওভারে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ বের করে ফেলল ক্যারিবীয়রা।

 

সেই আসরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে কারণেই কি আপনি আত্মবিশ্বাসী?

লয়েড বলেন, ‘না, না, ঠিক তা নয়! সত্যিই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ম্যাচে হার নিয়ে আমি খুবই বিব্রতবোধ করছি। হারার তো একটা লেভেল থাকে। তাই বলে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয়ে যাবে। এটা হতে পারে না। কিন্তু আমি জানি, এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামর্থ্য আছে। তারা যেকোনো সময় যেকোনো দলকে হারানোর সক্ষমতা রাখে।’

ভারতীয় দলও তো এই দুবাইয়ে আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১০ উইকেটের ব্যবধানে হারল। বিশ্বকাপে সেটি ছিল ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রথম জয়। বাংলাদেশ দলও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেরে গেছে। আপনি নিজে টি-২০ না খেললেও এখন তো বিশ্বকাপ অনুসরণ করছেন। বিশেষজ্ঞ মতামত দেওয়ার জন্য আপনাকে ক্রিকেট অনুসরণ করতেই হয়।

 

বাংলাদেশকে কেমন দেখছেন?

লয়েড বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশ ভয়ংকর দল। তবে ধারাবাহিকতায় ঘাটতি আছে। একদিন আগেই দুটি দল নিয়ে আমি আলোচনা করছিলাম- তার একটি বাংলাদেশ, আরেকটি শ্রীলঙ্কা। দুই দলেরই দারুণ সম্ভাবনা। হয়তো দ্রুতই তারা অনেক বড় কিছু করে ফেলতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে সিরিজে হারিয়েছে বিশ্বকাপের আগেই। যদিও ম্যাচগুলো দেখা হয়নি। তবে আমি শুনেছি।’

 

এবারে কোন দলকে ফেবারিট মনে হচ্ছে আপনার?

‘আমি এককভাবে কাউকে ফেবারিট বলতে চাই না। তা ছাড়া টি-২০ নিয়ে কিছু বলাও যায় না আগে থেকে। তাই এ ব্যাপারে আমি এখন কোনো মতামত দেব না।’

 

টি-২০তে পাওয়ার প্লেতে ভালো করতে না পারলে বড় স্কোর করা কঠিন হয়ে যায়। আপনিও কি তাই মনে করেন?

‘হ্যাঁ, অবশ্যই। যেকোনো ম্যাচের শুরুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ানডে বা টেস্টে শুরুটা খুব ভালো না হলেও বড় স্কোর করা সম্ভব। কিন্তু টি-২০ আলাদা। টি-২০তে পাওয়ার প্লেতে ভালো করতেই হবে। শুরুটা ভালো হলে স্কোরটা যেন স্বাভাবিকভাবেই বড় হয়ে যায়। যদিও স্লগ ওভারের একটা বড় ভূমিকা আছে।’

 

টি-২০ ক্রিকেটে সফল হওয়ার পেছনে ক্যারিশম্যাটিক কোনো রহস্য আছে নাকি?

‘কোনো রহস্য নেই। পারফর্ম করার বিকল্প কিছু নেই। টি-২০ ক্রিকেটে অনিশ্চয়তা খুবই বেশি। তবে একজন ক্রিকেটারকে নিজের কাজটা তো ঠিকঠাক করতে হবে। সেক্ষেত্রে সফলও হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।’ আজ আবুধাবিতে সুপার টুয়েলভের দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ফর্মে থাকা দল ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ নিয়ে কোনো প্রশ্নই জিজ্ঞেস করা হয়নি লয়েডকে। অবশ্য আর কোনো সুযোগও ছিল না। কারণ, ততক্ষণে কমেন্ট্রি বক্স থেকে তার ডাক পড়েছে...!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর