রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কারণ বুঝছেন না মাহমুদুল্লাহ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কারণ বুঝছেন না মাহমুদুল্লাহ

পাকিস্তানের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচেও হার বাংলাদেশের। গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটে বড় ব্যবধানে হারের পর মাঠ ছাড়েন টাইগাররা -রোহেত রাজীব

টি-২০ বিশ্বকাপের ক্যাচ মিসের ভুত এখনো কাঁধ থেকে নামেনি মাহমুদুল্লাহ বাহিনীর। দুই মরু রাজ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। প্রথম রাউন্ডে দুই সহযোগী দেশ ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জিতলেও হেরেছে ৬ ম্যাচ। এরমধ্যে সুপার টুয়েলভে টানা পাঁচ হার। এই হারের বৃত্ত ভেঙে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাফল্যের হাসি হাসতে চেয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তরুণদের নিয়ে দল গড়েও হার এড়াতে পারছে না বাংলাদেশ। শুধু কি তাই? টি-২০ বিশ্বকাপের মতো এই সিরিজেও ক্যাচ মিসের মহড়ায় মেতেছে ক্রিকেটাররা। গতকাল লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের দুই দুটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন সাইফ হাসান ও তাসকিন আহমেদ। টি-২০ বিশ্বকাপে টাইগাররা ক্যাচ ছেড়েছিলেন এক দুটি নয়, ৯টি। ক্যাচ মিস ও বাজে ফিল্ডিংয়ের জন্য বিসিবি চুক্তি নবায়ন করেনি ফিল্ডিং কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার রায়ান কুকের। তারপরও ক্যাচ মিসের ভুত কোনোভাবেই নামাতে পারছে না কাঁধ থেকে! যদিও ক্যাচ মিস গতকালের ম্যাচের উপর কোনো প্রভাব ফেলত না। তবে পাকিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হারের ম্যাচে বাজে ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। বিশেষ করে শেষ ৮ ওভারের ব্যাটিং ছিল কচ্ছপ গতির। প্রথম ১২ ওভারে ৭৮ রানের পরের ৮ ওভারে স্কোর কার্ডে যোগ করে মাত্র ৩০ রান।

টস জিতে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৮ রানের বেশি করতে পারেনি টাইগাররা। আগের ম্যাচের মতো ব্যর্থ হয়েছেন দুই ওপেনার। অথচ টি-২০ বিশ্বকাপে নতুন বলে খেলতে ব্যর্থ লিটন দাস বাদ পড়েন চলতি সিরিজে। তার জায়গায় খেলতে নামা সাইফ ব্যর্থ হয়েছেন পুরোপুরি। অভিষেক ম্যাচের পর গতকালও দুই অংকের রান করতে পারেননি তিনি। অভিষেকে ১ রানের পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ০। ব্যর্থ হয়েছেন আরেক ওপেনার নাঈম শেখও। দুই ম্যাচে নাঈমের রান ৩। ৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর নাজমুল হাসান শান্ত ও আফিফ হোসেন ধ্রুব দুজনে ৩৭ বলে ৪৬ রান যোগ করেন। আফিফ ২০ রান করেন ২১ বলে। দলের একমাত্র ছক্কাটি মারেন তিনি। ছক্কা খাওয়ার বিরক্তিতে আফিফের গায়ে বল ছুঁড়ে মারেন আফ্রিদি। দলীয় ৫১ রানে আফিফ ফিরলেও শান্ত ফিরেন ১৩.২ ওভারে। তার আগে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন ৩৪ বলে ৫ চারে। ক্রিজে যতক্ষণ ছিলেন শান্ত, ততোক্ষণ রান হয়েছে। তার বিদায়ের পর খোলশে ঢুকে পড়েন পরের ব্যাটাররা। প্রথম ১২ ওভারে টাইগারদের রান ছিল ৫ উইকেটে ৭৮। এমন অবস্থায় পরের ৮ ওভারে ৬০/৭০ রান হওয়া উচিত ছিল! কিন্তু সেটা করতে পারেননি লেট মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। তাদের ব্যর্থতায় স্কোরবোর্ডে শেষ ৮ ওভারে যোগ হয় মাত্র ৩০ রান! যা টি-২০ ক্রিকেটে বড্ড বেমানান।

টার্গেট মামুলি ১০৯ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে দলীয় ১২ রানে মুস্তাফিজের বলে বোল্ড হন সফরকারী অধিনায়ক বাবর। অধিনায়ককে হারানোর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭৮ বলে ৮৫ রান যোগ করেন মোহাম্মদ  রেজওয়ান ও ম্যাচসেরা ফখর জামান। দুজনেই অবশ্য দুটি সহজ জীবন পান। লেগ স্পিনার আমিনুল বিপ্লবের বলে সুইপ করেন ফখর। ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ মিস করেন সাইফ। হাত ফসকে বল বাউন্ডারি হয়। ম্যাচ সেরা ফখর অপরাজিত থাকেন ৫৭ রানে। ৫১ বলের ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। আমিনুলের বলে রেজওয়ানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন তাসকিন শর্ট ফাইন লেগে। পরে আমিনুলের বলে  রেজওয়ান আউট হন সাইফের হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে রেজওয়ান ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন ৪৫ বলে ৪ চারে। এই ক্যাচ মিসের কারণ কোনোভাবেই খুঁজে পাচ্ছেন না টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। গতকাল হারের পর কণ্ঠে অসহায়ত্ব ফুটে উঠে টাইগার অধিনায়কের, ‘আমি জানি না কেন ছেলেরা ক্যাচ মিস করছেন? ছেলেরা অনুশীলনে অনেক কাজ করছে। নিয়মিত অনেক ক্যাচ নিচ্ছে। অনুশীলনে সম্ভব সব কিছুই করছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ম্যাচে আমরা সুযোগ হাতছাড়া করছি।’

আগামীকাল সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। ওই ম্যাচে ব্যাটারদের আরও দায়িত্বশীল হতে বললেন মাহমুদুল্লাহ, ‘আমাদের মতো দলের জন্য ১৫-১৬ ওভার পর্যন্ত একজন সেট ব্যাটসম্যান ক্রিজে থাকা জরুরি, যেন শেষ কয়েক ওভারে ঝড় তোলা যেতে পারে। আজকে আমরা তা করতে পারিনি।’

সর্বশেষ খবর