বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
ঢাকা টেস্টের প্রস্তুতি

সাকিবে কি দলের ভাগ্য বদলাবে!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাকিবে কি দলের ভাগ্য বদলাবে!

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঘুরে ফিরে সেই একই দৃশ্য। সর্বশেষ দুই টেস্টে পরাজয়ের ধরন একটা একই রকম। প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে স্বপ্নের মৃত্যু।

এর আগের টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তবু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৩৯৫ রানের লিড হওয়ার পর ইনিংস ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। তারপর তো রেকর্ড গড়েই জিতল ক্যারিবীয়রা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে তো টাইগার ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেননি। প্রথম ইনিংসে ৩৩০ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।

তবে দুই টেস্টেই শেষ দিনের উইকেট নিয়ে ভুল বুঝেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যখন একের পর এক আউট হয়ে যাচ্ছিলেন মনে হচ্ছিল যে উইকেটে জু জু আছে। কিন্তু পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যখন বাইশগজে গেলেন তখন মনে হলো ব্যাটিং করার জন্য এর চেয়ে সহজ উইকেট আর হয় না। পাকিস্তানের জন্য ২০২ রানের টার্গেটটা হয়ে গেল সহজতম। মাত্র দুই উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে গেল সফরকারীরা।

বার বার কেন এমন হচ্ছে?

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের কারণ খুবই পরিষ্কার! টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান একদমই ভালো করতে পারেননি। চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম চার ব্যাটসম্যান তাদের আট ইনিংস মিলে করেছেন মাত্র ৬৭ রান। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ যে কতটা দুর্বল তা এখানেই বোঝা যায়। টেস্টের উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের একসঙ্গে এমন বাজে ব্যাটিং করার ঘটনা যেন টেস্টে সত্যিই বিস্ময়কর!

তবে ইতিবাচক অনেক বিষয়ও আছে। টি-২০ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জালে মুড়িয়ে থাকা লিটন দাস দুই ইনিংসেই দারুণ ব্যাটিং করেছেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। মুশফিকুর রহিম প্রথম ইনিংসে একটুর জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসেও দারুণ শুরু করেছিলেন। এ ছাড়া বলার মতো আর স্কোর নেই।

আগামী পরশু মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। সিরিজে সমতা আনতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, জয় তো দূরের কথা ড্র করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে বাংলাদেশের জন্য আশার খবর হচ্ছে, সাকিব আল হাসান ফিরেছেন দলে। কঠোরভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। 

সাকিব দলে থাকলে টিম ম্যানেজমেন্ট স্বস্তিবোধ করেন। কারণ সাকিবের ব্যাটিং যেমন কার্যকরী তেমনি তার দারুণ বোলিং। তা ছাড়া সাকিব থাকলে দলে অন্য ক্রিকেটারদেরও আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।

ইনজুরি থেকে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। কিছু দিন থেকেই বেশ ছন্দে আছেন। দারুণ বোলিংও করছেন। এছাড়া ওপেনারদের ব্যর্থতার জন্য টেস্টে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। হয়তো ওপেন করতেই দেখা যেতে পারে তাকে। কারণ চট্টগ্রামে দুই ওপেনারই ব্যর্থ। এখন নাঈম আসায় ওপেনিং জুটি কতটা ছন্দে ফিরতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়।

তবে সাকিবের ফেরাটাই বড় ঘটনা। কিন্তু এটা তো ঠিক, সবাই মিলে খারাপ করলে এক সাকিব আর কতটা ভালো করতে পারবেন! ক্রিকেট দলীয় খেলা। পারফরম্যান্সে দলীয় সমন্বয় খুবই জরুরি।

এখন দেখা যাক, সাকিবের ফেরায় অন্যরাও উজ্জীবিত হয়ে ভালো করতে পারেন

কিনা, মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের ভাগ্য  বদলায় কিনা!

সর্বশেষ খবর