চট্টগ্রাম টেস্ট গড়ায় পঞ্চম দিনে। উইকেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাবলীল ব্যাটিং করতে পারেননি মুমিনুল হকরা। দুই ইনিংসে ২৮৬ ও ১৫৭ রান করে টাইগাররা হেরেছিল ৮ উইকেটে। পাকিস্তানের বোলিংয়ের বিপক্ষে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম ছাড়া বাকি ব্যাটাররা ব্যস্ত ছিলেন সাজঘরে আসা যাওয়ার লড়াইয়ে। পাকিস্তানের পেসার ও স্বাগতিক স্পিনাররা সাফল্য পেয়েছেন। ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি ছিল সাকল্যে দুটি এবং হাফসেঞ্চুরি ৫টি। টেস্ট ক্রিকেটের বিচারে আহামরি পারফরম্যান্স না হলেও চট্টগ্রামের উইকেটের প্রশংসা করেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। শুধু তাই নয়, মিরপুরেও একই ঘরানার উইকেট চেয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। অথচ মিরপুরের সর্বশেষ টেস্টে পেসারদের চেয়ে স্পিনারদের সাফল্যই ছিল বেশি। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে কোনো ধরনের উইকেটে খেলা হবে, আলোচনার মূলে উইকেট। এই টেস্টে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রামে অভিষিক্ত ইয়াসির রাব্বি গতকাল অনুশীলনের ফাঁকে জানিয়েছেন, সাকিব দলে ফেরায় নিশ্চিত করেই মিরপুর টেস্টে লড়াই হবে। তবে উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে খেলার পরিকল্পনা থাকবে।
চলতি ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে হেরেছিল বাংলাদেশ। উত্তেজনাপূর্ণ টেস্টে আধিপত্য ছিল দুই দলের স্পিনাররা। দুই টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত করেন ক্যারিবীয় ব্যাটারদের। তাইজুল দুই ইনিংসে ৪টি করে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন। এছাড়া মিরাজ ও নাঈম বেশ ভালো বোলিং করেন। তিন স্পিনার একত্রে উইকেট নিয়েছিলেন ১৩টি। ক্যারিবীয় স্পিনার রাহিম কর্নওয়াল দুই ইনিংসে উইকেট নিয়েছিলেন ৫ ও ৪টি করে ৯ উইকেট। ফেব্রুয়ারিতে টেস্টটি খেলেন নি সাকিব। তবে এবার খেলবেন সাকিব। খেলছেন না নাঈম। গত টেস্টেও মতো এবারও তিন স্পিনারকে দেখা যাবে মিরপুর টেস্টে। ৫৮ টেস্টে ২১৫ উইকেট নেওয়া সাকিব ফেরায় দলের বোলিং শক্তি বেড়েছে অনেকগুণ। মিরপুরের উইকেট নিয়ে সে জন্যই ইয়াসির বলেন, ‘আমরা জানি না উইকেট কেমন হবে। উইকেটের আচরণ দেখে আমাদের খেলতে হবে। উইকেট যেমনই হোক, মূল বিষয় হচ্ছে আমাদের যে প্রক্রিয়া আছে সেটা ধরে রাখতে হবে। সবকিছু সাধারণভাবে রেখে উইকেট যে রকম চায় সেভাবে ব্যাটিং করতে হবে।’
মিরপুরের উইকেটে স্পিনারদের প্রাধান্য বরাবরই বেশি। এই উইকেটে রান হয় না, তেমন নয়। এই উইকেটে সর্বোচ্চ স্কোর শ্রীলঙ্কার, ২০১৪ সালে করেছিল। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ৬ উইকেটে ৫৬০, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০২০ সালে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর ২০১১ সালে ৩৩৮। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ স্কোর ৮ উইকেটে ৫৫৭ রান, ২০১৫ সালে। এই মাঠে সব মিলিয়ে সেঞ্চুরি ৩৯টি। ডাবল সেঞ্চুরি ৫টি। যার দুটিই মুশফিকুর রহিমের এবং দুটিই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মিরপুরে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ২২৬, পাকিস্তানের আজহার আলি করেছিলেন ২০১৫ সালে। মুশফিকের দুটি স্কোর ২০১৯* ও ২০৩*। বাকি দুটি ডাবল সেঞ্চুরি শিবনারায়ণ চন্দরপাল ও মাহেলা জয়বর্ধনার। দুজনের ইনিংসই অপরাজিত ২০৩ রানের।এই মাঠে সেরা বোলিং তাইজুলের। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাঁ হাতি স্পিনার ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ৩৯ রানের খরচে। চট্টগ্রাম টেস্টে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। যা পাকিস্তানের বিপক্ষে সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। তবে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স সাকিবের, ৮২ রানে ৬ উইকেট।