শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সাফল্য নিয়েই ফিরছেন মুমিনুলরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাফল্য নিয়েই ফিরছেন মুমিনুলরা

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলে ৩২ বছর আগে, ১৯৯০ সালে। শারজাহতে অস্ট্রেলেশিয়া কাপে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো তাসমান পাড়ের দেশ নিউজিল্যান্ড সফরে যায় ২০০১ সালে। এরপর গত ২১ বছরে টাইগাররা নিয়মিত যাতায়াত করছে দেশটিতে। আগের সফরগুলো কখনই সাফল্যম-িত ছিল না। কখনই নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারেনি। উল্টো হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে দেশে ফিরেছে। এবারই প্রথম হাসিমুখে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। দুই যুগের প্রচেষ্টায় এবার জয়ের তীব্র স্বাদ নিয়েছে। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। যদিও ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে হেরেছে। তারপরও জয়ের স্বাদ নিয়েই আজ বিকালে ঢাকায় পা রাখার কথা মুমিনুল হক, লিটন দাসদের। বিসিবি টাইগার ক্রিকেটারদের লালগালিচা সংবর্ধনা দিবে কি না এখনো জানা যায়নি। তবে অতীত রেকর্ডস জানায়, সাফল্য নিয়ে ক্রিকেট দল দেশে ফিরলে হুড়োহুড়ি লেগে যায় বিসিবি কর্মকর্তাদের। এবারও কি এর ব্যতিক্রম হবে?

মুমিনুল বাহিনী দেশে ফিরছে আজ। গতকাল ঢাকায় ফিরেছেন টাইগারদের ‘টিম ডিরেক্টর’ খালেদ মাহমুদ সুজন ও সাবেক অধিনায়ক এবং দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। মুমিনুলদের সঙ্গে আসছেন না হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। ২০ জানুয়ারি চুক্তি শেষ গিবসনের। টাইগারদের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবেন না জানিয়েছেন ক্যারিবীয় কোচ। গিবসন কাজ করবেন পিএসএলে মুলতান সুলতানের পক্ষে। ডমিঙ্গো বিশ্রাম নিতে ফিরে গেছেন জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২১ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিপিএল। আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ বিপিএলের পরপর বলে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন।      

সর্বশেষ সিরিজের আগে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০-তিন ফরম্যাট মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৩২ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। হার সবগুলোতে। তবে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গ্রুপ পর্বের খেলায় নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল। সেটাই এতদিন ছিল দেশটির মাটিতে একমাত্র জয়। অবশেষে চলতি বছরের শুরুতে জয় পায়। ১-৫ জানুয়ারি মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে মুমিনুল, নাজমুল শান্ত, লিটন, শরিফুল, মেহেদী মিরাজদের দুরন্ত পারফরম্যান্সে ৮ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। ক্রাইস্টচার্চে ব্যাটারদের বাজে পারফরম্যান্সে হেরে যায় ইনিংস ব্যবধানে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছেন লিটন। ক্রাইস্টচার্চে ফলোঅনেও সেঞ্চুরি করে টেস্ট সার্কিটে ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম ইনিংসে মাহমুদুল হাসান জয়ের ধৈর্যশীল ব্যাটিং পুরো টেস্টের চিত্র পাল্টে দেন। তার ৭৮ রানের ইনিংসই দলের জয়ে বিরাট ভূমিকা রাখে। অধিনায়ক মুমিনুলের ৮৮ রানও ভূমিকা রেখেছিল। সিরিজের দুই টেস্টের ৪ ইনিংসে মুমিনুলের রান ১৩৮। সর্বোচ্চ ৮৮। লিটন ৩ ইনিংসে একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফসেঞ্চুরিসহ রান করেছেন ১৯৬। সিরিজে তার চেয়ে বেশি রান আছে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টম ল্যাথামের ২৬৭, ডেভিড কনওয়ের ২৪৪। কনওয়ে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেন এবং ল্যাথাম সিরিজে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন ২৫২ রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত সর্বোচ্চ ৬৪সহ ১১৪, ইয়াসির আলি সর্বোচ্চ ৫৫সহ ৮৩ রান করেছেন। একটি মাত্র টেস্ট খেলে দারুণ ব্যাটিং করেছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। রান করেছেন ২ ইনিংসে ৭৭।

প্রথম ১০ টেস্টে ১১ উইকেট নেওয়া ইবাদত হোসেন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানের খরচে ৬ উইকেট নিয়ে টেস্ট জয়ের ভিত গড়ে দেন। সিরিজে তার উইকেট ৯টি। তার সঙ্গে যুগ্মভাবে শীর্ষে রয়েছেন ব্ল্যাকক্যাপস বাঁ-হাতি পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। তরুণ শরিফুল নেন ৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ৪, মুমিনুল হক ও তাসকিন আহমেদ ৩টি করে উইকেট নেন।

এই প্রথম টাইগার ক্রিকেটাররা সমানে সমান লড়াই করেছেন নিউজিল্যান্ড সফরে। ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষে পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস জোগাবে আসন্ন আফগানিস্তান ও  দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে।

সর্বশেষ খবর