বুধবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নাগিনের বিষে নীল ঢাকা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নাগিনের বিষে নীল ঢাকা

স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে অনেকে ‘নাগিন অপু’ নামেই ডাকেন। উইকেট শিকারের পর তার ‘নাগিন-সেলিব্রেশন’ দেশের বাইরেও জনপ্রিয়। বিপিএলে গতকাল এই নাগিন-অপুর বিষেই নীল হয়ে গেল মিনিস্টার ঢাকা। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দলকে মাত্র ১০০ রানে অলআউট করে দেওয়ার পর ৭ উইকেটের ক্যারিশম্যাটিক জয় তুলে নিল সিলেট সানরাইজার্স।

নাজমুল ইসলাম অপু ১৮ রানে ৪ উইকেট তুলে নেন। অবশ্য আরেকটি সহজ ক্যাচ মিস করেছেন তিনি নিজেই। তা না হলে ৫ উইকেটই হয়ে যেত অপুর।

১০১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে কাল তিন ওভার আগেই খেলা শেষ করে দেয় সানরাইজার্স। সিলেটের ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয় খেলেছেন ৪৫ রানের ইনিংস।

গতকাল দারুণ বোলিং করেছেন ঢাকার তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজা। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ৪০২ দিন পর খেলতে নেমে ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট।

নাজমুল অপুর পাশাপাশি সিলেটের অন্য দুই স্পিনার সোহাগ গাজী ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও ক্যারিশমা দেখিয়েছেন। গাজী মাত্র ১৭ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট। মোসাদ্দেক মাত্র একটি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে তিনি রান দিয়েছেন মাত্র ১২।

গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেটে সিলেটের এই স্পিনত্রয়ীর কাছেই কাল দিশাহারা হয় মিনিস্টার ঢাকা। তবে কেবল স্পিনার নয়, পেসার তাসকিন আহমেদের বিরুদ্ধে খেলাও মাহমুদুল্লাহদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। জাতীয় দলের এই গতি তারকা ২২ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট।

ঢাকার ভয়ংকর ব্যাটসম্যান ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেলকে কাল রানের খাতাই খুলতে দেননি অপু।

আগের দিন ঢাকাকে উদ্ধার করেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। গতকালও তিনি দারুণ ব্যাটিং করছিলেন। ৩৩ রান করার পরও তিনি নাগিনের শিকার হন। এ ছাড়া মোহাম্মদ নাঈম এবং শুভাগত হোমের উইকেট দুটিও নিয়েছেন এই তারকা স্পিনার।

মিনিস্টারের তিন টপ স্কোরারই নাজমুলের শিকার হয়েছেন। মজার বিষয় হচ্ছে, প্রতিটি উইকেট নেওয়ার পরই এই স্পিনার নাগিন-সেলিব্রেশন করেন। তবে তার উদযাপনে খানিকটা পরিবর্তন এসেছে। এটা বলা যেতে পারে নাগিনের নতুন ভার্সন।

সেলিব্রেশনে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি বোলিংয়েও যেন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন নাজমুল অপু। দুই ম্যাচে তিনি ৭ উইকেট নিয়ে বোলারদের লিডারবোর্ডে শীর্ষে। আগের ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিরুদ্ধে ১৭ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।

এবার আসরে তিন পা-ব মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিল মিনিস্টার ঢাকা। প্রথম দুই ম্যাচে দুর্দান্ত দুটি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তামিম। কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি। তৃতীয় ম্যাচে তারা প্রথম জয় পায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ক্যারিশমীয় ব্যাটিংয়ে। চতুর্থ ম্যাচে মাশরাফি প্রথম খেলতে নেমে দারুণ বোলিং করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। অবশ্য এই ম্যাচে বোলারদের কিছু করারও ছিল না। কারণ, টি-২০তে প্রতিপক্ষকে মাত্র ১০১ টার্গেট দেওয়ার পর বোলারদের কি-ইবা করার থাকে!

সিলেট কাল খেলতে নেমেছিল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে তারা ভিক্টোরিয়ানসের কাছে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই দারুণভাবে জয়ে ফিরল মোসাদ্দেক হোসেনের সানরাইজার্স।

বড় তারকাদের নিয়ে গড়া দল ঢাকা চার ম্যাচের মধ্যে তিনটি হেরে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দেখা গেলেও এখনো দল হিসেবে ঢাকা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর