সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

কোচিং স্টাফে তারকার ছড়াছড়ি

আসিফ ইকবাল

কোচিং স্টাফে তারকার ছড়াছড়ি

নিঃসন্দেহে ক্রিকেট বিশ্বের সর্বকালের সেরা পেস বোলারদের একজন অ্যালান ডোনাল্ড। দক্ষিণ আফ্রিকান এই ফাস্ট বোলারকে গতি, সুইং ও বাউন্সের জন্য বলা হতো ‘সাদা বিদ্যুৎ’। দুর্দান্ত গতি ও বাউন্সের বিপক্ষে কখনোই সাবলীল ছিলেন না ব্যাটাররা। ডোনাল্ড ক্যারিয়ার শেষে প্রথমে ধারাভাষ্যকারের কাজ করেন। কোচিং পেশাকে বেছে নিয়েছেন এখন। ডোনাল্ড এখন পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। ১১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের সঙ্গে যোগ দিবেন সাদা বিদ্যুৎ। শুধু ডোনাল্ডই নন, টাইগারদের কোচিং স্টাফে যোগ দিয়েছেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স, ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমট। আগে থেকেই দলে রয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গা ও স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। বহু বছর পর টাইগারদের কোচিং স্টাফে তারকার ছড়াছড়ি। এই কোচিং স্টাফ নিয়ে স্বপ্ন দেখছে বিসিবি। সাকিব, তামিম, মাহমুদুল্লাহদের নিয়ে কতটা সাফল্য আনতে পারবেন ডমিঙ্গো বাহিনী? টাইগারদের ৫ কোচের দুজন দক্ষিণ আফ্রিকার, দুজন অস্ট্রেলিয়া এবং একজন শ্রীলঙ্কার।

ডমিঙ্গো দায়িত্ব নিয়েছেন ২০১৯ সালের আগস্টে। তার কোচিংয়ে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জয় পায় টাইগাররা। জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারায় টাইগাররা। ভারতের মাটিতে জয় পায় টি-২০ ক্রিকেটে। টেস্টে ড্র করেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আইসিসি সুপার লিগে দারুণ খেলে ১০ জয়ে ১০০ পয়েন্ট পেয়েছে। টি-২০ বিশ্বকাপে ব্যর্থ হলেও ঘরের মাঠে পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-২০ সিরিজ জিতেছে। তার কোচিংয়ে এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করছে টাইগাররা। আগে প্রোটিয়াসদের কোচ ছিলেন ডমিঙ্গো। জন্মগতভাবে দক্ষিণ আফ্রিকান বলে সেখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রয়েছে তার। চুলচেরা বিশ্লেষণাত্মক এই সুবিধাটুকু তামিম, মুমিনুলররা তার কাছ থেকে পাবেন। এক সময় তার সঙ্গী হিসেবে প্রোটিয়াসদের পেস বোলিং কোচ ছিলেন ডোনাল্ড। ডোনাল্ড দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৭২ টেস্টে ৩৩০ উইকেট ও ১৬৪ ওয়ানডেতে ২৭২ উইকেট নেন। তারকা ক্রিকেটার খুব ভালো করেই জানেন আফ্রিকান উইকেটগুলোর খুঁটিনাটি। প্রোটিয়াস ফাস্ট বোলারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। এই সময়টুকুতে গ্রেট পাস্ট বোলারের কাছ থেকে কতটা আদায় করে নিতে পারেন মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ, আবু জায়েদ রাহীরা, সেটাই দেখার বিষয়।

জেমি সিডন্স বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ। ২০০৭-২০১১ সাল পর্যন্ত টাইগারদের হেড কোচ ছিলেন। তার হাত ধরে আজকের সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহরা। ভবিষ্যৎ ক্রিকেটারদের টেকনিক উন্নত করতে সিনিয়র ক্রিকেটারদের পরামর্শে তাকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। তার কোচিংয়ে বাংলাদেশ প্রথমবার ওয়ানডেতে হারায় নিউজিল্যান্ডকে। প্রথমবারের টেস্ট জয় পায় দেশের বাইরে। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ব্যাটাররা তার হাত ধরে আগামীর সাকিব, তামিম, মুশফিক হবেন-এই আশা বিসিবির। আরেক অস্ট্রেলিয়ান শেন ম্যাকডারমট টাইগারদের পরিচিত মুখ। ২০০৬-২০০৮ সাল পর্যন্ত টাইগারদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি। ম্যাকডারমটকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ফিল্ডিং উন্নতির জন্য। প্রতিটি

ম্যাচেই টাইগাররা রান আউট, ক্যাচ মিস করছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে ৫ ম্যাচে ক্যাচ মিস করেছে ৯টি। টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী ক্যাচ মিস করেছিল ৯টি।

সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, তাইজুল ইসলামদের কোচ স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। ক্রিকেট বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঁ হাতি স্পিনারের হাত ধরে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করছেন টাইগার স্পিনাররা। তার হতে ধরে তাইজুল, মিরাজ, নাসুমরা কতটা ধারালো হবেন, ভবিষ্যতই বলবে।

সর্বশেষ খবর