মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

টাইগারদের মিশন এখন দক্ষিণ আফ্রিকা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টাইগারদের মিশন এখন দক্ষিণ আফ্রিকা

ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল, টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক

সুযোগ পেয়েও টি-২০ সিরিজে আফগানিস্তানকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ক্যাচ মিসের খেসারত গুনে হাতছাড়া করেছে সিরিজ। ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজের ৫ ম্যাচে টাইগাররা ক্যাচ মিস করেছে ৯টি। অবিশ্বাস্য! এই ব্যর্থতা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। শুধু আফগান সিরিজেই নয়, প্রতিটি সিরিজ ও টুর্নামেন্টে টাইগারদের হাত গলিয়ে ক্যাচ মিস হচ্ছে নিয়মিত। ক্যাচ মিসের যন্ত্রণা নিয়ে দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে খেলতে ১১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের নেতৃত্ব আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের  আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা সফর শুরু করবে ১৮ মার্চ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে। ওয়ানডে সিরিজের পর ৩১ মার্চ আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করবে মুমিনুল বাহিনী। সাকিব আল হাসান, তামিমসহ পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকা মিশনে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

নিয়মিত ওয়ানডে খেলছেন সাকিব। পারিবারিক কারণে বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজ খেলেননি। আইপিএলে সুযোগ পেলে আফ্রিকানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ না খেলার সম্ভাবনাই ছিল বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারে। সুযোগ পাননি আইপিএলে। সেজন্যই এবার টেস্ট সিরিজ খেলবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সাকিব টেস্ট খেলবেন ২০০৮ সালের পর। তামিম ফিরেছেন ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে। গত জুলাইয়ের পর টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক সবধরনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে। এখন পুরোপুরি ফিট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে খেলেছেন। আফ্রিকা সফরে ওয়ানডের পাশাপাশি টেস্টেও খেলবেন। ইনজুরির জন্য নভেম্বরে ঘরের মাঠে পাকিস্তান এবং জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেননি তামিম।             

বাংলাদেশ সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছিল ২০১৭ সালে। এরপর দুই দল ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়। ওভালে ২১ রানে জিতেছিল টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সর্বশেষ সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। সফরে ১৫ মার্চ স্বাগতিক একাদশের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতিমূলক ওয়ানডে খেলবেন তামিমরা। এরপর ১৮ মার্চ সেঞ্চুরিয়ান, ২০ মার্চ জোহানেসবার্গ এবং ২৩ মার্চ সেঞ্চুরিয়ানে ওয়ানডে তিনটি খেলবে টাইগাররা। ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেই ২৬ ও ২৭ মার্চ একটি দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন মুমিনুলরা। দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে অভিজ্ঞতা নিয়ে নেমে পড়বে টেস্ট সিরিজে। ৩১ মার্চ-৪ এপ্রিল প্রথম টেস্ট ডারবানের কিংসমিডে এবং ৭-১২ এপ্রিল দ্বিতীয় টেস্ট পোর্ট এলিজাবেথে। এই প্রথম আফিকার মুল ভেন্যুতে টেস্ট খেলবে টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে টাইগারদের পারফরম্যান্স আহামরি নয়। ১২ টেস্টের ১০টিতেই হেরেছে। ড্র দুটি দেশের মাটিতে এবং বৃস্টিভাগ্যে। ওয়ানডেতে অবশ্য দেশটির বিপক্ষে জয়ের রেকর্ড রয়েছে ৪টি। ২০১৫ সালে প্রথম ও একমাত্র ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এছাড়া ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের সুপার এইটে হারিয়েছিল প্রোটিয়াসদের।

সফরে বাংলাদেশ যাচ্ছে প্রায় বদলে যাওয়া কোচিং স্টাফ নিয়ে। দলের হেড কোচ এখনো রাসেল ডেমিঙ্গো। ব্যাটিং কোচ হিসেবে সাকিব, তামিম, মুশফিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন টাইগারদের সাবেক হেড কোচ জেমি সিডন্স। পেস বোলিং কোচ কিংবদন্তির ফাস্ট বোলার অ্যালান ডোনাল্ড ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার শন ম্যাকডারমটকে। স্পিন কোচ শ্রীলঙ্কার রঙ্গনা হেরাথ। নতুন কোচিং স্টাফের তত্ত্বাবধানে ভালো ক্রিকেট খেলতে চান টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। অবশ্য টাইগাররা প্রোটিয়াসদের বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলার প্রত্যাশা করছে নিউজিল্যান্ডর বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের আত্মবিশ্বাসে। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বছরের প্রথম টেস্টটি জিতেছিল বাংলাদেশ। ওই টেস্টের ফল দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলেন টাইগার টেস্ট অধিনায়ক, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় অবশ্যই আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। একটা বড় দলের বিপক্ষে তাদের মাটিতে ম্যাচ জেতা বড় ব্যাপার। তবে অতীত নিয়ে বেশি ভাবনার প্রয়োজন নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নিয়ে ভাবতে হবে। যেহেতু মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে, তাই আমাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে কেমন করি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য দলগুলো আমাদের আগে যেভাবে দেখত, এখন নিশ্চয়ই সেভাবে দেখবে না। দলগুলো এখন আমাদের গুরুত্ব দেবে। সেদিক থেকেও চ্যালেঞ্জ থাকবে।’

সর্বশেষ খবর