শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

খালেদের পেসে বোলিংয়ে দাপট

ক্রীড়া প্রতিবেদক

খালেদের পেসে বোলিংয়ে দাপট

ডারবান টেস্টের আগে সৈয়দ খালেদ আহমেদের নামের পাশে লেখা ছিল মাত্র ১ উইকেট। উইকেটটি ছিল পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটার বাবর আজমের। গত বছর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আউট করেছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ককে। খালেদের ৩ টেস্ট পরিসংখ্যানে ওই একটি উইকেটই ছিল। এমন ছন্দহীন পারফরম্যান্সে নিউজিল্যান্ড সফরে জায়গা হয়নি ডান হাতি ফাস্ট বোলারের। তবে বোলিংয়ে গতি ও বাড়তি বাউন্স থাকায় সুযোগ পেয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকা স্কোয়াডে। কিন্তু ডারবান টেস্টে খেলবেন- এমন সম্ভাবনা ছিল না। বাঁ-হাতি দীর্ঘকায় পেসার শরিফুল ইসলাম ফিটনেস পরীক্ষায় উতরাতে পারেননি। সুইং বোলার আবু জায়েদ রাহী থাকার পরও টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রাখেন খালেদের ওপর। ২৯ বছর বয়সী ডান হাতি পেসার আস্থার প্রতিদান দেন দুর্দান্ত বোলিংয়ে। খালেদের আগ্রাসী বোলিংয়ে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪০০-এর নিচে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ডান হাতি ফাস্ট বোলার চতুর্থ টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৪ উইকেট নেন। ডারবান টেস্টের প্রথম দিন ডিন এলগারের দক্ষিণ আফ্রিকার হলেও গতকাল প্রথম দুই সেশন ছিল মুমিনুলের বাংলাদেশের। বিশেষ করে খালেদসহ টাইগার বোলারদের।

আগের দিনের ব্যর্থতাকে সামলে গতকাল পুরোপুরি অলআউট ক্রিকেট খেলে স্বাগতিক দলকে আটকে ফেলে ১২১ ওভারে ৩৬৭ রানে। এবারই প্রথম টাইগাররা ঘরের মাঠে ৪০০-এর নিচে বেঁধে ফেলে প্রোটিয়াদের। এর আগে দুবার ৪০০-এর নিচে অলআউট হয়েছিল আফ্রিকা। ২০০৮ সালে সেঞ্চুরিয়ানে ১১৫.২ ওভারে ৪২৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই টেস্টে ২৮ ওভারের স্পেলে ৯৯ রানের খরচে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। একই সিরিজে ব্লোমফন্টেইনে ১২২.৫ ওভারে ৪৪১ রানে অলআউট হয়েছিল স্বাগতিকরা। সেবারও দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩৮ ওভারের স্পেলে ১৩০ রানের খরচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। ওয়ানডে সিরিজ খেললেও টেস্ট সিরিজে খেলছেন না সাকিব। এবার ননজেকে মেলে ধরেছেন খালেদ। সব মিলিয়ে ডান হাতি ফাস্ট বোলারের স্পেল ২৫-৩-৯২-৪।  

ওয়ানডে সিরিজে দারুণ বোলিং করেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল। নতুন বলে তার আগ্রাসী বোলিং আলাদা নজর কাড়ে। টেস্টে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে নতুন বলের জুড়ি হওয়ার কথা ছিল বাঁ-হাতি পেসারের। কিন্তু ফিটনেস টেস্ট উতরাতে পারেননি। পরে বাধ্য হয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট সুইং বোলার আবু জায়েদ রাহি ও শহিদুরকে পেছনে ফেলে খালেদকে জায়গা করে দেয় একাদশে। প্রথম দিনের প্রথম সেশনে স্বাগতিক দুই ওপেনার চেপে বসেছিল টাইগার বোলারদের ওপর। দ্বিতীয় সেশনে ঘুরে দাঁড়ান বোলাররা। প্রথম আঘাত হানেন খালেদ। সাজঘরে ফেরান স্বাগতিক অধিনায়ককে। প্রথম দিনে যে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিল মুমিনুল বাহিনী, তার দুটি ছিল পেসারদের। গতকাল প্রথম সেশনে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম আঘাত হানেন খালেদ। ৮৩ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে কাইলি ভেরেইন ও ওয়েইন মুল্ডারকে আউট করে হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়ে তোলেন। একইসঙ্গে ম্যাচে ফেরান বাংলাদেশকে। শার্প ইনকাটে লেগ বিফোর করেন ভেরেইনকে। যদিও রিভিউ নেন প্রোটিয়া ব্যাটার। কিন্তু আউট হন। পরের বলেই মুল্ডারকে গালিতে মাহামুদুল হাসান জয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করেন খালেদ। ৪ উইকেটে ২৩৩ থেকে ৬ উইকেটে ২৪৫ রান লেখা হয় স্কোর কার্ডে। সেখান থেকে টেম্বা বাভুমা ও কেশব মহারাজ যোগ করেন ৫৩ রান। দুজনেই আবার দলীয় ২৯৮ রানে মাত্র দুই বলের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন। শেষ দিকে আবারও আঘাত হানেন খালেদ। তবে খালেদকে সহায়তা করেন ইবাদত ৮৬ রানে ২টি ও মেহেদি মিরাজ ৯৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে।  

সর্বশেষ খবর