রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ডারবানে জয়ের মহাকাব্য

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ডারবানে জয়ের মহাকাব্য

ডারবানে সেঞ্চুরির পর মাহামুদুল হাসান জয়ের সেলিব্রেশন

জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু, জিওফ বয়কট, সুনীল গাভাস্কার, গ্রাহাম গুচদের পাশে নাম লেখাতে পারলেন না মাহামুদুল হাসান জয়। গড়তে পারলেন না শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করার রেকর্ড। ‘ক্যারিং থ্রু দ্য ইনিংস’ করতে পারেননি জয়। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন বাংলাদেশ ইনিংসে। আউট হওয়ার আগে অবশ্য ইতিহাসের সোনালি পাতায় চিরস্থায়ী হয়েছেন মাহামুদুল হাসান জয়। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে তিন অংকের জাদুকরি ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের ব্যাটারদের আগের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর ছিল টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রোমে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। জয় শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হলে বাংলাদেশের সংগ্রহ প্রথম ইনিংসে ২৯৮ রান। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল ৩৬৭ রান। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ৬।

জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবার জয়োৎসবে ভেসেছিল বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ৮ উইকেটের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের ম্যাচে জয় খেলেছিলেন ৭৮ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। আহত হওয়ায় অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেননি। খেলেননি ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। জয়ের অভিষেক ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকটি যুব বিশ্বকাপজয়ী ওপেনারের ভালো হয়নি। শূন্য ও ৬ রান করেছিলেন। অভিষেক ভালো না হলেও টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রাখেন তরুণ ওপেনারের উপর। দারুণ টেকনিক জয়ের। অসাধারণ ধৈর্য। গতকাল ১৩৭ রানের ইনিংসটি খেলে ইঙ্গিত দেন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের। ইনিংসটি খেলেন ৩২৬ বলে। যাতে ছিল ১৫টি চার ও ২টি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ৪২.০২। তৃতীয় টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংস খেলতে ২১ বছর বয়স্ক ওপেনার উইকেটে ছিলেন ৪৪২ মিনিট বা ৭ ঘণ্টা ২২ মিনিট।

দ্বিতীয় দিন তিনি শেষ করেছিলেন ৪৪ রানে। গতকাল প্রথম সেশনেই তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। ১৭০ বলে ৫০ রান করেন ৫ চারে। সাইমন হার্মার ও কেশব মহারাজের স্পিন এবং ডুইন অলিভার ও লিজার্ড উইলিয়ামসদের গতি, বাউন্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেশনে তুলে নেন স্বপ্নের সেঞ্চুরি। পয়েন্টে স্কয়ার কাটে ২ রান নিয়ে ৯৮ রান থেকে ১০০ রানে পৌঁছান। এরপর শূন্যে লাফিয়ে সেঞ্চুরি উদযাপন করেন। ২৬৯ বলে সেঞ্চুরি করেন ১০ চার ও ১ ছক্কায়। সেঞ্চুরির পর সতীর্থদের বিদায়ে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করেন। পরের ৩৭ রান করেন ৫৭ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায়। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট না হলে গুল্লুর পাশে না লেখাতেন ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিংয়ের। ২০০১ সালে হারারেতে গুল্লু ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ৮৫ রানের অপরাজিত ছিলেন। গতকাল জয় আউট হন ১৩৭ রানে। তখন দলের স্কোর ২৯৮ এবং ওভার ছিল ১১৫.৫।

দ্বিতীয় দিন হার্মারের ঘূর্ণিতে ৯৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা ছিল টাইগাররা। নাইটওয়াচম্যান তাসকিনকে নিয়ে দিন পার করেন জয়। কিন্তু গতকাল তৃতীয় দিন শুরুতেই ফিরেন তাসকিন। এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে জয় ও লিটন দাস ৮২ রান যোগ করেন। লিটন ব্যক্তিগত ৪১ রানে আউট হন উইলিয়ামসের বলে। দলীয় ১৮৩ রানে লিটনের বিদায়ের পর ইয়াসির আলির সঙ্গে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩৩ রান যোগ করেন। ইয়াসির ব্যক্তিগত ২২ রানে রান আউট হন। অষ্টম উইকেট জুটিতে জয় ও মেহেদী মিরাজ যোগ করেন ৫২ রান। মিরাজ ২৯ রান করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর