সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মিরাক্যালের অপেক্ষায় টাইগাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মিরাক্যালের অপেক্ষায় টাইগাররা

ভেরেইনের বিপক্ষে লেগ বিফোরের আবেদন মেহেদী হাসান মিরাজের। আবেদন করছেন সতীর্থরাও। কিন্তু দিন শেষে এ উৎসবমুখর পরিবেশ থাকেনি টাইগার শিবিরে -এএফপি

লাটিমের মতো বল ঘুরছে! কখনো আবার নিচুও হচ্ছে। চতুর্থ দিন শেষে ডারবানের কিংসমিডের উইকেটের আচরণ এমনই। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই স্পিনার সাইমন হার্মার ও কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে বেসামাল হয়ে স্কোর বোর্ডে ১১ রান লিখতেই সাজঘরে ফিরেন তিন টাইগার ব্যাটার সাদমান ইসলাম, মাহামুদুল হাসান জয় ও অধিনায়ক মুমিনুল হক। আজ পঞ্চম দিন ইতিহাস লিখতে অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলতে হবে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিমদের। পঞ্চম দিনে ইতিহাস লিখতে বাংলাদেশকে টপকাতে হবে আরও ২৬৩ রান। যা টাইগারদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে নেই। চতুর্থ ইনিংসে তাড়া করে বাংলাদেশের রেকর্ড রয়েছে সর্বোচ্চ ২১৭ রান। ২০০৯ সালে সেন্ট জর্জেসে ২১৫ রানের টার্গেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইতিহাসটি লিখেছিল বাংলাদেশ।

ডান কাঁধে ব্যথা পাওয়ায় দেশে ফিরে আসছেন তাসকিন ও ইনজুরির কারণে শরিফুল ইসলাম। ৫ এপ্রিল তারা ঢাকা ফিরবেন। ফলে  পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারবেন না তারা।

প্রথম দিন উইকেট পতন হয়েছিল ৪টি। দ্বিতীয় দিন ১০টি। তৃতীয় দিন ৬টি এবং গতকাল চতুর্থদিন পতন হয়েছে ১৩টি। প্রথম সেশনে উইকেট পড়েছে একটি, দ্বিতীয় সেশনে ৪টি এবং তৃতীয় সেশনে ৮টি। গতকাল প্রথম সেশনে দুটি সহজ ক্যাচ মিস করেন বাংলাদেশের দুই ফিল্ডার নাজমুল হোসেন শান্ত ও ইয়াসির আলি। দুটি সহজ জীবন পেয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। অবশ্য প্রথম সেশনে ক্যাচ মিসের ক্ষতি দ্বিতীয় সেশনে পুষিয়ে দেন ইয়াসির ও ‘সেঞ্চুরি ম্যান’ জয় দুটি দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে। একই সঙ্গে ম্যাচে ফেরান দলকে। কিন্তু শেষ সেশনে স্বাগতিক স্পিনারদের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে পড়েন টাইগার ব্যাটাররা। তবে অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশকে আজ পঞ্চম দিনের মিরাক্যাল কিছু করতে হবে! অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করতে হবে শান্ত, মুশফিকদের।  

ডারবান টেস্টের আগে গত ২২ বছরে ১২৮ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। জয় সাকল্যে ১৬টি। যার দুটি ইনিংস ব্যবধানে, ৪টি রান তাড়া করে এবং বাকি ১০টি টার্গেট ছুঁড়ে। রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডতে পাঁচে তুলতে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে টাইগারদের। এখন পর্যন্ত ২০০’র উপর রান তাড়া করে বাংলাদেশ টেস্ট জিতেছে একবার। ২০০৯ সালে সেন্ট জর্জেসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুঁড়ে দেওয়া ২১৫ রান তাড়া করে টাইগাররা ৪ উইকেটে জিতেছিল সাকিব আল হাসানের অবিশ্বাস্য ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে। এছাড়া ২০০ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড নেই। বাকি তিন জয়ের একটি চলতি জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটে। টার্গেট ছিল ৪০ রান। ২০১৭ সালে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯১ রান তাড়া করে জয়টি ছিল বাংলাদেশের শততম টেস্টে। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জিতেছিল ১০১ রান তাড়া করে। ডারবানে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ৩৩৬ রান। ১৯৫০ সালে ৫ উইকেটে অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল।

ডারবানে প্রথম টেস্ট খেলছেন মুমিনুলরা। প্রথম ইনিংসে ৩৬৭ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। তরুণ ওপেনার জয়ের ১৩৭ মহাকাব্যিক ইনিংসে ২৯৮ রান করে বাংলাদেশ। ৬৯ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৪ রান করে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর দক্ষিণ আফ্রিকার। আগের সর্বনিম্ন স্কোর ৩৬৭। বাংলাদেশকে ২৭৪ রান টার্গেট দিয়েই দুই স্পিনার দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এলগার বাহিনী। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হার্মারের দারুণ এক বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সাদমান। দুই ইনিংস মিলিয়ে তার রান ৯, ০। মহারাজের দারুণ এক আর্মারে বোকা হয়ে বোল্ড হন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জয়। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যর্থতার গল্প লিখেন অধিনাযক মুমিনুল। ক্যারিয়ারের ৫০ টেস্টের দুই ইনিংসে তার স্কোর ০ ও ২।

সর্বশেষ খবর