শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

জাতীয় দলে ফেরার অপেক্ষায় লিগের কিং

পাকিস্তানের ফাওয়াদ আলম দীর্ঘ ১১ বছর বিরতি দিয়ে ৩৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে ফিরেই দেখিয়েছিলেন ক্যারিশমা। তার ৫টি টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে ৪টিই করেছেন ২০২০ সালে ফেরার পর।

মেজবাহ্-উল-হক

জাতীয় দলে ফেরার অপেক্ষায় লিগের কিং

নাঈম ইসলাম

নাঈম ইসলাম জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৪ সালে। টেস্ট খেলেছেন আরও বছর দুয়েক আগে। লাল-সবুজ জার্সিতে আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি। সে কারণেই জাতীয় দলের নিজের জায়গাটা পাকা করতে পারেননি।

কিন্তু সেই নাঈম ইসলাম বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগের রীতিমতো কিং। প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২৮টি সেঞ্চুরি, ১০ হাজারের কাছাকাছি রান। গড় ৪০ এর উপরে। লিস্ট-এ ম্যাচে শতকের সংখ্যা ১৪। ঘরোয়া লিগের প্রতিটি মৌসুমেই দুর্দান্ত দাপট দেখাচ্ছেন।

এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও একের পর ম্যাচে ক্যারিশমা দেখাচ্ছেন নাঈম। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে এই আসরে এখন পর্যন্ত ৮৩.৬২ গড়ে ৬৬৯ রান করেছেন। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে রূপগঞ্জকে সুপার লিগের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৯ ম্যাচের মধ্যে ৬টি জিতেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। আর জয় পাওয়া ছয় ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই ম্যাচসেরা নাঈম। তবে সেঞ্চুরির সংখ্যা দুইয়ের জায়গায় পাঁচও হতে পারতো! কারণ এই প্রথম তিন ম্যাচেই ৯০এর উপরে রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের তারকা এনামুল হক বিজয়ের ৭২৮ রান। তবে নাঈম অলরাউন্ডারের ভূমিকা পালন করায় তিনি ছাপিয়ে যেতে পারেন বিজয়কে।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপদের বন্ধু তিনি। যেমন সব শেষ ম্যাচটি ছিল খুবই লো স্কোরিং। বাইশগজে গিয়ে রান করাই কঠিন ছিল। কিন্তু নাঈম ছিলেন ব্যতিক্রম। এমন ম্যাচেও ৪৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন। বল হাতে মাত্র ২০ রানে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে দলকে জিতিয়ে দিয়েছেন।

প্রিমিয়ার লিগের সেরা এই তারকার বয়স ৩৫। কিন্তু এখনো তিনি জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নাঈম বলেন, ‘যে কোনো ক্রিকেটারের প্রথম স্বপ্নই থাকে জাতীয় দলের হয়ে খেলা এবং পারফর্ম করা। আমিও এক সময় খেলেছি। বাদ পড়ার পর নিজেকে আরও শাণিত করেছি। আমি ফিটনেস নিয়েও কাজ করেছি। জাতীয় দলে ফেরার জন্য আমি প্রস্তুত হয়ে আছি।’

ফিটনেস ও পারফরম্যান্স ঠিক থাকলে এই বয়সেও যে জাতীয় দলে ফেরা যায় এবং দাপট দেখানো যায় তার উদাহরণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক আছে। পাকিস্তানের ফাওয়াদ আলম দীর্ঘ ১১ বছর বিরতি দিয়ে ৩৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে ফিরেই দেখিয়েছিলেন ক্যারিশমা। তার  ৫টি টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে ৪টিই করেছেন ২০২০ সালে ফেরার পর। তাহলে নাঈম কেন পারবেন না!

ঘরোয়ার কিং এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে আমার তো কোনো হাত নেই। আমার কেবল করণীয় ফিটনেস ঠিক রাখা এবং পারফরম্যান্স প্রদর্শন করা। সেটা আমি খুব ভালোভাবেই করছি। এখন বোর্ড যদি মনে করেন আমাকে জাতীয় দলে দরকার, তাহলে আমি সেজন্য প্রস্তুত আছি।’

ঘরোয়া লিগ হচ্ছে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার প্রবেশদ্বার। যদি ঘরোয়া লিগের পারফরম্যান্সকে  বিবেচনায় নেওয়া হয় তাহলে জাতীয় দলে ফেরাটা নাঈমের জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র! ঘরোয়া লিগে এমন ক্যারিশম্যাটিক পারফরম্যান্স দেখানো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে কি নির্বাচক কিংবা বোর্ড উপেক্ষা করতে পারবে? দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে ভরাডুবির পর নাঈমের মতো পোড় খাওয়া ঘরোয়া লিগের কিং ব্যাটসম্যানদের জাতীয় দলে ফেরানোটা যেন সময়ের দাবি!

সর্বশেষ খবর