শুক্রবার, ৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রিয়াল-লিভারপুল ফাইনাল

ক্রীড়া ডেস্ক

রিয়াল-লিভারপুল ফাইনাল

বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট মানে নব্বই মিনিট নয়! আরও অনেক লম্বা, আরও অনেক দীর্ঘ। বুধবার রাতে বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের সঙ্গে পেপ গার্ডিওলার ম্যানচেস্টার সিটিও হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছে, কার্লো আনচেলোত্তির রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে রিয়ালের মাটিতে খেলা কতটা কঠিন। ৮৯ মিনিট পর্যন্ত যখন প্রায় নিশ্চিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আরও একবার অল ইংল্যান্ড ফাইনালের, তখনই ঘুরে দাঁড়ায় ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাব রিয়াল। মাত্র দুই মিনিটে রূপকথার নাটক লিখে ইংলিশ পরাশক্তি ম্যান সিটিকে ছিটকে দেয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে। গার্ডিওলার ম্যান সিটির জন্য আরও একবার অধরা হয়ে রইল ইউরো সেরা ক্লাবের মুকুট পরার! চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলতে ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়ালকে জিততেই হতো। সেই কাজটিই করেছেন রদ্রিগো ও করিম বেনজামারা। অথচ ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট আগেও দুই লেগ মিলিয়ে গার্ডিওলা বাহিনী এগিয়েছিল ৫-৩ গোলে। শেষ দুই মিনিটের রদ্রিগো নাটকে দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে জিতে ২৮ মে প্যারিসের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল। প্রতিপক্ষ ইংলিশ জায়ান্ট লিভারপুল। ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল দুই লেগ মিলিয়ে স্পেনের ভিলারিয়ালকে ৫-২ ব্যবধানে জিতে ফাইনালে উঠেছে। রিয়াল মাদ্রিদ ও লিভারপুল এর আগে ২০১৭-১৮ মৌসুমে আরও একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। ৩-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল। ২৮ মে প্যারিসের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কি পারবেন প্রতিশোধ নিতে মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানেরা? না, বেনজামারা আরও একবার শিরোপা উৎসবে মেতে উঠবেন।

রিয়াল-ম্যান সিটি সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ইংলিশ জায়ান্টরা জিতেছিল ৪-৩ গোলে। ইতেহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচটি কেভিন ডি ব্রুইন, রিয়াদ মাহরেজরা জিততে পারতেন ৭-৮ গোলে। কিন্তু একের পর এক গোল মিস করেছে ইংলিশ ক্লাবটি। যদিও হাসিমুখেই মাঠ ছেড়েছিল ম্যান সিটি। কিন্তু গোল মিসের খেসারত গুনতে হয়েছে দ্বিতীয় লেগে। বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগে এগিয়েও গিয়েছিল সফরকারী মাহরেজের গোলে। ৭৩ মিনিটে ছোট ছোট পাসে রিয়ালের বক্সে ঢুকে পড়ে ম্যান সিটি। ডি বক্সের মাথা থেকে বাঁ পায়ের সোয়ার্ভিং শটে ম্যাচের ব্যবধান ১-০ করেন মাহরেজ। তার ওই গোলে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে স্টেডিয়ামে। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলার আগাম উৎসবে মেতে উঠে গার্ডিওলা বাহিনী। ৮৯ মিনিট পর্যন্ত চলছিল ম্যান সিটির উৎসব। এরপরই রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। ৯০ মিনিটে ডি বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে বেনজামার পাসে ডান পায়ের টোকায় সমতা আনেন রদ্রিগো (১-১)। ওই গোলের পর ধারাভাষ্যকার বলতে থাকেন, গোল হলেও অ্যানচেলোত্তির দলের ফাইনাল এখনো নিশ্চিত নয়। কিন্তু নাটক তখনো বাকি! ম্যাচের অতিরিক্ত ৬ মিনিট যোগ হয়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই হেডে চোখ ধাঁধানো গোলে ব্যবধান ২-১ করেন। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান হয় ৫-৫। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিট। ম্যাচের ৯৫ মিনিটে করিম বেনজামার পেনাল্টিতে রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ জিতে নেয় ৩-১ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ গোলে জিতে ১৪তম শিরোপার পথে এগিয়ে যায় রিয়াল। ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বসিত আনচেলোত্তি, ‘আমার বিশ্বাস ছিল জিতব। ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে। ফাইনালে লিভারপুল কঠিন প্রতিপক্ষ। ম্যাচটি জিততে চাই।’ হেরে হতাশ ম্যান সিটি কোচ গার্ডিওলা, ‘আমরা ভালো খেলতে পারিনি। মাত্র দুই মিনিটে দুই গোল খাওয়া অবিশ্বাস্য।’

ইংলিশ জায়ান্ট লিভারপুল ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ভিলারিয়ালকে। দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষের মাটিতে ০-২ গোলে পিছিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ক্লপের শিষ্যরা অবিশ্বাস্য ফুটবল খেলে ৩ গোল করে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে। প্রথম লেগে ২-০ এবং দ্বিতীয় লেগে ৩-২ গোলে জয় পায় লিভারপুল।   

রিয়াল মাদ্রিদ সর্বোচ্চ ১৩ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে। মিলান ৭ এবং ৬ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ ও লিভারপুল। বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৫ বার।                                    

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর