মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ

শেষটা রঙিন হোক জামালদের

শেষটা রঙিন হোক জামালদের

আজ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে কী করবে। ৪০ বছরের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি? স্বাগতিকরা অবশ্যই শক্তিশালী। তারপরও আমার কাছে মনে হয় মালয়েশিয়া এতটা ভয়ংকর নয় যে, তাদের হারানো সম্ভব নয়। যতই ভালো খেলুক, গোল না পেলে লাভ নেই।

এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচ। প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়া বলেই আমার দুঃখের এক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ১৯৮২ অর্থাৎ ৪০ বছরের আগের কথা। সেবার দিল্লিতে এশিয়ান গেমসে ফুটবলে বাংলাদেশ ২-১ গোলে হারায় মালয়েশিয়াকে। ওই গেমসে আমার দলে চান্স পাওয়া নিশ্চিত। গোলাম সারোয়ার টিপু ভাই আমাকে বললেন, গাফফার তুমি বাদল ও সালাম ত্রিরত্ন জাতীয় দলে চান্স পাচ্ছ। আমরা তিনজনই তখন মোহামেডানে খেলতাম। টিপু ভাইয়ের প্রশিক্ষণে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। টিপু ভাই জাতীয় দলের ডেপুটি কোচ ছিলেন। ওই গেমসে চুন্নু ভাই ও আনোয়ার কী কারণে যেন নিষিদ্ধ ছিলেন। লেফট আউট পজিশনে আমার বিকল্প কেউ ছিলেন না। অথচ চূড়ান্ত দল ঘোষণার পর দেখলাম আমার নাম নেই। এ নিয়ে অনেকে আফসোস করলেন। কেন বাদ পড়লাম জানতে আর দেরি হলো না। ১৯৮২ সালে সালাউদ্দিন, চুন্নু ভাই, হেলাল ও আনোয়ার জেল খেটেছিলেন। আমিই একমাত্র ফুটবলার যে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। জেলখানায় তাদের সঙ্গে দেখা করতেও গিয়েছিলাম। তাই ওপরের মহলের নির্দেশে এশিয়ান গেমস স্কোয়াডে আমাকে রাখা হয়নি।

আজ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ তো, তাই দুঃখের স্মৃতিটা নতুন করে মনে পড়ে গেল। যাক আসল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। অস্বীকার করব না, দেশের ফুটবলের বেহাল দশা দেখে অনেকেই ফুটবলারদের সমালোচনা ও তিরস্কার করে যাচ্ছিলেন। আমি জানি, দোষটা শুধু তাদের নয়। কিন্তু যারা খেলেন তাদেরই দোষ দেওয়া হয়। এটা আমাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে।

আগেই ধারণা ছিল এশিয়াকাপ বাছাই পর্ব পেরোনো সম্ভব নয়। শক্তিশালী বাহরাইন, তুর্কমেনিস্তান ও স্বাগতিক মালয়েশিয়াকে টপকে চূড়ান্ত পর্বে খেলবে, তা সম্ভবই নয়। তবে বাংলাদেশের ফুটবলারদের প্রশংসা না করে পারছি না। বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের কাছে হেরেছে। কিন্তু ছেলেরা এবার যেন বদলে যাওয়া পারফরম্যান্স প্রদর্শন করছে। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে পিছিয়ে থেকেও ৯০ মিনিট যে সাহসী খেলাটা খেলেছে তাতে হারটা বেদনাদায়ক। এটাও একটা স্বস্তি। বাংলাদেশের হারে ফুটবলপ্রেমীরা কষ্ট পাচ্ছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে আজ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে কী করবে। ৪০ বছরের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি? স্বাগতিকরা অবশ্যই শক্তিশালী। তারপরও আমার কাছে মনে হয় মালয়েশিয়া এতটা ভয়ংকর নয় যে, তাদের হারানো সম্ভব নয়। যতই ভালো খেলুক, গোল না পেলে লাভ নেই। জামাল ভূঁইয়াদের সেটা মনে রাখতে হবে। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে যেসব সুযোগ হাতছাড়া করেছে তা দেখে আমি অবাক। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে যে সাহসী ফুটবল খেলেছে সেটাই আজ ধরে রাখতে পারলে বেসামাল হয়ে পড়বে স্বাগতিকরা। জয় না আসুক ড্র হলেও খুশি। প্রত্যাশা একটাই- শেষটা জামালদের রঙিন হোক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর