বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সেই উইন্ডিজেই নতুন শুরু সাকিবের

ওয়েস্ট ইন্ডিজে সাকিবের নেতৃত্বে অভিষেক হয়েছিল, দ্বিতীয়বারের মতো নেতৃত্বে ফিরেছিলেন এই ক্যারিবীয় দ্বীপেই। আবারও সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তৃতীয়বারের মতো নেতৃত্বে ফিরলেন সাকিব।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেই উইন্ডিজেই নতুন শুরু সাকিবের

লাল বল ও সাদা পোশাকে নতুন করে সাকিব যুগে পা রাখল বাংলাদেশ। এবার নিয়ে তৃতীয়বার টেস্ট অধিনায়ক হলেন দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের অধিনায়কত্বের তিনবারই অভিষেক ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে। এবার তৃতীয়বারের মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ৩৫ বছর বয়স্ক সাকিব কতটা এগিয়ে নিয়ে যাবেন দলকে, সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন নেই দলের ক্রিকেটার ও ম্যানেজেমেন্টের। কিন্তু বাঁধা দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। বিশেষ করে ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তিত ম্যানেজমেন্ট। সেই অবস্থান থেকে অভিজ্ঞ সাকিবকে সামনে থেকে লড়াই করতে হবে ব্যাট ও বল হাতে। পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যানের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেরা পারফরমার সাকিব। ক্যারিয়ারে ৬১ টেস্টের ১১টিরই প্রতিপক্ষ ক্যারিবীয়রা। ১৯ ইনিংসে সেঞ্চুরি না থাকলেও ৪৫.১৬ গড়ে রান করেছেন ৮১২। উইকেট নিয়েছেন ৪৬টি। সাকিবের তৃতীয়বার অধিনায়কত্বের টেস্ট আলাদা করে নজর কাড়বে তামিম ইকবাল ও মুস্তাফিজুর রহমানের জন্য। মাত্র ১৯ রান করলেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক গড়বেন তামিম। ৬৭ টেস্টে ওয়ানডে অধিনায়কের রান ৪৯৮১। টেস্টে মুস্তাফিজ ফিরেছেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর।  

সাকিব তিনবারই দায়িত্বপ্রাপ্ত হন নাটকীয়ভাবে। ২০০৯ সালে প্রথমবার অধিনায়ক হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিংসটাউনে ৯৫ রানে জয়ী ম্যাচের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। বোলিংয়ের সময় মাশরাফি ইনজুরিতে পড়লে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করেন সহ অধিনায়ক সাকিব। অধিনায়ক হিসেবে সেন্ট জর্জেসে অভিষেক হয় সাকিবের। তার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জিতেছিল। ওই টেস্টে ম্যাচ জেতানো ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস ছাড়াও ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ১২৯ রানে।

দ্বিতীয়বার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন ২০১৮ সালে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কাছ থেকে। সেবারও অভিষেক ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে। প্রথম অধিনায়কত্বের অভিষেক জয়ে। দ্বিতীয়বার অভিষেক হারে। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ছিল তার অধিনায়কত্বের সর্বশেষ টেস্ট। হেরে যায়। সাকিব নেতৃত্ব হারান এক ভারতীয় জুয়াড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখায়। আইসিসির বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিলেও কেন তিনি জুয়াড়ির সংশ্লিষ্টতার কথা জানাননি সাকিব। তখন ক্রিকেট বোর্ড বাধ্য হয়ে দায়িত্ব তুলে দেন মুমিনুল হকের হাতে। যদিও তখন আলোচনায় ছিলেন তামিম ইকবাল ও  মুশফিকুর রহিম। দুজনের কেউই তখন দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। মুমিনুল দায়িত্ব পালনে খুব বেশি দলের সেরা ক্রিকেটারকে পাননি। দেশের সেরা টেস্ট ক্রিকেটার মুমিনুল ছন্দ হারিয়ে ফেললে বিসিবি তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব তুলে দেয় ৩৫ বছরের সাকিবের হাতে। ৬ টেস্টে ৪১১৩ রান ও ২২৪ উইকেট নেওয়া সাকিব গত ৬ বছরে নিয়মিত টেস্ট খেলেননি। ছয় বছরে বাংলাদেশের ৩৯ টেস্টে সাকিব খেলেছেন মাত্র ১৯টি। আইসিসির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিরলেও ১৩ টেস্টের মধ্যে ৮টি খেলেননি তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ খেললেও টেস্ট খেলেননি। অবশ্য ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি টেস্টই খেলেছেন।

চলতি বছর টাইগারদের পারফরম্যান্স খুব ভালো নয়। যদিও বছর শুরু করেছিল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ঐতিহাসিক জয়ে। এরপর টানা তিন টেস্টে হেরে যায় ক্রাইস্টচার্চ ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। অবশ্য শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চট্টগ্রামে ড্র করে। হেরে যায় মিরপুরে। সবগুলো টেস্টেই টাইগাররা হেরেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় টানা দুই টেস্টের দুই ইনিংসে আউট হয় যথাক্রমে ৫৩ ও ৮০ রানে। ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে ফেরাই এখন মূল টার্গেট সাকিব বাহিনীর। আজ শুরু অ্যান্টিগায় নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ২০১৮ সালে টেস্ট হেরেছিল ইনিংস ও ২১৯ রানে।

ফাস্ট বোলার কেমার রোচের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর