সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বোলিংয়েও হতাশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বোলিংয়েও হতাশা

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দুঃস্বপ্নের এক নাম কাইলি মেয়ার্স। করোনাভাইরাসের পরবর্তী সময় চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরে বাংলাদেশ। কিন্তু ফেরাটা ভালো হয়নি ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টেস্ট হেরে। চট্টগ্রামের ওই টেস্টে ইতিহাস গড়েন মেয়ার্স। চরম বিপর্যয়ের মুখে ডাবল সেঞ্চুরি করে ইতিহাস লিখেন অলরাউন্ডার মেয়ার্স। ১৬ মাস পর সেই মেয়ার্স আবারও দলের বিপর্যয়ে সেঞ্চুরি করেছেন। তার তিন অংকের জাদুকরি ইনিংসে সেন্ট লুসিয়া টেস্টে চালকের আসনে বসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় দিন শেষে তার সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৩৪০ রান তুলে এগিয়ে গেছে ১০৬ রানে। গতকাল খেলতে নেমে আরও ৬৮ রান যোগ করে ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশের পক্ষে ৫ উইকেট শিকার করেন খালেদ আহমেদ। ক্যারিবীয়রা অলআউট হয় ৪০৮ রানে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৭৪ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে বাংলাদেশ।

টেস্টের প্রথম দুই দিনে ব্যাটার ও বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। শুধু তাই নয়, দলের ব্যাটারদের মেয়ার্স থেকে শিখতে বলেছেন। দ্বিতীয় দিনের শেষ দুই সেশনে বোলারদের পারফরম্যান্সেও হতাশ হয়েছেন টাইগার কোচ, ‘প্রথম সেশনে আমরা অসাধারণ বোলিং করেছি। কিন্তু লাঞ্চের পর সেটা ধরে রাখতে পারিনি। উইকেটের জন্য বোলিং করতে গিয়ে কিছু আলগা বল করেছি। যখন ওভার দ্য উইকেট করার কথা, তখন রাউন্ড দ্য উইকেট করেছি। যথেষ্ট পরিমাণে ধৈর্য না ধরে মৌলিক কিছু ভুল করেছি।’ প্রথম সেশনে পরিকল্পিত বোলিং করলেও শেষ দুই সেশনে এলোমেলো বোলিং করেছেন ইবাদত, শরিফুল, খালেদরা।

সফরে ক্যারিবীয় পেসারদের বিপক্ষে সাবলীল ব্যাটিং করতে পারছে না সাকিব বাহিনী। অ্যান্টিগায় ১০৩ ও ২৪৫ রান করে। সেন্ট লুসিয়ায় ২৩৪ রান করেছে টাইগাররা। সেটা হয়েছে সহ অধিনায়ক লিটন দাসের ৫৩ রানে ভর করে। তামিম ইকবাল ৪৬ রান করলেও অপরাপর ব্যাটাররা ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামের উইকেটে ব্যাটিং করা অসম্ভব নয়। মেয়ার্সের ব্যাটিং দেখে সেটাই মনে হয়েছে। টাইগার বোলারদের শাসন করে মেয়ার্স ১৩ টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে গতকাল তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামেন। মেয়ার্সের কাছ থেকে লম্বা ইনিংস খেলার শিক্ষা নিতে বলেছেন ডমিঙ্গো, ‘আমাদের বেশ কজন ক্রিকেটার এখন ফর্ম ও ছন্দ খুঁজে ফিরছে। এখান থেকে বের হওয়ার একমাত্র উপায় লম্বা সময় ব্যাট করা। ৩০-৪০ রানের ইনিংস অনেক হচ্ছে, দু-একটা ফিফটি হচ্ছে। কিন্তু কাইল মেয়ার্স যেমন ১২০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে, তেমন বড় ইনিংস কেউ খেলতে পারছে না। দলের রান ২৩০ আর ৪০০ হওয়ার মধ্যে মূল পার্থক্য এখানেই।’

চলতি বছর এক-দুটি টেস্টে ভালো ব্যাটিং করেছে টাইগার ব্যাটাররা। বাকি সবগুলোতেই ব্যর্থ। দুটি ইনিংস আবার রয়েছে শয়ের নিচে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হয়েছে যথাক্রমে ৫৩ ও ৮০ রানে। মাউন্ট মঙ্গানুই ছাড়া আর কোনো টেস্টেই বোলাররা প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের উপর প্রভাব ফেলতে পারেননি। দলের শিষ্যদের ব্যাটিং ও বোলিং নিয়ে পুরোপুরি হতাশা ঝরে পড়েছে টাইগার কোচের কণ্ঠে, ‘ব্যাটিং ও বোলিংয়ে এই মুহূর্তে গুরুতর জিজ্ঞাসা আছে আমাদের। কারণ সেন্ট লুইস কোনোভাবেই আড়াইশ রানের উইকেট নয়। শেষের ৩০ রানের জুটি না হলে ১৯০ রানে অলআউট হতাম আমরা।

ব্যাট হাতে যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স আমরা দেখাতে পাচ্ছি না।

অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেখিয়ে দিচ্ছে, তারা কেন আমাদের চেয়ে ভালো। একজন সেঞ্চুরি করেছে বলে ওরা বড় স্কোর করছে। বোলিংয়ে ওরা জুটি গড়ে বোলিং করেছে। ব্যাটিংয়েও জুটি গড়ে লম্বা সময় উইকেটে থাকছে।’

সফরের দুই টেস্টেও তিন ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি মাত্র ৪টি। দুটি করেছেন অধিনায়ক সাকিব এবং একটি করে নুরুল হাসান সোহান ও লিটন। বোলিংয়ে নেই কোনো ৫ উইকেট। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর