বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সব বিভাগেই ছন্নছাড়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সব বিভাগেই ছন্নছাড়া

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় ৫ ঘণ্টা। তারপরও ব্যাটাররা খেলা পঞ্চম দিনে নিয়ে যেতে পারেননি। ক্যারিবীয় পেসারদের বোলিং দাপটে সেন্ট লুসিয়া টেস্ট শেষ হয়েছে চতুর্থ দিনে। অ্যান্টিগায় টেস্ট শেষ হয়েছিল সোয়া তিন দিনে। পরশু রাতে খেলা শেষ হতে বল খরচ হয়েছে মাত্র ১১.৫ ওভার বা ৭১ বল। ২০২১ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পুনরায় হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। এখন টাইগাররা প্রস্তুতি নিচ্ছে টি-২০ ও ওয়ানডে সিরিজ খেলার। ২ ও ৩ জুলাই রসেউতে প্রথম দুটি টি-২০ এবং ৭ জুলাই তৃতীয় টি-২০ প্রোভিডেন্সে। ওয়ানডে সিরিজ প্রোভিডেন্সে ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই। সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর পুনরায় টেস্ট সংস্কৃতির কথা উঠে এসেছে আলোচনায়। ছন্নছাড়া ব্যাটিং ও নির্বিষ বোলিংয়ে সমালোচনায় এফোর-ওফোর হচ্ছে সাকিব বাহিনী। অ্যান্টিগায় হারের পর টেস্ট সংস্কৃতির কথা বলেছিলেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও ক্রিকেট সংস্কৃতির কথা বলেছেন। টাইগার টেস্ট অধিনায়ক সাকিব ক্রিকেট সংস্কৃতির কথা বললেও চাইছেন ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজগুলোর ফল যেন ইতিবাচক হয়, ‘খেলোয়াড়দের খুব বেশি দোষ দেওয়াটা ঠিক হবে না। আমাদের দেশের টেস্ট সংস্কৃতি  ছিল না কখনো, এখনো নেই। আমি বলব না বিদেশে টেস্ট জিততেই হবে। বিদেশে সব দলই আন্ডারডগ। তবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আমরা যেন ঘরের মাঠে না হারি। হয় ড্র করব, অথবা জিতব। পরিকল্পনা করে খেললে তখন হয়তো আমরা নিয়মিত নাও জিততে পারি। অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটটা খেলব। আমাদের জন্য যা খুবই জরুরি। দেশের সিরিজগুলোতে এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি, না জিতলেও সিরিজটা যেন ড্র ছাড়া অন্য কোনো ফল না হয়।’

ক্যারিবীয় বোলিংয়ের বিপক্ষে সিরিজে টাইগার ব্যাটারদের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। দুই টেস্টের চার ইনিংসে টাইগারদের আড়াইশ’র কোনো স্কোর নেই। চার ইনিংসের স্কোর যথাক্রমে অ্যান্টিগায় ১০৩ ও ২৪৫ এবং  সেন্ট লুসিয়ায় ২৩৪ ও ১৮৬ রান। সেঞ্চুরির নেই। হাফসেঞ্চুরি ৫টি। অ্যান্টিগায় সাকিব ৫১ ও ৬৩ এবং নুরুল হাসান সোহান ৬৪ রান করেন। সেন্ট লুসিয়ায় প্রথম ইনিংসে লিটন দাস ৫৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে সোহান ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন। উইকেটরক্ষক ব্যাটার সোহানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় চতুর্থদিন মাত্র ৯ ওভার ব্যাটিং করে টাইগাররা। তৃতীয় দিন সংগ্রহ ছিল ৩৬ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান। পরশু রাতে ৫ ঘণ্টা পর খেলতে নেমে ৯ ওভারের বেশি টিকতে পারেনি। যোগ করে ৫০ রান। ১৬ রানে অপরাজিত থাকা সোহান অপরাজিত থাকেন ৬০ রানে। শুধু ব্যাটিং কেন, বোলিংয়েও টাইগার বোলাররা ছিলেন ছন্দহীন। ক্যারিবীয়দের চার ইনিংসে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২৩টি! যার ১০টিই খালেদ আহমেদের। অথচ সিরিজে ক্যারিবীয় পেসাররা উইকেট নিয়েছেন ৪০টি। টাইগার পেসারদের সংগ্রহ ১৫টি।

তৃতীয়বার টেস্ট দায়িত্ব পাওয়ার পর হতাশ হয়েছেন সাকিব। ক্রিকেটারদের দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট খেলতে অনীহায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক বাংলাদেশের। সেন্ট লুসিয়া পর্যন্ত গত ২২ বছরে ১৩৪টি টেস্ট খেলে হেরেছে ১০০টি। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২০ টেস্টের ১৪টিতেই হার। ৩টি আবার ১০ উইকেটে। আগের দুটি ২০১২ সালে খুলনা ও ২০১৪ সালে কিংসটাউনে হেরেছিল ১০ উইকেটে। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলবে। এই সময়ে নতুন করে পরিকল্পনায় সব বিভাগে উন্নতি চান টাইগার অধিনায়ক, ‘যদি টেস্ট জিততে চাই, তাহলে সব বিভাগেই উন্নতি করতে হবে। ভালো দিক হলো, এখন অনেক বড় একটা বিরতি আছে। যারা টেস্ট খেলতে আগ্রহী, তারা হয়তো নিজ নিজ জায়গা থেকে উন্নতির চেষ্টা করবে। উন্নতি ছাড়া আর কোনো পথ নেই ভালো করার।’ উন্নতির জন্য মানসিকতায় পরিবর্তন জরুরি বলেন সাকিব, ‘আমাদের নিজেদের চিন্তার পরিবর্তনটা খুবই জরুরি। এই জায়গায় কাজ করার আছে। সবাই মিলে পরিকল্পনা করে এগিয়ে যাই, তাহলে অন্তত এক/দেড় বছর পর ধারাবাহিক পারফর্ম করা সম্ভব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর