মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে কিংস

রাশেদুর রহমান

আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে কিংস

ছবি : রোহেত রাজীব

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সবুজে ঘেরা রাস্তা ধরে বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় যাওয়ার পথেই উৎসবের আমেজ চোখে পড়ে। নানা পোস্টার ফেস্টুনে রঙিন হয়ে আছে চারপাশ। বসুন্ধরা কিংসের কোচ আর ফুটবলারদের পাশাপাশি সেসব পোস্টার-ফেস্টুনে স্থান পেয়েছে বসুন্ধরা কিংসের তিনটি লিগ শিরোপা জয়ের নানা মুহূর্তের ছবি এবং বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও ফটোগ্রাফের কপি। দলে দলে বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকরা ‘চ্যাম্পিয়ন: থ্রি ইয়ারস ইন এ রো’ লেখা জার্সি গায়ে গ্যালারিতে আসন নেন। পশ্চিম ও উত্তর গ্যালারির পাশাপাশি গতকাল কিংস সমর্থকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় পূর্ব গ্যালারির একাংশও। হাজার হাজার দর্শক ভুভুজেলা আর বাদ্যবাজনার তালে তালে ‘বসুন্ধরা কিংস, বসুন্ধরা কিংস’ কোরাস গেয়ে, একে অপরকে লাল রঙ মাখিয়ে পরিবেশকে উৎসবমুখর করে তোলেন।

বাংলাদেশের ফুটবলে এক ভিন্ন রকমের উৎসব দেখল ফুটবলপ্রেমীরা। বসুন্ধরা কিংস সমর্থকদের কাছে এই উৎসবে বাড়তি উন্মাদনা যোগ করে আবাহনীর বিপক্ষে দারুণ এক জয়। গতকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় বসুন্ধরা কিংস বনাম আবাহনী লিমিটেড ম্যাচটি শেষ বিকালে। কিন্তু এর উত্তাপ দুপুরের ছড়িয়ে পড়ে। দর্শকদের মধ্যেও ছিল উত্তেজনা। ফুটবলাররাও কম যায়নি। মাঝে মধ্যেই দুই দলের ফুটবলাররা বিতর্কে জড়িয়ে উত্তেজনার পারদ বাড়িয়েছেন। ম্যাচটা বসুন্ধরা কিংস জয় করে ৩-২ ব্যবধানে। আগেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করা বসুন্ধরা কিংসের পয়েন্ট এখন ২১ ম্যাচে ৫৪। অভিষেকেই হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছে কিংস।

ম্যাচে দুই দলই দারুণ খেলে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের খেলায় বসুন্ধরা কিংসই প্রথমে এগিয়ে যায়। আবাহনীর সোলাইমানি বসুন্ধরা কিংসের মিগেল ফিগেইরারকে ফাউল করলে দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেল এগিয়ে এসে নুহা মারঙকে আঘাত করলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। রেফারির পাশাপাশি অফিশিয়ালরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি শান্ত হলে ম্যাচের ২০তম মিনিটে মাঝ মাঠের কিছুটা সামনে থেকে ফ্রি কিক নেন মিগেল ফিগেইরা। অনেকটা নিচু হয়ে ডি বক্সের ভিতর থেকে হেডে বল জালে জড়ান নুহা মারঙ।  বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে যায় ১-০ ব্যবধানে। প্রথমার্ধ্ব শেষ হওয়ার আগেই রাকিবের গোলে সমতায় ফেরে আবাহনী। দ্বিতীয়ার্ধ্বের ৫৭তম মিনিটে সবুজের পরিবর্তে মাঠে নামেন ইনজুরি থেকে ফিরে আসা রবসন রবিনহো। ৭১তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান এই তারকার গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় কিংস। গোলটা করেই রবসন ছুটে যান সাইডলাইনে সমর্থকদের কাছে। তাকে কাছে পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন বসুন্ধরার সমর্থকরা। ম্যাচের যোগ করা সময়ে (৯১+১) আরও একটা গোল করেন রবসন। লিগে সবমিলিয়ে ১৫ গোল করলেন তিনি।

এরপর বিতর্কিত পেনাল্টি পায় আবাহনী। ডি বক্সের ভিতরে জনির হ্যান্ডবল ধরে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু জনির হাতে বল লেগেছে কি না তা ঠিক বোঝা যায়নি। পেনাল্টি শট নেন রাফায়েল। তার শটটা জিকো ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল পেয়ে রাফায়েল বল জালে জড়ান। ব্যবধান কমালেও বসুন্ধরা কিংসের জয় ঠেকাতে পারেনি আবাহনী। ম্যাচজুড়ে অন্তত ছয়টা গোল বাঁচিয়ে ম্যাচ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। রেফারি ম্যাচ শেষে বাঁশিতে ফু দিতেই শত শত দর্শক মাঠে প্রবেশ করেন রবসন, মিগেল, জিকোদের সঙ্গে ছবি তুলতে। এ যেন কোনো ইউরোপীয়ান ফুটবল লিগের দৃশ্য!

 

সর্বশেষ খবর