বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
ভয়ংকর ওভার!

এক ওভারে ৩৪ রান দিলেন নাসুম

৬ ৬ ৬ ৬ ৪ ৬

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এক ওভারে ৩৪ রান দিলেন নাসুম

টি-২০ ক্রিকেটে দেশের সেরা বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। জিম্বাবুয়ে সফরে টি-২০ সিরিজে দলের স্পিন বিভাগের মূল ভরসা ছিলেন নাসুম। কিন্তু প্রথম ম্যাচে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে বসে থাকেন সাজঘরে। গতকাল ফিরলেও দুঃস্বপ্ন হয়েছিল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি। জিম্বাবুয়ে ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে উইকেট নেন। ঘূর্ণির ফাঁদে ওপেনার রেগিস চাকাভাকে কাভারে দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত আফিফ হোসেনের। কিন্তু দুরন্ত শুরু শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি নাসুম। ম্যাচের ১৫ নম্বর ওভারে ম্যাচের চিত্রপট পল্টে দেন স্বাগতিক ব্যাটার রায়ার্ন বার্ল। কোণঠাসা জিম্বাবুয়েকে খাঁদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন। নাসুমের উপর চড়াও হয়ে বার্ল ৫ ছক্কা ও এক চারে তুলে নেন ৩৪ (৬, ৬, ৬, ৬, ৪, ৬) রান। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারদের মধ্যে এক ওভারের সর্বাধিক রান নেওয়ার রেকর্ড বার্লের। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৩ ওভারে ৬ উইকেটে ৬৭ রান থেকে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৬ রান করে স্বাগতিকরা। আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিংয়ে বার্ল ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন ২৯ বলে ২ চার ৬ ছক্কায়। তার সঙ্গে লুক জঙ্গেও ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। দুজনে ৭৯ রান যোগ করেন ৩৭ বলে।  

আগের দুই ম্যাচে দারুণ দুটি হাফসেঞ্চুরি করেন সিকান্দার রাজা। গতকাল প্রথম বলে তাকে সাজঘরে ফেরান মেহেদি হাসান। রাজার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন বার্ল। ১৫ নম্বর ওভারে টানা চারটি ছক্কার পর পঞ্চম বলে স্ট্রেট ড্রাইভে বাউন্ডারি এবং ষষ্ঠ বলে ছক্কা মারেন। জিম্বাবুয়ের ব্যাটারদের মধ্যে এক ওভারে এটাই সর্বোচ্চ রান। ২০১৯ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে এক ওভারে ৩০ রান নিয়েছিলেন বার্ল।

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মিরপুরে সাকিব আল হাসানের ওভারে ৩০ রান নিয়েছিলেন বার্ল (৬, ৪, ৪, ৬, ৪, ৬)। সাকিব অবশ্য আরও একবার ৩০ রান দিয়েছিলেন এক ওভারে। ২০২১ সালের ৯ আগষ্ট সাকিবের ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ড্যান ক্রিস্টিয়ানসেন ৩০ (৬, ৬, ৬, ০, ৬, ৬) রান নিয়েছিলেন। নাসুমের আগে এক ওভারে টাইগার বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩১ (৬, ৬, ৬, ৬, ৬, ১) রান দিয়েছিলেন। এক ওভারে ৬ ছক্কার মারার রেকর্ড দুজনের-ভারতের যুবরাজ সিং ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিয়েরন পোলার্ডের। যুবরাজ ২০০৭ সালের ডারবানে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের ওভারে ৩৬ রান এবং ২০২১ সালে অ্যান্টিগায় শ্রীলঙ্কার আকিলা ধনাঞ্জয়ের ওভারে ৩৬ রান নিয়েছিলেন পোলার্ড।

আগের ম্যাচে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান বাঁ হাতের তর্জনীতে ব্যথা পান। তার জায়গায় সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সিরিজ জিততে মরিয়া বাংলাদেশ একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে। সোহানের জায়গায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের জায়গায় অভিষেক হয় পারভেজ হোসেন ইমন ও বাঁ হাতি পেসারের জায়গায় সুযোগ পান নাসুম আহমেদ। অভিষেকটা সুখকর হয়নি পারভেজ ইমনের। ওপেন করে ব্যক্তিগত ২ রানে ফিরেন সাজঘরে। দুঃস্বপ্নের ম্যাচ ছিল নাসুমের। প্রথম ওভারে ৬ রান দিলেও দ্বিতীয় ওভারে ৩৪ রান দেন। মাহমুদুল্লাহ নিজেকে মেলে ধরেন। ছন্দহীনতার জন্য টি-২০ সিরিজে ছিলেন না। সোহানের ইনজুরিতে তাকে দলে ভেড়ায় টিম ম্যানেজমেন্ট। গতকাল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে নেমেই বাজিমাত করেন। প্রথম উইকেট নেন। ১০ ওভারের প্রথম বলেই জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে স্ট্যাম্পিং করেন। ব্যাটিংয়ে ২৭ রান করেন ২৬ বলে।

টাইগার বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪৫ রান। ১০ ওভারে ৫ উইকেটে ৫৬। এরপরই বার্লের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে শেষ ১০ ওভারে ১০০ রান।

সর্বশেষ খবর