শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

শেষ ম্যাচে এলো স্বস্তি!

৪ ম্যাচে ৪ হার তবুও লক্ষ্য পূরণ সাকিবদের

মেজবাহ্-উল-হক

শেষ ম্যাচে এলো স্বস্তি!

সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের দাপুটে ব্যাটিং। বোলিং আক্রমণে দারুণ পরিকল্পনার ছক! কিন্তু ফল ঠিক আগের মতোই -আরও একটি হার। ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচের চারটিতেই ব্যর্থ টাইগাররা। ব্যবধান যত কমই হোক না কেন হার তো হারই!

তবে টানা চার হারের পরও টিম ম্যানেজমেন্টের চোখে-মুখে যেন আত্মবিশ্বাসের দ্যুতি। কিন্তু কেন? তার আগে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচের চিত্র সংক্ষেপে তুলে ধরা যাক।

প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ করে ১৭৩ রান। লিটন ৪২ বলে ৬৯ এবং সাকিব ৪২ বলে ৬৮। আফসোস! শেষ ওভারে স্বীকৃতি ব্যাটসম্যান থাকার পরও ৩ রানের বেশি হয়নি। ১৭৪ রানের জয়ের জন্য খেলতে নেমে সুপার ফর্মে থাকা পাকিস্তানকে শেষ ওভারের পঞ্চম বল পর্যন্ত খেলতে হয়েছে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের জন্য।

লড়াই হয়েছে দুর্দান্ত। শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। তাই হারলেও এমন কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় স্বস্তি পেয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সাকিব বলেন, ‘আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলেছি। হয়তো আর কিছু রান বেশি করতে পারতাম। শেষ ওভারে আমরা ৩ রান করতে পেরেছি। শেষের দিকে স্বীকৃত ব্যাটসম্যান ক্রিজে ছিল। তাদের কাছ থেকে দলের আশা ছিল ১০-১৫ রানের। তবে এমন হতেই পারে।’

ক্যাপ্টেনের কথাতেও পরিষ্কার, শেষ ম্যাচে হারলেও স্বস্তি এসেছে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে! সত্যিই কী তাই?

আমিরাতের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টি-২০ সিরিজ এবং নিউজিল্যান্ডের এই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফল যতটা না গুরুত্বপূর্ণ, তার বড় বিষয় ছিল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এবং দলের কম্বিনেশন ঠিক করতে পারা। তাই চার ম্যাচ হারলেও বিশ্বকাপের সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়ায় খুশি সাকিব। বলেন, ‘এই সিরিজ থেকে যেমন প্রস্তুতি চাচ্ছিলাম, আমরা সেটা পেয়েছি। এখন আমাদের কাজ হলো, বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরা, দেশের জন্য ভালো কিছু করা।’

‘এই সিরিজ থেকে যেমন প্রস্তুতি চাচ্ছিলাম, আমরা সেটা পেয়েছি। এখন আমাদের কাজ হলো, বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরা, দেশের জন্য ভালো কিছু করা।’

এশিয়ার মাটিতে (সংযুক্ত আরব আমিরাত) ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল ওশেনিয়া অঞ্চলের দুই দেশ-অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে আসরের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে বাংলাদেশ সফর করেছিল এই দুই দল।

সিরিজ দুটির ফল কী ছিল, মনে আছে? যে অস্ট্রেলিয়া আরব আমিরাতের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, সেই দলটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হেরেছিল ৪-১ ব্যবধানে। আর রানার্সআপ হওয়া নিউজিল্যান্ড টাইগারদের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ হেরেছিল ৩-২ ব্যবধানে।

বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে সিরিজ জয়ের আনন্দে যখন বাংলাদেশ মশগুল তখন নিজেদের দুর্বলতা থেকে শিক্ষা নিয়ে উপমহাদেশের মাটিতে কীভাবে সফল হতে হয় সেই পরিকল্পনা করতে থাকে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড। দুই দেশ সিরিজ দুটিকে যে তাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিয়েছিল, তা বিশ্বকাপে তাদের সাফল্যই প্রমাণ। এদিকে দুই ফাইনালিস্টকে সিরিজে হারানো টাইগাররা সুপার-টুয়েলভে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি।

তাই নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ চার ম্যাচের চারটি হারলেও দুশ্চিন্তার কিছু দেখছেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টি-২০তে খাদে পড়া বাংলাদেশকে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম, যিনি গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন। শ্রীরাম তখন ছিলেন অস্ট্রেলিয়া দলের সহকারী কোচের ভূমিকায়।

ঠিক অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞতাই এবার বাংলাদেশের হয়ে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন তিনি। চার ম্যাচে হারলেও তিনি চিন্তিত নন। বরং তার পরিকল্পনা মতোই সব কিছু চলছে। ধীরে ধীরে পারফরম্যান্সে উন্নতি হচ্ছে।

আপাতদৃষ্টিতে দেখলে, হার তো হারই। সেখানে আবার কিসের উন্নতি? কিন্তু টেকনিক্যালি চিন্তা করলে পরিষ্কার বোঝা যাবে, ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচ ও শেষ ম্যাচের মধ্যে পারফরম্যান্সের ব্যবধান। কম্পিলিট একটি কম্বিনেশনও পেয়ে গেছেন ক্যাপ্টেন সাকিব। এখন দেখার বিষয়, নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাদের পার্শ্ববর্তী দেশ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপে কতটা ভালো করতে পারে বাংলাদেশ!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর