শিরোনাম
বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

এখনো ঘুম ভাঙেনি টাইগারদের!

ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভক্তের প্রতিক্রিয়া, ‘বিশ্বকাপ এসে গেছে। এখনো ঘুম ভাঙেনি টাইগারদের!’

মেজবাহ্-উল-হক

এখনো ঘুম ভাঙেনি টাইগারদের!

‘ওপেনিং জুটি’ নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় নাকি মেহেদী হাসান মিরাজ নেই! তারপরও প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ইনিংস ওপেন করতে নামিয়ে দেওয়া হলো তাকেই। আর বাইশগজে গিয়ে মিরাজ রীতিমতো আশ্চার্যজনক ঘটনা ঘটিয়ে ফেললেন?

টি-২০ ফরম্যাটে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে একজন ওপেনার যখন ৩১ বল খেলে মাত্র ১৬ রান করেন তখন এটা আশ্চার্য ঘটনাই! আর একটু পরিষ্কার করে বললে তার স্টাইকরেট মাত্র ৫১। ছক্কা-চারের এই যুগে আজকাল টেস্টের ওপেনারও হয়তো এমন স্ট্রাইকরেটে কচ্ছপের গতিতে ব্যাটিং করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন না!

এখানে কয়েকটি বিষয় সামনে আসতে পারে! যদি ভাবনাতেই না থাকে তাহলে কেন অযথাই মিরাজকে ওপেনিংয়ে নামানো হলো? অন্যদিকে, মিরাজ যখন সুযোগটা পেলেনই তখন কেন এমন অবহেলা করলেন? বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে কি এমন বিলাসিতা করার সুযোগ আছে?

আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত খেললেন ১২ রানের এক ইনিংস। বরাবরের মতোই ফ্লপ। প্রধান নির্বাচন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু যে তাকে ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ করে দিলেন, তার কি প্রতিদান দিতে পারছেন তিনি? এক দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাদ পড়া ক্রিকেটার কোনো পারফর্ম না করেই সোজা বিশ্বকাপ দলে। নাজমুল হাসান শান্তর শেষ পাঁচ ইনিংস - ১২, ১২, ১১, ৩৩, ০।

শুধু মিরাজ কিংবা শান্ত নন, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে বোলিংয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং লাইনআপ। ব্যাটিংয়ের এই রোগটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। সেই এশিয়া কাপ থেকেই এই  রোগে ভুগছে বাংলাদেশ দল। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজেও একই অবস্থা। প্রতি ম্যাচেই ব্যর্থ ব্যাটাররা।

অবশ্য প্রস্তুতি ম্যাচে একটা বিষয় লক্ষ্য করলে মেহেদী মিরাজ সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় না। কারণ, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একপ্রান্তে যেভাবে উইকেট পতন হচ্ছিল, দলীয় ফিফটি হওয়াই কঠিন ছিল। মিরাজকে একপ্রান্ত আঁকড়ে ধরে থাকতে হয়েছে। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি যখন আউট হন, তখন দলীয় স্কোর ছিল ৪৭/৭। এই হচ্ছে টাইগারদের টি-২০ সামর্থ্য!

মানব জীবনের মতো ক্রিকেটে উত্থান-পতন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু বাংলাদেশ দল টি-২০তে কবে ভালো খেলেছিল? টি-২০ বিশ্বকাপের আগের সাত আসরের চূড়ান্তপর্বে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি। যে কটি জয় তা তো ‘প্রথম রাউন্ড’ নামক বাছাইপর্বেই।

সব শেষ টি-২০ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর এবার দলে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক করা হয়। শেষ আসরে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া দলের সহকারী কোচ শ্রীধরন শ্রীরামকে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে যাতে সমস্যা না হয় এজন্য নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ব্যবস্থা করা হয়। এরপরও প্রস্তুতি ম্যাচে যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স!

এমন পারফরম্যান্সে দলের হ য ব র ল অবস্থাই প্রকাশ পাচ্ছে! যে মাঠে বাংলাদেশের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মতো দল ১৬০ রান করে, সেখানে টাইগার ব্যাটসম্যানরা মাত্র ৯৮-তে প্যাকেট! বাইশগজে ২০ ওভার টিকে থাকাই যেখানে কঠিন হয়ে যাচ্ছিল সেখানে স্ট্রাইকরেটের কথা তো ভাবাই দুষ্কর।

এদেশের ক্রিকেটপাগল ভক্তরাও যেন টি-২০তে বাংলাদেশকে নিয়ে আশা করা ছেড়ে দিয়েছেন। অতি আবেগী ভক্তদের কেউ কেউ স্যোশাল মিডিয়া স্ট্যাটাস দেন এই যা। কেউ কেউ মজা করার জন্য মন্তব্য করেন!

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভক্তের প্রতিক্রিয়া, ‘তাদের পারফরম্যান্সের কথা জানতে পারলে দেশে সুন্দরবনের টাইগাররাও লজ্জা পাবে!’ আরেকজন লিখেছেন, ‘বিশ্বকাপ এসে গেছে। এখনো ঘুম ভাঙেনি টাইগারদের!’

সর্বশেষ খবর