শিরোনাম
শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ব্যাটিংয়ে বাড়তি মনোযোগ ♦ কঠোর অনুশীলন টাইগারদের

অলৌকিকের আশায় সাকিবরা

নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে যেমন হারাতে হবে তেমনি অন্য ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা যাতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে হেরে যায় সে কামনাও করতে হবে

মেজবাহ্-উল-হক

অলৌকিকের আশায় সাকিবরা

টিম টিম করে জ্বলছে আলো। হঠাৎ নজরে এলো বাতিঘর। নতুন করে জাগল আশার আলো। নতুন সম্ভাবনা। কিন্তু এই সম্ভাবনার ভিতর অনেক ‘যদি’ ‘কিন্তু’। তীরে নোঙর করতে পাড়ি দিতে হবে ভয়ংকর এক পথ! ঝড়ের সঙ্গে যেমন ভয়াবহ এক লড়াই করতে হবে, তেমনি প্রকৃতির দরকার।

বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলাটা এখন প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়া এক জাহাজের তীরে পৌঁছানোর মতোই অবস্থা। তবে আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে যাওয়ায় একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এখন নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে যেমন হারাতে হবে তেমনি অন্য ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা যাতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে হেরে যায় সে কামনাও করতে হবে। এই গ্রুপে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে ভারত। কোহলিদের নেট রানরেটও অনেক বেশি। তা ছাড়া শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট ৫। তাদের প্রতিপক্ষও তুলনামূলক সহজ, নেদারল্যান্ডস। প্রোটিয়ারা যদি এই ম্যাচে কোনোভাবে হেরে যায় এবং বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে যায় তাহলেই হবে। তখন টাইগারদের পয়েন্ট হবে ৬।

কিন্তু এই দুই ঘটনা একসঙ্গে ঘটার জন্য দরকার মিরাকল। অবশ্য এমন মিরাকল ক্রিকেটে ঘটেই। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ ভারতের বিরুদ্ধে যে লড়াই করেছে সেই মানসিকতা নিয়ে খেলতে পারলে পাকিস্তানকে হারানো অসম্ভব নয়। আবার এবারের আসরে যেভাবে ছোট দল বড় দলগুলোকে চোখ রাঙাচ্ছে তাতে ডাচরাও প্রোটিয়াদের বোকা বানিয়ে ফেলতে পারে।

আর দুইয়ে দুইয়ে চার হয়ে গেলেই সৃষ্টি হতে পারে নতুন ইতিহাস। টাইগাররাও নতুন কিছুর আশায় কঠোর অনুশীলন করছেন। গতকাল অনুশীলন শেষে মিডিয়াকে তাসকিন আহমেদ বলেছেন, ‘এই গ্রুপে সব ম্যাচই ইন্টারেস্টিং হয়েছে। এখনো যে কোনো কিছু হতে পারে। মিরাকল হয়ে যেতে পারে। মূল লক্ষ্য থাকবে, শেষ ম্যাচটায় একই স্পিরিট নিয়ে যাব। ভালো খেলে জিততেই চাইব। যদি ম্যাচ জিততে পারি, পরে কী হবে, ক্যালকুলেশন পরে দেখা যাবে। মূল লক্ষ্য পরের ম্যাচটা জেতা।’

টি-২০-তে পাকিস্তান কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে ভালো খেলার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। তবে ফরম্যাটটা টি-২০ বলেই জ্বলছে আশার আলো। তা ছাড়া সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় আরও উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘আসলে টি-২০ খেলায় অনুমান করা কঠিন। যে কোনো কিছু হতে পারে। একটা ওভারে মোমেন্টাম বদলে যেতে পারে। আমরা বোলাররা যদি ভালো বোলিং করতে পারি এবং যদি আগে বোলিং করি, ওদের যদি ১৫০-১৬০ রানের মধ্যে আটকাতে পারি, তাহলে হয়তো আমাদের তা তাড়া করা সম্ভব। আর আগে যদি ব্যাটিং করি, ভালো যদি স্কোর হয়, আমাদের ডিফেন্ড করার সামর্থ্য আছে। ভালো ক্রিকেট খেললে জিততে পারব, এই আশাটা আছে।’

বাংলাদেশ দলের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ব্যাটিং নিয়ে। যদিও শেষ ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ দাপট দেখিয়েছেন টাইগাররা। কিন্তু অতি মারমুখী হওয়ার কারণে আবার ম্যাচও হারতে হয়েছে। লিটন আউট হওয়ার পর সবাই ছক্কা হাঁকানোর চিন্তায় ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। অথচ ম্যাচটা শেষ বলে গিয়ে হারে বাংলাদেশ। মাঝের ব্যাটাররা একটুখানি বুদ্ধি খাটিয়ে খেললে জয়টা অনায়াসেই আসত। কারণ, হাতে অনেক উইকেট ছিল। তবে আগের সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই কাল অ্যাডিলেডে শেষ ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। অবশ্য এই ম্যাচ নিয়ে বাড়তি চাপ নেওয়ারও সুযোগ নেই। কারণ, এই বিশ্বকাপে টাইগারদের পারফরম্যান্স খারাপ নয়। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে দুটি ম্যাচ জিতেছে ক্যাপ্টেন সাকিবের বাংলাদেশ। ভারতের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছে। এখন শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলে- সেটা হবে বাড়তি পাওয়া। আর অন্য ম্যাচে নেদারল্যান্ডস যদি দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ‘অঘটন’ ঘটিয়ে দেয় তাহলে তো কথাই নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর