শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

যেমন হেলস তেমন বাটলার

ইংল্যান্ডের বিধ্বংসী জয়

আসিফ ইকবাল

যেমন হেলস তেমন বাটলার

ভারতীয় ক্রিকেট দলের সবচেয়ে আবেগী ক্রিকেটার রোহিত শর্মা। ভারতীয় অধিনায়ক কতটা আবেগী, ম্যাচ শেষে দেখতে পেলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অ্যাডিলেডের সবুজ ঘাসে যখন টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠার উৎসবে ব্যস্ত অ্যালেক্স হেলস, জশ বাটলার, স্যাম কারান, বেন স্টোকসরা, তখন টিভি ক্যামেরায় দেখা যায় ডাগ আউটে বসে আবেগ সামলাতে না পেরে কাঁদছেন রোহিত শর্মা। পাশে বসা দলীয় কোচ রাহুল দ্রাবিড় সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাকে। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে ছিটকে পড়েছিল ভারত। ফাইনালে উঠতে না পারার কষ্টে সেবারও কেঁদেছিলেন রোহিত। বিশ্বকাপের ওই আসরে রোহিত একাই ৫টি সেঞ্চুরি করেছিলেন। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ভারতকে ছিটকে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এবার টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে দিল ইংল্যান্ড। ছিটকে দিলেন দুই ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলস ও জশ বাটলার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে। দুই ওপেনার ১৬ ওভারেই ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। টি-২০ বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো দল সেমিফাইনালে ১০ উইকেটে জিতল। এর আগে সেমিফাইনালে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ডও ছিল ইংল্যান্ডের ৭ উইকেটে। একবার করে জিতেছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যাডিলেড ওভালে এই প্রথম কোনো দল টি-২০ ক্রিকেটে ১৬৯ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতল। ১৩ নভেম্বর ‘হার্ট অব ক্রিকেট’ মেলবোর্নে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দুই দল ফাইনাল খেলেছিল।      

ভারত এবারই প্রথম ১০ উইকেটে হারেনি। ২০২১ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছেও ১০ উইকেটে হেরেছিলেন রোহিতরা। ইংল্যান্ড এই প্রথম ১০ উইকেটে জয় পায়নি। গতকাল ২৪ বল হাতে রেখে জয় পেতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন হেলস ও বাটলার। দুজনে পাল্লা দিয়ে ভারতীয় বোলিংকে বিধ্বস্ত করেছেন। ম্যাচসেরা হেলস ৮৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মাত্র ৪৭ বলে ৭ ছক্কা ও  ৪ চারে। ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৪৯ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায়। টি-২০ ক্রিকেটে ইংল্যান্ড এর আগে আরও দুবার ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতেছে। ২০১৩ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ৪৪ বল হাতে রেখে। টার্গেট ছিল মাত্র ১২৬ রান। ২০১১ সালে ঘরের মাঠ ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ১০ উইকেটে জিতেছিল ২৮ বল হাতে রেখে। সেবার টার্গেট ছিল ১৪০ রান।

ভারতের ১৬৮ রান তাড়া করতে ইংল্যান্ড খরচ করেছে ১৬ ওভার। ম্যাচসেরা হেলস ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করেন। হেলস-বাটলার জুটির ১৭০ রান টি-২০ বিশ্বকাপে যে কোনো জুটিতে সর্বোচ্চ রান। আগের সর্বোচ্চ দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও রাইলি রুশোর। চলতি আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৬৮ রান করেছিলেন। ২০ ওভারের বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে এর আগের সর্বোচ্চ জুটি ছিল বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের। গত বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের দুই ওপেনার অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ১৫২ রানে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আগের সর্বোচ্চ জুটি ১০৫ রানের, সেটিও বাবর ও রিজওয়ানের। ইংলিশ ক্রিকেটে প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের একজন হেলস। কিন্তু শৃঙ্খলিত জীবনের অভাবে নিয়মিত হতে পারেননি দলে। ২০১৯ সালের ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ মিস করেন ড্রাগ নেওয়ায়। খেলতে না পারার সেই আক্ষেপে পুড়িয়েছে হেলসকে। এবারের বিশ্বকাপে ইংলিশ ওপেনার সেই আশা পূরণ করেন। দারুণ ব্যাটিং করছেন। সুপার টুয়েলভে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫২ রান করেছেন। পিছিয়ে নেই বাটলারও। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৩ রান করেছিলেন। ১৩ নভেম্বর স্বপ্নের ফাইনালে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং আস্থার দুই নাম নিঃসন্দেহে অ্যলেক্স হেলস ও জশ বাটলার।

অ্যালেক্স হেলস , ইংল্যান্ড

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর