বিশ্বকাপের শিরোপা এখনো দুই মহাদেশ ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকার (দক্ষিণ আমেরিকা) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এশিয়া বা আফ্রিকার কোনো দেশ ফাইনাল খেলার যোগ্যতা পায়নি। এবার কাতার বিশ্বকাপে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনাল খেলে মরক্কো। এশিয়ার দক্ষিণ কোরিয়া ২০০২ সালে সেমিফাইনালে খেলে। দুই মহাদেশের দুনিয়া সেরা ফুটবল আসরে এটিই সেরা প্রাপ্তি। শিরোপা জেতার দিক দিয়ে এখনো এগিয়ে ইউরোপ। তবে পার্থক্য খুব বড় নয়। ইউরোপের পাঁচ দেশ মিলে ১২ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অন্য দিকে তিন দেশ মিলিয়ে ল্যাটিন ১০ বার। অবশ্য বিশ্বকাপ জেতার প্রথম স্বাদ পেয়েছে ল্যাটিনের উরুগুয়ে। ১৯৩০ সালে নিজেদের দেশে অনুষ্ঠিত দুই ল্যাটিনের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারায় উরুগুয়ে । ১৯৫০ সালে উরুগুয়ে দ্বিতীয় বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়।

ব্রাজিলই ল্যাটিনদের মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১৯৫০ সালে যে ম্যাচ ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন তা হেরে শিরোপার আট বছর অপেক্ষা করতে হয় হলুদ জার্সিধারীদের। ব্রাজিল প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৫৮ সালে। এরপর ১৯৬২ সালে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়নে ইতালির রেকর্ড স্পর্শ করে। ইউরোপের এ দেশটি ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়।

কাতারে ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা তৃতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এখানে দুই ল্যাটিন দেশের অদ্ভূত মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ব্রাজিলের পর আর্জেন্টিনাও এশিয়া থেকে হারানো গৌরব উদ্ধার করল। এর আগে ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়। দিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়নের পরই মূলত আর্জেন্টিনাকে ঘিরে বাংলাদেশে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়। ১৯৭৮ সালে নিজেদের দেশে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন দেশটি। এক্ষেত্রে ব্রাজিলের কপাল মন্দ। ১৯৫০ ও ২০১৪ সালে আয়োজন করে শিরোপা জিততে পারেনি।

ইউরোপের মধ্যে প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ইতালি। ১৯৩৪ সালে নিজ দেশ ও ১৯৩৮ সালে ফ্রান্সে তারা টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়। তৃতীয় শিরোপা জিততে তাদের লেগে যায় ৪৪ বছর। সেবার স্পেনে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে শিরোপা জেতে ইতালি। ১৯৮২ পর ২০০৬ সালে চতুর্থ ও শেষবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে দেশটি। তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ১৯৫৪ সালে। ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয়।

দুই জার্মানি এক হওয়ার পর প্রথম শিরোপা ১৯৯০ ও দ্বিতীয় ২০১৪ সালে। ফ্রান্স ১৯৯৮ সালে প্রথম চ্যাম্পিয়ন হলেও ইতালি ও জার্মানির পর তাদেরই অবস্থান। ২০১৮ সালে তারা দ্বিতীয়বারে মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৬৬ সালের পর ইংল্যান্ড আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। স্পেনও একবার শিরোপা জিতেছে ২০১০ সালে। ইউরোপে ও ল্যাটিনের পার্থক্যটা বেড়ে গেছে ২০০৬, ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮’র কারণে। কারণ এই চার বছর ল্যাটিনরা ছিল শিরোপা বাইরে।