শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদায়ঘণ্টা বাজছে সালাউদ্দিনের!

এই দুর্নীতির সঙ্গে নাকি দুজন বড় কর্মকর্তা জড়িত আছেন। ফিফা যে কোনো সময় তাদেরও নিষিদ্ধ করতে পারে। এতে বাফুফের নীরব থাকারই কথা। কীসের কী, তারা তাদের অপকর্ম ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিদায়ঘণ্টা বাজছে সালাউদ্দিনের!

মাঠের পারফরম্যান্স শূন্য। তারপরও ফুটবল ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে। বাফুফের কর্মকর্তাদের নানা কর্মকান্ডে ফুঁসে উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন। দেশের কোনো ফেডারেশনই বিতর্কের বাইরে নয়। তাদেরও কাজে সমালোচনা হয়ে থাকে। কিন্তু বাফুফে ঘিরে যা হচ্ছে তা সরকারের ওপর মহলেরও টনক নড়েছে। কেননা এর সঙ্গে দেশের ইমেজও জড়িয়ে পড়েছে। ঘটনা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে ফিফার নিষেধাজ্ঞা ঘিরে। দুর্নীতির দায়ে দুই বছরের জন্য তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। বাফুফের প্রেইড জেনারেল সেক্রেটারি হলেও সোহাগ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলেন। এতটা প্রভাবশালী হয়ে যান যে, সভাপতির পর তিনি যেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। কর্মচারী হয়েও নির্বাহী কমিটির অনেককে তোয়াক্কা করতেন না। নির্বাহী কমিটির কারো কারো অভিযোগ, সভাপতির আশকারা পেয়েই সোহাগ ভয়ংকর হয়ে ওঠেন।

সোহাগকে আজীবন নিষিদ্ধ ও আর কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনে মনে হচ্ছিল বাফুফের কর্মকর্তারা ভয়ে আছেন। বিশেষ করে আবার গুঞ্জন উঠেছে- এই দুর্নীতির সঙ্গে নাকি দুজন বড় কর্মকর্তা জড়িত আছেন। ফিফা যে কোনো সময় তাদেরও নিষিদ্ধ করতে পারে। এতে বাফুফের নীরব থাকারই কথা। কীসের কী, তারা তাদের অপকর্ম ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার সালাউদ্দিন শুধু সাংবাদিকদেরই অপমান করেননি, তাদের বাপ-মাকে নিয়েও তিরস্কার করেছেন। আর সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ তো আরও আপত্তিকর কথা বলেছেন। যদিও দুজন এমন মন্তব্যে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। তারপরও নিন্দার ঝড় বইছে। ক্রীড়া লেখক সমিতি তো সালাউদ্দিনের অপকর্মের জন্য বহিষ্কার করেছে। এরপরও তাদের লজ্জা নেই।

শুধু ফিফা নয়, বাফুফের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির আরও তথ্য বের হচ্ছে। প্রশ্ন জাগে এরপরও সালাউদ্দিন, সালাম মুর্শেদী ও নাবিলদের ডেয়ারিং ভাব কেন। তারা তো ধরেই নিয়েছেন যত সমালোচনা হোক আমাদের কমিটি ভাঙতে পারবে না। তাহলে বাংলাদেশের ফুটবল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু সরকারের প্রভাবশালী মহল এতই ক্ষুব্ধ যে, মেয়াদের আগেই এ কমিটি ভাঙতে চায়। তা না হলে আরও সর্বনাশের আশঙ্কা রয়েছে। সভাপতি পদে সালাউদ্দিনকে আর দেখতে চান না। ফিফাকে সন্তুষ্ট রেখেই কমিটি ভাঙার পথ খুঁজছে প্রভাবশালী মহল। শোনা যাচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে বাফুফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে এ মহল। সেখানে কড়া ভাষায় সালাউদ্দিন গংদের পদত্যাগের আহ্বান জানানো হবে। সত্যি যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে তখন বাফুফের কারোর না বলার সাহস থাকবে না। তা ছাড়া এই কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে ফিফাকে চিঠিও দিতে পারে। সব মিলিয়ে সালাউদ্দিন মুখে যতই বকবক করুক না কেন তিনি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন আরও আগে।

সালাউদ্দিনের শুধু বিদায়ঘণ্টা নয়, ভিতরে ভিতরে নাকি নতুন সভাপতিও ঠিক হয়ে গেছে। জানা গেছে, দেশের  শীর্ষস্থানীয়  এক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের একজনকে বাফুফের সভাপতির চেয়ারে দেখতে চায় সংশ্লিষ্ট মহল, যিনি ক্রীড়া উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে এমন রুগ্ন অবস্থা থাকার পরও এ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ফুটবলে মূল সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ফুটবলপ্রেমীরাও চান এমন এক ব্যক্তি ফুটবলের দায়িত্ব নিক যিনি শুধু দিতেই জানেন, নিতে চান না।

সর্বশেষ খবর